অর্ধশতরান করে পঞ্জাবকে জেতালেন শশাঙ্ক সিংহ। ছবি: আইপিএল।
খেলার ৩০ ওভার পর্যন্ত মনে হয়েছিল হাসতে হাসতে ম্যাচ জিতবে গুজরাত টাইটান্স। কিন্তু শেষ ১০ ওভারে বদলে গেল ছবিটা। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ২০০ রান তাড়া করতে নেমে যেখানে শিখর ধাওয়ান, জনি বেয়ারস্টোরা ব্যর্থ হলেন সেখানেই নায়ক হয়ে উঠলেন শশাঙ্ক সিংহ। তাঁকে সঙ্গ দিলে আশুতোষ শর্মা। দুই তরুণ ব্যাটারের দাপটে টান টান ম্যাচে গুজরাতকে হারাল পঞ্জাব কিংস। ১৯৯ রান করেও হারতে হল শুভমন গিলদের।
টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন পঞ্জাবের অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান। এই ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন শুভমন। তাঁর ওপেনিং জুটি ঋদ্ধিমান সাহা এই ম্যাচে রান পাননি। ১১ রান করে আউট হন তিনি। চলতি আইপিএলে প্রথম বার খেলতে নেমে ২৬ রান করেন কেন উইলিয়ামসন।
চলতি আইপিএলে গুজরাতের সব থেকে ধারাবাহিক ব্যাটার সাই সুদর্শন আরও একটি ভাল ইনিংস খেলেন। ব্যাট করতে নেমে মাঠের ফাঁকা জায়গা ব্যবহার করে বড় শট খেলা শুরু করেন তিনি। সঙ্গী শুভমন অবশ্য বড় শট খেলা থামাননি। সুদর্শন ১৯ বলে ৩৩ রান করে আউট হন। রান পাননি বিজয় শঙ্কর।
শুভমন এক দিকে টিকেছিলেন। অর্ধশতরান করার পরেও রান তোলার গতি থামাননি তিনি। পঞ্জাবের কোনও বোলারকেই রেয়াত করছিলেন না শুভমন। শেষ দিকে শুধু বড় শট খেলছিলেন। ধীরে ধীরে শতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন গুজরাতের অধিনায়ক। শেষ দিকে দ্রুত রান করেন রাহুল তেওতিয়াও।
শেষ ওভারে ১৫ রান করলে শতরান করতে পারতেন শুভমন। আরশদীপ দেন ১৩ রান। ফলে শতরানের আগেই থামতে হয় শুভমনকে। তিনি ৮৯ রানে অপরাজিত থাকেন। তেওতিয়া অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ২৩ রানে। ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৯ রান করে গুজরাত।
২০০ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ১ রানের মাথায় ধাওয়ানকে আউট করেন উমেশ যাদব। বড় ধাক্কা খায় পঞ্জাব। জনি বেয়ারস্টো ও প্রভসিমরন সিংহ শুরুটা ভাল করলেও বেশি ক্ষণ টিকতে পারেননি। বেয়ারস্টোকে ২২ ও প্রভসিমরনকে ৩৫ রানের মাথায় আউট করেন নুর আহমেদ। স্যাম কারেন ৫ রানে আউট হন।
চার উইকেট পড়ার পরে সিকন্দর রাজা ও শশাঙ্কের মধ্যে জুটি হয়। শশাঙ্ক বেশ আক্রমণাত্মক খেলছিলেন। উমেশের এক ওভারে ১৭ রান করেন তিনি। কিন্তু জরুরি রানরেট ক্রমাগত বাড়ছিল। ফলে বড় শট খেলতে গিয়ে ১৫ রানে আউট হন সিকন্দর। পঞ্জাবের ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পড়ে শশাঙ্ক ও জিতেশ শর্মার উপর।
ম্যাচ জিততে শেষ ৬ ওভারে দরকার ছিল ৬৯ রান। অর্ধেক দল সাজঘরে ফিরে গেলেও ভয় পাননি পঞ্জাবের দুই তরুণ ব্যাটার। শশাঙ্ক শুরু থেকেই বড় শট খেলছিলেন। পেসার, স্পিনার কাউকে রেয়াত করছিলেন না। এমনকি, রশিদ খানও রান দিচ্ছিলেন। জিতেশও হাত খোলা শুরু করেন। রশিদকে পর পর দু’বলে ছক্কা মারেন তিনি। তৃতীয় বলটি ফুলটস করেছিলেন রশিদ। সেই বলে আউট হয়ে যান জিতেশ।
শেষ চার ওভারে জিততে দরকার ছিল ৪৭ রান। লড়াই ছাড়েনি পঞ্জাব। শশাঙ্ক ২৫ বলে অর্ধশতরান করেন। তাঁকে সঙ্গ দেন ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নামা আশুতোষ শর্মা। শেষ ১২ বলে জিততে দরকার ছিল ২৫ রান। দুই তরুণ দেখালেন, ভয়ডরহীন ক্রিকেট কাকে বলে। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৭ রান। প্রথম বলে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন আশুতোষ। ১৭ বলে ৩১ রান করেন তিনি। শশাঙ্ক তখনও ক্রিজ়ে ছিলেন। তিনি ১ বল বাকি থাকতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৬১ রান করে অপরাজিত থাকেন পঞ্জাবের জয়ের নায়ক।