বলের দিকে সজাগ নজর। অলিম্পিক্সের অভিষেক ম্যাচে সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়। ছবি - টুইটার
বিশ্বের কঠিনতম মঞ্চে যে পৌঁছে গিয়েছেন, সেটা বুঝতে পারছেন সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়। তাই সবাই যখন তাঁর পিছিয়ে পড়েও ম্যাচ বার করা নিয়ে আনন্দে আত্মহারা, সুতীর্থা তখন সবার আগে ম্যাচ থেকে নিজের ভুল খুঁজে বার করছেন।
টিম বাসে ওঠার আগে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলে গেলেন, “পদক জিততে হলে তো সেরা খেলোয়াড়দের হারাতেই হবে। এই ম্যাচ জিতলেও বেশ কিছু ভুল করেছি। একই ভুল ফের করা চলবে না। তাই এখন থেকেই ফু ইউকে নিয়ে ভাবছি। প্রথম রাউন্ড জিতে বাবা-মাকে সেটাই ফোনে বলছিলাম।”
অলিম্পিক্সের মঞ্চে অভিষেক ম্যাচ বলে কথা। ওঁর চোখে-মুখে ছিল চিন্তার ছাপ। এর মধ্যে সামনে আবার বিশ্ব তালিকার ৭৮ নম্বরে থাকা লিন্ডা বার্গস্ট্রম। তবে প্রথম রাউন্ড জিতে ওঁর মুখে সেই চেনা হাসি। যদিও সেই ম্যাচ ভুলে এখন পরের ম্যাচ নিয়েই ভাবছেন সুতীর্থা।
কোন মন্ত্রে বিপক্ষকে শেষের দিকে হেলায় হারালেন? সুতীর্থা বলেন, “বার্গস্ট্রমের বিরুদ্ধে এটা আমার তৃতীয় ম্যাচ। এর আগে ওর বিরুদ্ধে সুইডেন ও হাঙ্গেরিতে খেলেছি। ওর দেশে হারলেও এ বার খেলতে নামার আগে হাঙ্গেরিতে জয় পেয়েছিলাম। সেটা আমার মাথায় ছিল। তাই শুরুতে ও মাঝে সেট হারালেও নিজের আত্মবিশ্বাস হারাইনি। ফলে শেষ তিনটি সেট জিততে পারলাম।”
তবে শুরু ও খেলার মাঝের দিকে খেই হারানোর জন্য যে একটু চাপে ছিলেন, সেটা স্বীকার করে নিলেন সুতীর্থা। বিরতির সময় বারবার জাতীয় দলের মুখ্য প্রশিক্ষক সৌম্যদীপ রায়ের কাছে চলে যাচ্ছিলেন তিনি। টেলিভিশনের পর্দায় ফুটে উঠছিল সেই ছবি। কী পরামর্শ দিচ্ছিলেন ওঁর প্রশিক্ষক? সৌম্যদীপের প্রতিক্রিয়া, “খেলার মাঝে কতটুকু আর সময় পাওয়া যায়। খুব সামান্য কথা হচ্ছিল আমাদের মধ্যে। বার্গস্ট্রমের শক্তি ও দুর্বলতা সুতীর্থা জানে। তাই ওকে ধৈর্য রাখতে বলেছিলাম। তৃতীয় ও চতুর্থ সেটে প্রত্যাশা অনুসারে খেলতে না পারলেও নিজের প্রতি আস্থা রাখতে বলেছিলাম। আর এতেই এল সাফল্য।”
রবিবার ফের একবার নামছেন সুতীর্থা। দ্বিতীয় রাউন্ডে এ বার তাঁর প্রতিপক্ষ চিনের বংশোদ্ভূত পর্তুগালের ফু ইউ। বিশ্ব তালিকায় ৫৫ নম্বরে থাকা এই টেবিল টেনিস খেলোয়াড় সুতীর্থার থেকে ৪৩ ধাপ এগিয়ে রয়েছেন। তবে সুতীর্থা প্রতিপক্ষের শক্তি নিয়ে ভাবতে নারাজ।