সেমিফাইনালে হারের পর হতাশ হার্দিক সিংহ। ছবি: রয়টার্স।
প্যারিস অলিম্পিক্সের পর আন্তর্জাতিক হকি থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছেন পিআর শ্রীজেস। তাঁর অবসরের মুহূর্তটা সোনালি করতে চেয়েছিলেন হরমনপ্রীত সিংহ, হার্দিক সিংহ, মনপ্রীত সিংহেরা। কিন্তু সেই লক্ষ্যে সফল হল না ভারতীয় হকি দল। তবে পদক জেতার সুযোগ এখনও রয়েছে। সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে হরমনপ্রীতেরা হারলেন ২-৩ ব্যবধানে। বৃহস্পতিবার ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ স্পেন।
সেমিফাইনালে আগ্রাসী ভাবে শুরু করেছিল ভারতীয় দল। জার্মানির রক্ষণে ক্রমাগত চাপ তৈরির চেষ্টা করছিলেন ভারতীয় খেলোয়াড়েরা। একাধিক পেনাল্টি কর্নারও আদায় করে নেন হরমনপ্রীতেরা। তারই একটি থেকে ৭ মিনিটে ভারতকে এগিয়ে দেন হার্দিক সিংহ। প্রথম কোয়ার্টারের বাকি সময় সমানে সমানে লড়াই হলেও গোল হয়নি।
দ্বিতীয় কোয়ার্টারের শুরু থেকে ম্যাচের রাশ নিজেদের স্টিকে নিয়ে নেন জার্মানির খেলোয়াড়েরা। জার্মানদের একের পর এক আক্রমণের সামনে কিছুটা দিশাহারা দেখায় ভারতীয় দলকে। মাঝমাঠের দখল নিয়ে নেন জার্মানেরা। ১৮ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে সমতা ফেরান গঞ্জালো পিলেট। জার্মানির আগ্রাসী হকির সামনে দ্বিতীয় কোয়ার্টারে পেরে ওঠেনি ভারতীয় দল। চাপের মুখে প্ল্যান ‘বি’ বাস্তবায়িত করতে পারেননি হরমনপ্রীতেরা। বেশ কয়েকটি পেনাল্টি কর্নার আদায় করে নেন জার্মানেরা। ২৭ মিনিটে জার্মানির হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন ক্রিস্টোফার রুয়ের। পেন্টাল্টি কর্নারে জার্মানির ড্র্যাগ ফ্লিক জার্মানপ্রীত সিংহের পায়ে লাগলে পেনাল্টি স্ট্রোক পায় জার্মানি। গোল করতে ভুল করেননি ক্রিস্টোফার। ভারত ১-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে হাফ টাইমের আগে।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম কোয়ার্টারে বা ম্যাচের তৃতীয় কোয়ার্টারে আবার লড়াইয়ে ফেরে ভারত। আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ান মনপ্রীত, হার্দিকেরা। ভারত পরিকল্পনা বদলাতেই চাপে পড়ে যায় জার্মানি। চাপের মুখে জার্মানিও একাধিক পেনাল্টি কর্ণার দিয়ে ফেলে ভারতকে। ৩৬ মিনিটে পেনাল্টি কর্নারে হরমনপ্রীতের ফ্লিকে স্টিক ছুঁয়ে সমতা ফেরান সুখজিৎ সিংহ। তাতেও লাভ হয়নি। চতুর্থ কোয়ার্টারে ৫৪ মিনিটে কিছুটা খেলার গতির বিপরীতে গোল করে জার্মানিকে এগিয়ে দেন মার্কো। ম্যাচের শেষ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল ভারতীয় দল। জার্মানির গোলরক্ষক দারুণ ভাবে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। ভারতীয় খেলোয়াড়েরাও একাধিক সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন হরমনপ্রীতেরাও।
জায়গা তৈরি করতে না পারা, সময় মতো বল পাস দিতে না পারা, দীর্ঘ ক্ষণ বল স্টিকে রাখার প্রবণতা ভুগিয়েছে ভারতীয় দলকে। পরিকল্পনার অভাব দেখা গিয়েছে রক্ষণের ক্ষেত্রেও। অমিত রুইদাসের অভাবও বোঝা গিয়েছে। এই ম্যাচেও আম্পায়ারদের একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে খুশি দেখায়নি ভারতীয় শিবিরকে। প্রায় সব ভিডিয়ো রেফারেলের সিদ্ধান্তই গিয়েছে জার্মানির পক্ষে। তা দিয়ে অবশ্য ভারতীয় দলের ব্যর্থতা ঢাকা যাবে না। প্যারিস থেকে পদক নিয়ে ফিরতে হলে ক্রেগ ফুলটনের দলকে বেশ কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে। ম্যাচের পর রক্ষণের ভুলের কথা মেনে নিয়েছেন শ্রীজেসও।