হাবাসের কড়া নজরে অনুশীলন মোহনবাগান। সোমবার ভুবনেশ্বরে। ছবি: সংগৃহীত।
এ বারের আইএসএলে আবার ওড়িশার সঙ্গে দেখা হতে চলেছে মোহনবাগানের। মঙ্গলবার সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে ওড়িশার মাঠে খেলতে নামবেন জনি কাউকোরা। এই নিয়ে এ বারের আইএসএলে পাঁচ নম্বর লড়াই হতে চলেছে মোহনবাগান ও ওড়িশার মধ্যে। এএফসি কাপে দু’বার দেখা হয়েছিল। ভুবনেশ্বরে জিতলেও ঘরের মাঠে পাঁচ গোল খেয়ে বিদায় নেয় মোহনবাগান। আইএসএলে দু’টি ম্যাচই ড্র হয়। সেমিফাইনালে দুই দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা প্রবল। সেটা মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস জানেন। তাই বারবার দলের ফুটবলারদের মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এই ম্যাচে জেতা সোজা হবে না এবং জিততে গেলে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে হবে। তিনি এ-ও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জিতে কলকাতায় ফিরতে পারলে দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে সমর্থকদের কাছ থেকে তুমুল সমর্থন পাবেন। ৯০ মিনিটেই তাঁরা খেলা শেষ করতে চান।
গত কয়েক সপ্তাহ অসুস্থ থাকার পর হাবাস ওড়িশা ম্যাচে থাকছেন দলের সঙ্গে। সাংবাদিক বৈঠকেও ছিলেন। জানিয়ে দিয়েছিলেন, অতীতে কী হয়েছে তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। বেশি ভাবছেন বর্তমান নিয়ে। বলেছেন, “আগে কী হয়েছে তা নিয়ে ভাবছিই না। ওড়িশা যথেষ্ট ভাল দল। ওদের একজন ভাল কোচ আছে, অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। আমাদের ম্যাচটা কঠিন হতে চলেছে।” কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ৯০ মিনিটেই জিততে চান হাবাস। বলেছেন, “এই ম্যাচটাকে লিগের অন্য ম্যাচের মতোই খেলতে হবে। ৯০ মিনিটেই জিততে হবে। এখনই দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে ভাবার নেই। প্রথম পর্বে জেতা বেশি কঠিন। হেরে গেলে চলবে না। লিগে যে দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নেমেছি এই ম্যাচেও সেই দায়িত্ব নিয়েই মাঠে নামতে হবে। তাই ৯০ মিনিটে ম্যাচটা জিতে এগিয়ে থাকতে হবে আমাদের।”
কলকাতার মতো ভুবনেশ্বরেও প্রবল গরম। সে শহরেও দুপুরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ম্যাচের সময় অবশ্য এতটা গরম থাকার কথা নয়। ক্লান্তি ফুটবলারদের একটা বড় সমস্যা হয়ে উঠতে পারে এই ম্যাচে। তবে সেই অজুহাত দিতে রাজি নন হাবাস। বলেছেন, “আবহাওয়া যে রকমই থাকুক, তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে ছেলেদের। প্রতিপক্ষকেও একই পরিবেশে খেলতে হবে। এই নিয়ে কোনও অজুহাত দিলে চলবে না। তবে খেলোয়াড়দের শরীরের উপর প্রভাব পড়বে। তার জন্য খারাপ পারফরম্যান্স হলে চলবে না।”
লিগ-শিল্ড জয়ের তৃপ্তি যাতে আত্মতুষ্টিতে পরিণত না হয় সে দিকেও কড়া নজর রেখেছেন হাবাস। বলেছেন, “এই পরিস্থিতিতে যেটা সবচেয়ে বড় সমস্যা হতে পারে, তা হল গা-ছাড়া ভাব। এটা নিয়ে কথা বলেছি। লিগ-শিল্ড জেতার পরেই সামনে ট্রফির লড়াই। এই পরিস্থিতিতে আমার দায়িত্ব ছেলেদের অনুপ্রাণিত করা। অনুশীলনে এখন বিশেষ কিছু উন্নতি করা সম্ভব নয়।” প্রতিপক্ষ সম্পর্কে সমীহ রয়েছে সবুজ-মেরুন শিবিরের কোচের গলায়। বলেছেন, “ওদের দলে একাধিক অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। তাই ম্যাচটা সহজ হবে না। তবে নিজের দলের প্রতি আমার আস্থা আছে। আমাদেরও ভাল খেলোয়াড় আছে। আমরা ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই জেতার কথা মাথায় রেখে খেলি।”
বিপক্ষে রয়েছেন হাবাসেরই প্রশিক্ষণে থেকে নায়ক হয়ে ওঠা রয় কৃষ্ণও। তাঁকে নিয়ে প্রাক্তন গুরু বলেছেন, “রয় কৃষ্ণকে আমি পছন্দ করি। কিন্তু এখন ও আমার প্রতিপক্ষ। ম্যাচের পরে না হয় ওকে জড়িয়ে ধরব। কিন্তু এখন আমার আগ্রহ শুধু আমার দল নিয়ে। ফুটবলে প্রতিপক্ষ দলে কোনও বন্ধু থাকতে পারে না।”
গত ম্যাচে গোল করা লিস্টন কোলাসোও নিজের সেরাটা দিতে চান এই ম্যাচে। তিনি বলেছেন, “সেমিফাইনালে দলকে সব রকম ভাবে সাহায্য করতে চাই। দলকে গোল পেতে যেমন সাহায্য করতে চাই, তেমনই প্রতিপক্ষ যাতে গোল করতে না পারে, সে জন্যও দলকে সাহায্য করতে চাই। নিজের সেরাটা দিতে চাই।”