হারল শাহরুখের দল। ফাইল ছবি
ম্যাচের প্রথম ওভারেই ময়াঙ্ক আগরওয়ালের লোপ্পা ক্যাচ পড়ল তাঁর হাত থেকে। দীর্ঘদিন আইপিএল-এ খেলার সুবাদে অইন মর্গ্যান ভালই জানেন ময়াঙ্কের মতো ব্যাটসম্যান এক বার জীবন পেলে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। ঠিক সেটাই হল বৃহস্পতিবার। প্রথম ময়াঙ্কের ঝড়, তারপর অধিনায়ক কেএল রাহুলের ঠান্ডা মাথার ইনিংসে ভর করে কলকাতাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দিল পঞ্জাব। হেরে গিয়ে প্লে-অফের রাস্তা আরও কঠিন হল কেকেআর-এর।
শুক্রবার ব্যাট হাতে ফের ভেলকি দেখিয়েছিলেন কেকেআর-এর বেঙ্কটেশ আয়ার। শেষ ওভারে তাঁর হাতেই বল তুলে দেন মর্গ্যান। দ্বিতীয় বলে বিধ্বংসী রাহুলকে ফিরিয়ে সাময়িক স্বপ্নও তিনি দেখিয়েছিলেন কেকেআর-কে। কিন্তু ততক্ষণে ম্যাচ জেতার যাবতীয় আশা কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছে। জেতার জন্য শেষ ওভারে মাত্র পাঁচ রান দরকার ছিল। সেটা আটকানো সম্ভব হয়নি বেঙ্কটেশের পক্ষে। ফলে গোটা ম্যাচে ব্যাট এবং বল হাতে তাঁর কামাল সত্ত্বেও হারতে হল কেকেআর-কে।
বরং সেই জায়গা কেড়ে নিলেন শাহরুখ খান। বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিন্টা পঞ্জাব দলের মালিক। এ বারই নিলামে শাহরুখকে কিনেছে পঞ্জাব। নিজের দলের শাহরুখকে দিয়েই বিপক্ষ দলের শাহরুখকে মাত করে দিলেন তিনি। শেষ বেলায় কিছুটা চাপে পড়েছিল পঞ্জাব। কিন্তু শাহরুখের ৯ বলে ২২ রান জয় এনে দিল পঞ্জাবকে। জয়ের ছক্কাও এল তাঁর ব্যাট থেকে।
গত দু’ম্যাচে কেকেআর-এর ওপেনিং জুটি গড়ে ওঠেনি। শুক্রবারের ম্যাচও তার ব্যতিক্রম নয়। তৃতীয় ওভারের অর্শদীপ সিংহের দ্বিতীয় বলেই বোল্ড হয়ে গেলেন শুভমন গিল। পরিত্রাতা হিসেবে ফের দেখা দিলেন বেঙ্কটেশ এবং রাহুল ত্রিপাঠি। আগের ম্যাচগুলিতেও যে ভাবে তারা দ্বিতীয় উইকেটে রান তুলেছিলেন, এই ম্যাচেও তাই দেখা গেল। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে কেকেআর-কে বড় রানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন দু’জনে।
দ্বিতীয় উইকেটে ৭২ রানের জুটি গড়লেন রাহুল এবং বেঙ্কটেশ। এরপর রবি বিষ্ণোইয়ের বলে ফেরেন রাহুল। চার নম্বরে নীতীশ রানাকে আগেও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে দেখা গিয়েছে। শুক্রবার তিনি বেঙ্কটেশের সঙ্গে জুটি বেঁধে ফের দায়িত্ব নিয়ে খেললেন তিনি।
প্রথম দু’ম্যাচে রান করার পর মাঝের দুটি ম্যাচে বেঙ্কটেশের ব্যাট থেকে রান আসেনি। কিন্তু পঞ্জাব ম্যাচে জ্বলে উঠলেন মধ্যপ্রদেশের অলরাউন্ডার। পঞ্জাবের প্রত্যেক বোলারকেই নিয়ম করে সীমানার বাইরে পাঠাচ্ছিলেন। যে ছন্দে ছিলেন, এক সময় তাঁর শতরানও হয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন ধারাভাষ্যকাররা। কিন্তু মারতে গিয়েই উইকেট খোয়াতে হল বেঙ্কটেশকে। রাহুলের পর তাঁকেও তুলে নিলেন বিষ্ণোই।
অধিনায়কের মর্গ্যানের ব্যাটে কবে রান পাওয়া যাবে তা নিয়ে এ বার বাজি ধরতে পারেন কেকেআর সমর্থকরা। একটার পর একটা ম্যাচ যাচ্ছে। কিন্তু কেকেআর অধিনায়কের ব্যাটে রানের খরা থামার কোনও লক্ষণ নেই। শুক্রবারও মহম্মদ শামির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেলেন মাত্র দু’রান করে। গত চার ম্যাচে মাত্র ১৫ রান করেছেন তিনি। নীতীশ না থাকলে কেকেআর দেড়শোর গন্ডি পেরোত কি না সন্দেহ।
পঞ্জাবকে বরাবর ভরসা দিয়েছে ওপেনিং জুটি। শুক্রবার ময়াঙ্কের ক্যাচ শুরুতে ফেলে কেকেআর অধিনায়ক যে বিপদে ফেললেন, তা থেকে বেরোতে পারল না দল। ৪০ রান করে সেই মর্গ্যানের হাতে ক্যাচ দিয়েই ময়াঙ্ক ফিরলেও, ততক্ষণে দলকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। নিকোলাস পুরান, এডেন মার্করাম এবং দীপক হুডাকে পরপর হারানোয় একসময় চাপে পড়েছিল পঞ্জাব। শেষ ওভারে ফিরে যাওয়ার আগে পর্যন্ত দুর্দান্ত খেললেন রাহুল। যোগ্য নেতার মতোই প্রায় শেষ পর্যন্ত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে এলেন।