ঘরের মাঠে আরও একটি ম্যাচ জিতে প্লে-অফ প্রায় পাকা করে নিলেন হার্দিক পাণ্ড্যরা। —ফাইল চিত্র
প্লে-অফে এক পা দিয়ে দিল গত বারের চ্যাম্পিয়ন গুজরাত টাইটান্স। ঋদ্ধিমান সাহা ও শুভমন গিলের দাপটে ঘরের মাঠে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ৫৬ রানে হারালেন হার্দিক পাণ্ড্যরা। ঋদ্ধি ও শুভমন দু’জনে মিলে ১৭৫ রান করেছেন। গোটা লখনউ দল করেছে ১৭১ রান। পরাজিত দলের অধিনায়ক হার্দিকেরই দাদা ক্রুণাল পাণ্ড্য। ভাইয়ের কাছে হেরে প্লে-অফের অঙ্ক কিছুটা কঠিন হল লখনউয়ের।
টসে জিতে প্রথমে গুজরাতকে ব্যাট করতে পাঠান ক্রুণাল। ঘরের মাঠে দেখা গেল ঋদ্ধি-শুভমন শো। এ বারের আইপিএলে ঋদ্ধিকে লাইসেন্স দিয়ে রেখেছে গুজরাত টাইটান্স। তাঁর কাজ প্রথম বল থেকেই বড় শট খেলা। জুড়িদার শুভমনেই কাজ ইনিংস ধরে খেলা। লখনউয়ের বিরুদ্ধেও সেটাই শুরু করেন ঋদ্ধি। প্রথম ওভারে মহসিন খানকে পর পর দুটো চার মেরে শুরু। তার পরে আর থামানো গেল না শিলিগুড়ির পাপালিকে।
পেসার, স্পিনার কাউকে রেয়াত করলেন না ঋদ্ধি। একের পর এক বল উড়ে গেল নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। কোনও স্লগ নয়, ক্রিকেটীয় শটে রান করতে থাকেন ঋদ্ধি। পাওয়ার প্লে-র সুবিধা কাজে লাগান তিনি। অপর প্রান্তে থাকা শুভমন তখন দর্শর। তিনিও উপভোগ করছেন ঋদ্ধি শো।
পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে যশ ঠাকুরকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে অর্ধশতরান করেন ঋদ্ধি। এ বারের আইপিএলে বেশ কয়েকটি ম্যাচে শুরুটা ভাল করলেও ৫০ পার করতে পারেননি। এই ম্যাচে করলেন। সেইসঙ্গে দু’টি নজিরও গড়লেন তিনি। এ বারেরই আইপিএলে পাওয়ার প্লে-তে সব থেকে বেশি রান (বিনা উইকেটে ৭৮) করলেন ঋদ্ধি-শুভমন জুটি। যদি তার মধ্যে মাত্র ২২ রান শুভমনের। এ বারের আইপিএলে পাওয়ার প্লে-তে ব্যক্তিগত সব থেকে বেশি রানও করলেন ঋদ্ধি( ২৩ বলে ৫৪)।
শতরান করার সুযোগ ছিল ঋদ্ধির। সময়ও ছিল অনেক। কিন্তু দলের জন্য খেলছিলেন তিনি। আবেশ খানকে স্কোয়্যার লেগ অঞ্চলে ছক্কা মারতে গিয়ে ৪৩ বলে ৮১ করে আউট হন ঋদ্ধি। তিনি মারেন ১০টি চার ও চারটি ছক্কা। অর্থাৎ, ৮১ রানের মধ্যে ৬৪ রান এসেছে বাউন্ডারিতে।
ঋদ্ধি যত ক্ষণ মারছিলেন তত ক্ষণ ধরে খেলছিলেন শুভমন। কিন্তু ঋদ্ধি ফেরার পরে আক্রমণাত্মক শট খেলা শুরু করলেন তিনি। বাকি সময়টা শুভমন শো। হার্দিক, মিলাররা তাঁকে সাহায্য করলেন। এ বারের আইপিএলে ভাল ছন্দে রয়েছেন শুভমন। সেটাই আরও এক বার দেখা গেল। ২৯ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি। ঋদ্ধির মতো শুভমনেরও শতরান করার সুযোগ ছিল।
শেষ ওভারের প্রথম দুই বলের পরে সেই আশা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু শেষ দুই বলে স্ট্রাইক পাননি শুভমন। তার ফলে ৯৪ রানে অপরাজিত থেকে গেলেন তিনি। দল করল ২২৭ রান।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেছিলেন লখনউয়ের দুই ওপেনার কাইল মেয়ার্স ও কুইন্টন ডি’কক। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন তাঁরা। মেয়ার্স এ বারের আইপিএলে ছন্দেই ছিলেন। ডি’ককও প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে হাত খোলা শুরু করেন। মাত্র ৪ ওভারে দলের রান ৫০ পেরিয়ে যায়। পাওয়ার প্লে-তে ৭৮ রান করেন তাঁরা।
দেখে মনে হচ্ছিল, টান টান খেলা হতে চলেছে। কিন্তু ৩২ বলে ৪৮ রান করে রশিদ খানের দুরন্ত ক্যাচে আউট হন মেয়ার্স। সেখানেই খেলার ছবি বদলে যায়। ডি’কক নিজের অর্ধশতরান করলেও বাকিরা কেউ রান পাননি। দীপক হুডা, মার্কাস স্টোইনিস, নিকোলাস পুরানরা অল্প রানে আউট হয়ে যান। ৪১ বলে ৭০ রান করে ডি’কক আউট হয়ে গেলে লখনউয়ের জয়ের সব আশা শেষ হয়ে যায়। বল হাতে ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন গুজরাতের মোহিত শর্মা।