স্পেনের এই হাসি রবিবার দেখা যাবে? — ফাইল চিত্র।
গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে তুরস্কের বিরুদ্ধে তাদের খেলা মন জয় করেছিল। তা বলে যে পর্তুগালের মতো ধারেভারে অনেক শক্তিশালী দলকে হারিয়ে দেবে তা কেউই ভাবতে পারেননি। সেই জর্জিয়া রবিবার ইউরো কাপের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে নামছে স্পেনের বিরুদ্ধে। অন্য ম্যাচে, ইংল্যান্ডের সামনে স্লোভাকিয়া। আগের দু’টি ম্যাচে দল যে ভাবে সমালোচিত হয়েছে, তা কাটিয়ে ইংরেজদের কোয়ার্টারে তোলাই চ্যালেঞ্জ কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের সামনে।
২০১২ সালে শেষ বার ইউরো জেতার পর স্পেনের পক্ষে বলার মতো কিছু নেই। তবে তরুণদের হাত ধরে এ বার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে গোটা দল। গ্রুপে স্পেনই একমাত্র দল যারা সব ম্যাচ জিতেছে। যোগ্যতা অর্জন পর্বে তারা দু’বারই জর্জিয়াকে হারিয়েছে। তার মধ্যে এক বার ৭-১ ব্যবধানে। সেই ম্যাচে গোল করেছিলেন লেমিনে ইয়ামাল।
তবে কোচ উইলি স্যাগনলের হাতে পড়ে পাল্টে গিয়েছে জর্জিয়া। তুরস্কের বিরুদ্ধে তাদের দ্রুত প্রতি আক্রমণ নজরে এসেছিল সকলের। পর্তুগাল ম্যাচে তা অন্য পর্যায়ে নিয়ে যায় তারা। চলতি ইউরোয় এখনও কঠিন পরীক্ষায় পড়েনি স্পেন। ফলে জর্জিয়ার এই কৌশল কাজে লাগতে পারে।
তবে দু’দলের পার্থক্য গড়ে দিতে পারে ফিটনেস। আগের ম্যাচে আলবেনিয়ার বিরুদ্ধে গোটা দলকেই বদলে দিয়েছিলেন কোচ লুই দে লা ফুয়েন্তে। ফলে প্রথম দলের ফুটবলারেরা অনেকটা বিশ্রাম নিয়ে নামবেন। জর্জিয়া আগের ম্যাচেই পর্তুগালকে হারাতে নিজেদের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছে। ইটালির বিরুদ্ধে একই গতিতে খেলা মুশকিল হতে পারে। স্পেন গোটা দলকেই পাচ্ছে। নির্বাসন কাটিয়ে ফিরছেন রদ্রি। তবে জর্জিয়ার আনজর মেকভাবিশভিলি দু’টি হলুদ কার্ড দেখে নির্বাসিত।
জর্জিয়ার কোচ স্যাগনল চাপের কথা মাথাতেই রাখছেন না। তাঁর দাবি, এই ফলাফল ইউরো জেতার সমানই। স্যাগনল বলেছেন, “ছেলেরা এক বার পায়ে বল পেলে কী করতে হয় সেটা জানে। ফুটবলটা অঙ্ক বা দাবা নয়। আবেগ দিয়ে খেলতে হয়। আমরা অনেকটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামব। আমাদের কিছুই হারানোর নেই। আমার মতে, ইতিমধ্যেই ইউরো জিতে গিয়েছি।”
এ দিকে, ইংল্যান্ড নামছে প্রবল চাপের মধ্যে। ডেনমার্ক এবং স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে ইংরেজদের খেলা দেখে সমর্থকেরা একেবারেই খুশি নন। কোচ সাউথগেটের দিকে উড়ে এসেছে বোতলও। তবে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা, ফাইনালের আগে তেমন কোনও কঠিন দল পড়বে না তাদের সামনে। এই কারণেই অনেক খোলা মনে খেলতে পারেন তারা।
কোচ হিসাবে গত তিনটি বড় প্রতিযোগিতার প্রতিটিতেই দলকে কোয়ার্টারে তুলেছেন সাউথগেট। স্বাধীন দেশ হিসাবে স্লোভাকিয়া এই নিয়ে দ্বিতীয় বার নকআউটে উঠেছে। প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী বেলজিয়ামকে হারিয়েছে তারা।
ইংল্যান্ড এই ম্যাচে পেতে পারে লুক শ-কে। চোট সারিয়ে ফিরেছেন তিনি। অন্য দিকে, এই ম্যাচেও ট্রেন্ট আলেকজ়ান্ডার আর্নল্ডের জায়গায় খেতে পারেন কোবি মাইনু। স্লোভাকিয়ার শেষ ছ’টি ম্যাচে অপরাজিত ইংল্যান্ড।
চাপের মুখে ঘাবড়াচ্ছেন না সাউথগেট। বলেছেন, “এত দিন যা হয়েছে তা সবই এখন অপ্রাসঙ্গিক। এখনও উন্নতির অনেক জায়গা রয়েছে। তবে এটা অন্য রকমের পরীক্ষা। প্রতিযোগিতার অন্য পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। প্রতিটা ম্যাচেরই আলাদা গুরুত্ব রয়েছি।”
স্লোভাকিয়ার অধিনায়ক মিলান স্ক্রিনিয়ার বলেছেন, “কোথা থেকে আমরা যাত্রাটা শুরু করেছিলাম মনে আছে। একটা সময় ছিল যখন আমাদের প্রদর্শনী ম্যাচ দেখতে মাত্র দু’হাজার লোক আসত। আর এখন আমরা ইউরোপের সেরা ১৬ দলের একটা। অসাধারণ একটা সময় কাটিয়েছি।”