মহড়া: আইএসএল সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ ওড়িশা। তার আগে অনুশীলনে মগ্ন দিমিত্রি। ছবি: এক্স।
আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস অনুশীলনে যোগ দিতেই বদলে গেল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের অন্দরমহলের আবহ। ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে সেমিফাইনালের প্রথম পর্বের সাক্ষাতের তিন দিন আগেই জনি কাউকো, জেসন কামিংসদের গলায় হুঙ্কার, ‘‘প্রতিপক্ষ যে দলই হোক না কেন, আমরা ভয় পাই না।’’
মোহনবাগান বনাম ওড়িশা দ্বৈরথকে কেন্দ্র করে এই মরসুমে বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আবহ। এএফসি কাপের গ্রুপ লিগে প্রথম পর্বের সাক্ষাতে দিমিত্রি পেত্রাতস-রা ৪-০ গোলে ওড়িশাকে হারিয়েছিলেন। কিন্তু মোহনবাগানের আন্তঃআঞ্চলিক সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছিল যুবভারতীতে ফিরতি দ্বৈরথে ২-৫ গোলে লজ্জার হারে। আইএসএলে ঘরের মাঠে মনবীর সিংহ-রা ০-২ পিছিয়ে পড়েও ড্র করেছিলেন আর্মান্দো সাদিকুর সৌজন্য। জোড়া গোল করে নিশ্চিত হার বাঁচিয়েছিলেন তিনি। খেলা শেষে মাঠেই মোহনবাগানের তৎকালীন কোচ জুয়ান ফেরান্দোর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন কৃষ্ণ। উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যুবভারতীর আবহ।
আইএসএলে দ্বিতীয় পর্বের সাক্ষাতের ফল ছিল ০-০। এই কারণেই সবুজ-মেরুন সমর্থকদের অধিকাংশই প্রার্থনা করছিলেন, শুক্রবার রাতে ওড়িশাকে হারিয়ে যেন শেষ চারে যোগ্যতা অর্জন করে কেরল ব্লাস্টার্স। কিন্তু রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে শেষ হাসি হাসলেন কৃষ্ণরাই।
হাবাস-সহ ফুটবলারদের সকলেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, ওড়িশাকে নিয়ে চিন্তিত নন তাঁরা। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শুক্রবার অনুশীলনে ছিলেন না স্পেনীয় কোচ। যুবভারতীর লাগোয়া পাঁচতারা হোটেলে সহকারী ম্যানুয়েল কাসকালানা-র ঘরের জানলা দিয়েই প্রস্তুতি দেখেছিলেন। শনিবার অনুশীলনে চেনা মেজাজেই দেখা গেল হাবাসকে। শুক্রবার মোহনবাগানের অনুশীলনে জোর দেওয়া হয়েছিল আক্রমণাত্মক ফুটবলের উপরে। এ দিন পরীক্ষা নিলেন রক্ষণের ফুটবলারদের। দিমিত্রি, জনি কাউকো, মনবীরদের বিরুদ্ধে খেলালেন ইউতসে, আনোয়ার আলি, শুভাশিস বসুদের। দেখে নিতে চাইলেন, ওড়িশার কৃষ্ণ, দিয়েগো মৌরিসিয়ো-দের আটকাতে কতটা তৈরি মোহনবাগানের রক্ষণ। কেরলের বিরুদ্ধে কৃষ্ণ গোল না পেলেও দিয়েগো ও ইসাক ভানলালরুতফেলা বল জালে জড়িয়েছিলেন তাঁর পাস থেকেই। শুধু তাই নয়। কৃষ্ণের নেতৃত্বেই আক্রমণের ঝড় তুলেছিল ওড়িশা। মঙ্গলবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে প্রথম পর্বে সের্খিয়ো লোবেরার তুরুপের তাস হতে চলেছেন কৃষ্ণ।
শেষ চারে প্রতিপক্ষ ওড়িশা হওয়ায় কি কিছুটা চিন্তিত? হাবাসের হুঙ্কার, ‘‘ওড়িশা ভাল দল। তবে মোহনবাগান আরও ভাল।’’ সপ্তাহখানেক আগে অসুস্থ হয়ে হাবাস যখন হোটেলে বন্দি ছিলেন, শুভাশিস বলেছিলেন, ‘‘হাবাসই আমাদের দলের চালিকাশক্তি।’’
তিনি যে একটুও বাড়িয়ে বলেননি, শনিবার সন্ধেয় আরও একবার তা বোঝা গেল। প্রচণ্ড গরমের জন্য অনুশীলনের সময় আধ ঘণ্টা পিছিয়ে দিয়েছিলেন হাবাস। ঠিক ছিল যুবভারতীর দু’নম্বর অনুশীলন মাঠে প্রস্তুতি নেবেন দিমিত্রি-রা। কিন্ত মাঠকর্মীরা জল বেশি দেওয়ায় সিদ্ধান্ত বদলে ফুটবলারদের নিয়ে এক নম্বর মাঠে চলে যান তিনি।
শেষ চারে গোয়া: চেন্নাইয়িন এফসি ২-১ গোলে হারিয়ে শেষ চারে মুম্বই সিটি এফসি-র সামনে এফসি গোয়া। ৩৬ মিনিটে ১-০ করেন নোয়া ওয়ালি। ৪৫ মিনিটে ২-০ করেন ব্রেন্ডন ফার্নান্দেস। চেন্নাইয়িনের গোলদাতা লাজ়ার চিরকোভিচ।