মোরিনহো-হ্যাজার্ড গৃহযুদ্ধ

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ার পরে আটচল্লিশ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। তবু বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না চেলসি কোচ হোসে মোরিনহোর। আটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে হারের পরে আবার দলের তরুণ তারকা এডেন হ্যাজার্ডকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন চেলসির পর্তুগিজ কোচ। বলে দিলেন, “দলের জন্য একশো শতাংশ দিতে তৈরি না হ্যাজার্ড।”

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৪ ০৩:২০
Share:

হ্যাজার্ড হঠাৎ বিদ্রোহী

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ার পরে আটচল্লিশ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। তবু বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না চেলসি কোচ হোসে মোরিনহোর। আটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে হারের পরে আবার দলের তরুণ তারকা এডেন হ্যাজার্ডকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন চেলসির পর্তুগিজ কোচ। বলে দিলেন, “দলের জন্য একশো শতাংশ দিতে তৈরি না হ্যাজার্ড।”

Advertisement

মন্তব্যের প্রেক্ষাপট হ্যাজার্ডেরই একটা উক্তি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে গিয়ে মোরিনহোর রক্ষণাত্মক ছকের তীব্র কটাক্ষ করে হ্যাজার্ড বলেছিলেন, “চেলসি ক্লাবটা ফুটবল খেলার জন্য তৈরি হয়নি। আমরা শুধু প্রতি আক্রমণেই খেলি। জানি না কেন হারলাম আটলেটিকোর বিরুদ্ধে। হয়তো ওদের জেতার খিদে বেশি ছিল। মাঝে মাঝে আমাকে বলা হয় মাঠে সব কিছু করতে। যে কাজটা একেবারেই সহজ নয়।” কোচকে সরাসরি কিছু না বললেও, হ্যাজার্ডের ইঙ্গিত বেশ পরিষ্কার। মোরিনহোর রক্ষণাত্মক ছকের জন্যই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে ১-১ হওয়ার পরেও খুব বেশি আক্রমণ গড়তে পারেনি চেলসি।

যে মন্তব্যের জবাবে হারের সমস্ত দায় হ্যাজার্ডের উপরে চাপালেন চেলসির পর্তুগিজ কোচ। তাঁর তৈরি ছকে খেলতে পারেননি হ্যাজার্ড, সাফ বলে দিলেন মোরিনহো। “দলের জন্য নিজের একশো শতাংশ দিতে তৈরি না হ্যাজার্ড। আমার সেটা ভাল লাগে না। প্রথম গোলটা কী করে খেলাম, সেটা দেখলেই সবাই বুঝতে পারবে।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আটলেটিকো ম্যাচের প্রথম পর্বে উইলিয়ান ছিল লেফট উইংয়ে। যে কারণে লেফট ব্যাকে অ্যাশলে কোলের কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু হ্যাজার্ড এমন একজন ফুটবলার না যে, নীচে নেমে রক্ষণকে সাহায্য করবে।” এখানেই শেষ নয়। মোরিনহো আরও বলেন, “আমি বুঝতে পারছি হ্যাজার্ড কেন এ রকম বলেছে। আমি ওর সাক্ষাৎকারটা শুনেছি। অনেক কথা বাড়িয়ে বলা হয়েছে সেখানে।”

Advertisement

এ দিন আবার সান্ডারল্যান্ড ম্যাচে অভব্য আচরণের জন্য চেলসির সহকারী কোচ রুই ফারিয়াকে ছ’ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করা হল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে গেলেও অঙ্কের হিসেবে এখনও প্রিমিয়ার লিগ দৌড়ে টিকে আছে চেলসি। চলতি সপ্তাহে যদি ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ও লিভারপুল হারে তা হলে মোরিনহোর দলের সুবিধে হবে। চেলসি তারকা দাভিদ লুইজ বলেন, “চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়া অবশ্যই খুব খারাপ। কিন্তু আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। প্রিমিয়ার লিগ দৌড়ে এখনও আছে চেলসি।” ট্রফি জেতার বিশেষ সম্ভাবনা না থাকলেও মোরিনহো মনে করেন, এই মরসুমটা চেলসির জন্য যথেষ্ট সফল। “এই মরসুমটা ফুটবলারদের অভিজ্ঞতা বাড়াবে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনাল খেলেছি আমরা। প্রিমিয়ার লিগের লড়াইয়েও শেষ পর্যন্ত আছে। মরসুম খুব খারাপ বললে ভুল বলা হবে।”

