ডার্বি জয়ের পর মোহনবাগানের উল্লাস। ছবি: পিটিআই।
রবিবার কলকাতা ডার্বির প্রথমার্ধে একপেশে দাপট দেখায় মোহনবাগান। তিনটে গোল করে জয় নিশ্চিত করে ফেলে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সেই দাপট ধরে রাখতে পারেনি তারা। ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণে এক সময় ম্যাচ ঘুরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কেন সেই দাপট ধরে রাখা গেল না, তার ব্যাখ্যা দিলেন মোহনবাগানের তিন ফুটবলার। তাঁরা প্রশংসা করেছেন ইস্টবেঙ্গলের খেলাকে। মোহনবাগানের কোচ অবশ্য জানিয়েছেন, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভুগেছে তাঁর দল।
ডার্বিতে একটি গোল ও দু’টি অ্যাসিস্ট করেন অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার দিমিত্রি পেত্রাতোস। ম্যাচের পরে তিনি আইএসএলের ওয়েবসাইটে বলেন, “আমি মাঠে নেমে দল, সতীর্থ এবং সমর্থকদের জন্য সেরাটা দিয়েছি। তিন পয়েন্ট পাওয়াই লক্ষ্য ছিল। দল হিসেবে ভাল খেলেছি, পরিশ্রম করেছি এবং জিতেছি। এটাই সবচেয়ে ইচিবাচক।”
ইস্টবেঙ্গলের ফিরে আসা নিয়ে পেত্রাতোস বলেছেন “দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গল আমাদের ওপর চাপ বাড়িয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধে পুরোটাই ওরা আমাদের চাপে রাখে। কারণ, ওরা তখন সবাই মিলে উঠে খেলছিল। আমাদেরও দুর্ভাগ্য যে দ্বিতীয়ার্ধে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। তবু যে জিতেছি, এটাই আসল।”
একই কথা শোনা গেল অধিনায়ক শুভাশিস বসুর মুখেও। তিনি বলেছেন, “দ্বিতীয়ার্ধে লক্ষ্য ছিল তিন গোলের ব্যবধান ধরে রাখা। ব্যবধান বাড়ানোর পরিকল্পনাও ছিল। দুর্ভাগ্যবশত তা পারিনি। তখন ইস্টবেঙ্গলের হারানোর কিছু ছিল না। তাই রক্ষণে মাত্র একজন রেখে সমানে চার-পাঁচজন খেলোয়াড় আক্রমণে তুলে দেয়। ওই সময়ে রক্ষণ সামলানো ছাড়া আমাদের কোনও উপায় ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধে প্রতি আক্রমণ থেকে আমরাও কয়েকটা সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলি থেকে গোল করতে পারিনি।”
শুভাশিস আরও বলেছেন, “৫-০ বা ৩-১ জয়ের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। আমাদের লক্ষ্য ছিল তিন পয়েন্ট পাওয়া। এটাই মরসুমের শেষ ডার্বি। সেখানে সমর্থকদের জয় উপহার দিতে পেরে আমরা খুবই খুশি। এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
ম্যাচের ১৪ মিনিটে ক্লেটন সিলভার পেনাল্টি বাঁচিয়ে নায়ক হয়ে উঠেছেন সবুজ-মেরুন গোলকিপার বিশাল কাইথ। সেই পেনাল্টি বাঁচানোর প্রসঙ্গে ম্যাচের শেষে বিশাল বলেন, “ক্লেটন তখন পেনাল্টি থেকে গোল করে ফেললে ম্যাচটা আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে উঠত। তাই ওই শটটা বাঁচাতেই হত।” জয় সমর্থকদের উৎসর্গ করে বিশাল আরও বলেন, “এই জয় সমর্থকদের জন্য। ওঁরা আমাদের পাশে সবসময় থাকেন। এ বছর আমাদের লিগ-শিল্ড জেতার সম্ভাবনা আছে। আমরা ভাল ছন্দে আছি। যদি আমরা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারি এবং সেরা ফর্মে থাকতে পারি, তা হলে তো শিল্ড জিতবই।”
বিশালের পারফরম্যান্সের ভূয়সী প্রশংসা করে শুভাশিস বলেন, “বিশালের পেনাল্টি বাঁচানোই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। আমরা যখন ৩-১ এগিয়ে ছিলাম, তখনও ও ক্লেটনের হেডটা দুর্দান্ত সেভ করেছে। ওই সময়ে ইস্টবেঙ্গল গোল পেয়ে গেলে আমাদের ওপর আরও চাপ বাড়ানোর মতো অক্সিজেন পেয়ে যেত ওরা।”