সচিনকে ফিরিয়ে চেন্নাইকে জয়ের সরণিতে নিয়ে আসে নেতা ধোনির মাস্টারস্ট্রোক।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের সামনে অসহায় দেখাচ্ছিল বাঁ-হাতি স্পিনারকে। চেন্নাই সুপার কিংস অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি তাই দ্রুত আক্রমণ থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তাঁকে। বিপক্ষের ডানহাতি ব্যাটসম্যানরা ক্রিজে আসতেই ফের বল দিয়েছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনারকে। আর সেই কৌশলেই হল বাজিমাত। থেমে গেল মুম্বইয়ের লড়াই।
সেটা ২০১০ সালের আইপিএল ফাইনাল। আরব সাগরের তীরে মুখোমুখি মুম্বই-চেন্নাই। প্রথমে ব্যাট করে সুরেশ রায়নার হাফ-সেঞ্চুরির সুবাদে চেন্নাই পাঁচ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ১৬৮। ১৬৯ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সচিন তেন্ডুলকরের মুম্বই ইন্ডিয়ান্স প্রথমেই খেয়েছিল ধাক্কা। শিখর ধওয়ন ফিরেছিলেন কোনও রান না করেই। দ্বিতীয় উইকেটে সচিনের সঙ্গে জুটিতে অভিষেক নায়ার টানছিলেন হোমটিমকে। এই সময় ধোনি বল দিয়েছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনার সাদাব জাকাতিকে। যিনি প্রথম দুই ওভারেই দিয়ে বসেন ২১ রান।
আরও পড়ুন: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন কেড়ে নিতে পারে আইসিসি, বোর্ডকে কড়া ইমেল
জাকাতি বলেছেন, “আমার প্রথম দুই ওভারে ২১ রান উঠেছিল। বাঁ-হাতি অভিষেক নায়ার ব্যাট করছিল। ধোনি তখন বলল যে আমাকে ও পরে মিডল ওভারে ব্যবহার করবে।” আর সেটাই হয়ে ওঠে মাস্টারস্ট্রোক। সচিন তখন অভিষেকের সঙ্গে জুটিতে মুম্বইকে এগিয়ে নিয়ে চলছেন। ১১.২ ওভারে দলীয় ৬৭ রানে পড়ে মুম্বইয়ের দ্বিতীয় উইকেট। রান আউট হন অভিষেক (২৭)। চার নম্বরে মারতে পাঠানো হরভজন সিংহও (১) ফেরেন তার পর। ক্রিজে আসেন অম্বাতি রায়ুডু। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই জাকাতিকে ফের আক্রমণে আনেন ধোনি।
আর ১৫তম ওভারে জাকাতি এসেই ফেরান সচিনকে (৪৮)। ওভারের দ্বিতীয় বলে তুলে মারতে গিয়ে লং-অফে ক্যাচ তোলেন মু্ম্বই অধিনায়ক। ৯৯ রানে পড়ে মুম্বইয়ের চতুর্থ উইকেট। ওই ওভারেই ফের আঘাত হানেন জাকাতি। ফেরান সৌরভ তিওয়ারিকে (০)। জোড়া ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি মুম্বই। পরের দিকে কিয়েরন পোলার্ড (২৭) চেষ্টা করলেও জেতাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ২২ রানে জিতে প্রথম বার আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয় চেন্নাই সুপার কিংস।
আরও পড়ুন: বিরাট কোহালির থেকেও স্টিভ স্মিথকে এগিয়ে রাখছেন ব্রেট লি
জাকাতি বলেছেন, “সচিন তেন্ডুলকর, অম্বাতি রায়ুডু, কিয়েরন পোলার্ডের কথা ভেবে ধোনি আমাকে পরের দিকে বল করার জন্য রেখে দিয়েছিল। মুম্বইয়ের ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের জন্য আমাদের হোমওয়ার্ক করাই ছিল। যাঁরা কি না বাঁ-হাতি স্পিনারদের বিরুদ্ধে দুর্বল ছিল।” ধোনির সেই টোটকাতেই হয় বাজিমাত। জাকাতিকে পরের দিকে আনার চাল বদলে দেয় ম্যাচের গতিপথ। জাকাতিকে আর বল দেননি চেন্নাই অধিনায়ক। তিন ওভারে ২৬ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন বাঁ-হাতি স্পিনার। এর মধ্যে তিন নম্বর ওভারে দুই উইকেট আসে মাত্র পাঁচ রানে।