তিকিতাকা ছাড়বেন না গুয়ার্দিওলা

নিজস্ব প্রতিবেদন

তিকিতাকার কারিগর তাঁর কোচিং ম্যানুয়্যাল পরিবর্তনে রাজি নন! চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে দু’পর্ব মিলিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ০-৫ হারার পরেও নয়! তিনি— পেপ গুয়ার্দিওলা বরং বলে দিচ্ছেন, “বায়ার্ন মিউনিখই সিদ্ধান্ত নিক, আমি ওদের পক্ষে সঠিক কোচ কি না?”

লিও মেসির বার্সেলোনাকে তিকিতাকা খেলিয়ে ট্রফির পর ট্রফি দিয়ে বিখ্যাত স্প্যানিশ কোচ এখন বায়ার্নে। কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী স্প্যানিশ ক্লাব রিয়ালের বিরুদ্ধে বায়ার্নের রবেন-রিবেরিদের জাভি-ইনিয়েস্তাদের মতো খেলানোর গুয়ার্দিওলা-প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়ে। যা নিয়ে শুধু জার্মান ফুটবলমহলেই নয়, গোটা ফুটবলবিশ্বে প্রশ্ন উঠেছে। গুয়ার্দিওলার কথাবার্তায় অবশ্য স্পষ্ট, বায়ার্ন কোচ তাঁর কৃতকর্মের জন্য বিশেষ অনুতপ্ত নন। “এর পরেও আমি নিজের ফুটবল কোচিং দর্শন পাল্টাব না। ফুটবলে একটাই নিয়ম আছে জেতা অথবা হারা,” বলেছেন তিনি।

এখানেই না থেমে গুয়ার্দিওলা বলে দিয়েছেন, “বায়ার্নের একটা টুর্নামেন্টে হারেই আমি নিজের টিমের ব্যাপারে মতামত পাল্টাব না। আমার সাপোর্ট স্টাফের ব্যাপারেও নিজের মত বদল করব না। নিজেকে আমি বায়ার্নের একটা অংশ মনে করি। এই ক্লাবে আমার শেষ দিন পর্যন্ত নিজের ফুটবল কোচিং দর্শন আঁকড়ে সেরাটা দেওয়ারই চেষ্টা করব। এখন বায়ার্ন ভেবে ঠিক করুক, ওদের এই কোচ টিমের পক্ষে সঠিক কি না?” ৪৩ বছর বয়সী বায়ার্ন কোচ সঙ্গে যোগ করেছেন, “বায়ার্নের পিছনে জনসাধারণের সমর্থন আমার কাছে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। ফুটবল ম্যাচের পরিণতি একটাই— জয় অথবা হার। আমরা যদি জিততে না পারি, তা হলে কোচ হিসাবে আমার উপর ক্যালে (কার্ল হেইঞ্জ রুমেনিগে) আর ম্যাথিয়াসের (সামার) কতটা আস্থা রয়েছে সে সব গৌণ ব্যাপার। আমরা হারলে সেটা আমার কাছে একটা ঝুঁকির ব্যাপার। বায়ার্ন বিরাট ক্লাব, তাই সব সময় জেতা দরকার। সেটা যদি আমার কোচিংয়ে না ঘটে, ক্লাব আমার ব্যাপারে অন্য রকম কিছু ভাবতেই পারে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement