(বাঁ দিকে) হামাসের হাতে অপহৃত লিরি আলবাগ। লিরির বাবা-মা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েল থেকে ১৮ বছরের সৈনিক লিরি আলবাগকে অপহরণ করেছিল হামাস। তার পর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তরুণীর। বাবা-মা পর্যন্ত ধরে নিয়েছিলেন, মেয়ে আর বেঁচে নেই। দেড় বছর পর একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করল হামাস, যাতে মুক্তির জন্য ইজরায়েল সরকারের পদক্ষেপের আবেদন করেছেন লিরি। ভিডিয়ো দেখে তাঁর বাবা-মা জানিয়েছেন, এই লিরি তাঁদের প্রাণবন্ত, দৃঢ়চেতা মেয়ের ‘ছায়ামাত্র’।
শনিবার হামাসের সশস্ত্র শাখা ‘এজ়েদিন আল-কাসম ব্রিগেডস’ সাড়ে তিন মিনিটের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে (আনন্দবাজার অনলাইন তার সত্যতা যাচাই করেনি)। ওই ভিডিয়োয় ১৯ বছরের লিরি হিব্রু ভাষায় ইজরায়েল সরকারের কাছে তাঁর প্রাণ বাঁচানোর আবেদন করেছেন। তার পরেই ইজরায়েল সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে লিরির পরিবার। তাঁদের কথায়, ‘‘আমরা প্রধানমন্ত্রী, বিশ্বনেতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, আপনাদের নিজের সন্তান সেখানে বন্দি রয়েছেন মনে করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।’’
ভিডিয়োতে মেয়ের বর্তমান অবস্থা দেখে ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা। তাঁরা বলেন, ‘‘লিরি যে বেঁচে রয়েছেন, এটুকু অন্তত জানতে পেরেছি। কিন্তু ওই ভিডিয়োতে ওকে এই অবস্থায় আর দেখতে পারছি না।’’ লিরির মা শিরা আলবাগ জানান, এই তরুণী তাঁদের কাছে অপরিচিত। তাঁর কথায়, ‘‘এটা আমাদের লিরির ছায়ামাত্র। ওঁর মানসিক অবস্থা এখানে স্পষ্ট।’’ একটি সংবাদমাধ্যমকে তাঁরা বলেন, ‘‘ভিডিয়োটি দেখে বোঝা যাচ্ছে যে লিরি ভেঙে পড়েছেন।’’
গাজ়া সীমান্তে ইজরায়েলের নাহাল ওজ় সেনাঘাঁটিতে নিযুক্ত ছিলেন লিরি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় প্রায় ১,২০০ জন ইজরায়েলিকে হত্যার অভিযোগ ওঠে হামাসের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ ইজরায়েল থেকে ২৫১ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ওই সশস্ত্র গোষ্ঠী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ইজ়রায়েলের সাত সীমান্তরক্ষীও। সেই দলেই ছিলেন লিরি। পরে এক জওয়ানকে উদ্ধার করা হয়। এক জওয়ানের হেফাজতে মৃত্যু হয়। লিরি-সহ পাঁচ জনকে এখনও হামাসের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা যায়নি। ইজরায়েলের দাবি, অপহৃত ২৫১ জনের মধ্যে ৯৬ জন গাজ়ায় বন্দি। তাঁদের মধ্যে ৩৪ জনের প্রাণ গিয়েছে। হামাসের ওই হানার পরে গাজ়ায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইজরায়েল। তাতে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন প্রায় ৪৫ হাজার প্যালেস্তিনীয়।