চর্চায়: মেরি কমের সঙ্গে ব্যক্তিগত সংঘাতে যেতে চান না জারিন (বাঁ দিকে)।
মাত্র চব্বিশ ঘণ্টা আগে চিনে অলিম্পিক্স যোগ্যতা পর্বে অংশগ্রহণের স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছে মেরি কমের কাছে হেরে। যে লড়াই নিয়ে দুই বক্সার রিং এবং রিংয়ের বাইরে ছিলেন রীতিমতো উত্তেজিত।
কিন্তু সেই লড়াইয়ের পরে সুর বদলে গিয়েছে মেরির প্রতিদ্বন্দ্বী, তেলঙ্গনার বক্সার নিখাত জারিনের। তিনি জানিয়েছেন, ভারতীয় কিংবদন্তি বক্সারকে অসম্মান করার ভাবনা তাঁর কোনও সময়েই ছিল না। তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, যে প্রথায় বক্সারদের নির্বাচিত করা হয়, তার বিরোধিতা করে। জারিন বলেছেন, ‘‘এই লড়াই নিয়ে যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে, তা আমার কাছে কল্পনাতীত। কোনও সময় ভাবিনি, পরিস্থিতি এতটা উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। ঠিক যেমন আমি এ-ও ভাবতে পারিনি যে, মেরি আমার সম্পর্কে টুইটারে মন্তব্য করবেন এবং কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীকে চিঠি দেবেন।’’ সেখানেই না থেমে জারিন আরও বলেছেন, ‘‘মেরি যদি গোটা বিষয়কে ব্যক্তিগত স্তরে নিয়ে যান, তা নিয়ে আমার তো কিছু বলার থাকতে পারে না।’’ আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমি চেয়েছিলাম স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ ট্রায়াল। যে ভাবে বক্সারদের বাছাই করা হয়, আমি সেই প্রথার বিরোধিতা করেছি। মেরি কম অথবা বক্সিং সংস্থার বিরুদ্ধে আমার কোনও লড়াই ছিল না। আমি বরাবর বলে এসেছি, যে কোনও প্রতিযোগিতার আগে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সঠিক নিয়মে ট্রায়াল হোক। তার বেশি কিছু নয়।’’
কিন্তু শনিবার ট্রায়ালে জেতার পরে মেরি যে ধরনের বিবৃতি দিয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। জারিন বরং জানিয়েছেন, মেরির মতো কিংবদন্তি বক্সারের উচিত যে কোনও ধরনের ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেওয়া। তিনি বলেছেন, ‘‘মেরি তো কিংবদন্তি। তা হলে ওর ভয় পাওয়ার তো কিছু নেই। বরং আমাদের মতো জুনিয়র বক্সারদের বিরুদ্ধে খোলা মনে ট্রায়াল দেওয়ার বিষয়ে আগে সম্মতি দিলে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারতেন।’’ যোগ করেছেন, ‘‘মেরি আমাকে হারিয়ে অলিম্পিক্স যোগ্যতা পর্বে পৌঁছেছেন এবং সকলেই সেই ফলে খুশি হয়েছেন। বরং আমার মনে হয়, সেটা না হয়ে মেরি যদি সরাসরি চিনে যেতেন, তা হলে হয়তো অনেক ধরনের প্রশ্ন উঠত।’’ জারিনের আরও সংযোজন, ‘‘বরং মেরির বিরুদ্ধে লড়াই করার পরে আমিও বুঝতে পেরেছি কোন জায়গায় ঘাটতি রয়েছে। কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছি, তা যাচাই করার জন্যই ট্রায়াল চেয়েছিলাম। আমি মনে করি, এর পর থেকে প্রত্যেকটি প্রতিযোগিতার আগে ট্রায়াল হওয়া দরকার। ম্যাচে হয়তো আমি হেরেছি, কিন্তু সকলের মন জিতেছি। তাতেই আমি খুশি।’’
শনিবার মেরির বিরুদ্ধে ১-৯ হারের পরেও ভেঙে পড়ছেন না তেলঙ্গনার এই বক্সার। তিনি বলেছেন, ‘‘এখানেই সমস্ত কিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে না। সামনে এখনও অনেক প্রতিযোগিতা রয়েছে। এখনই আশাহত হওয়ার কোনও কারণ দেখছি না। ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা এখনও আমার কাছে প্রশস্ত।’’ শনিবারের লড়াইয়ে তেলঙ্গনা বক্সিং সংস্থার প্রতিনিধিদের উত্তেজিত আচরণেও লজ্জিত জারিন। তিনি বলেছেন, ‘‘ওঁরা হয়তো আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। আমি কিন্তু তাঁদের শান্ত থাকার আবেদন করেছি। বোঝানোর চেষ্টা করেছি, এই আচরণ কোনও অবস্থাতেই কাঙ্ক্ষিত নয়। বিষয়টাকে তামাশার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না।’’