অনুশীলনে জার্মান দল। ছবি: এক্স।
স্কটল্যান্ডকে পাঁচ গোল দিয়ে ইউরো কাপ শুরু করেছিল তারা। হারিয়েছিল হাঙ্গেরিকেও। সুইৎজ়ারল্যান্ডের কাছে এসে থেমে গিয়েছিল জার্মানির জয়রথ। জার্মানি যে অপ্রতিরোধ্য নয়, তা বুঝিয়ে দিয়েছিল সুইসরা। ইউরো কাপের আয়োজক দেশ শনিবার নামছে আরও এক কঠিন যুদ্ধে। শেষ ষোলোয় তাদের সামনে ডেনমার্ক। অন্য ম্যাচে, ইটালি খেলতে নামছে সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচে কোনও দলকেই এগিয়ে রাখছেন না বিশেষজ্ঞেরা।
শেষ ষোলোয় জার্মানি-ডেনমার্কই একমাত্র ম্যাচ, যেখানে দুই অপরাজিত দল একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে। গ্রুপ এ-তে জার্মানি হারিয়েছে স্কটল্যান্ড, হাঙ্গেরিকে। ড্র করেছে সুইৎজ়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, স্লোভেনিয়া, ইংল্যান্ড এবং সার্বিয়া, তিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেই ড্র করেছে ডেনমার্ক।
গত বারের ইউরোয় ইংল্যান্ডের কাছে হেরে শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছিল জার্মানি। ২০১৬-র ইউরোর পর থেকে বড় প্রতিযোগিতার নকআউটে জেতেনি তারা। গত বার ডেনমার্ক উঠেছিল সেমিফাইনাল পর্যন্ত।
গ্রুপের তিনটি ম্যাচ খেললেও এই জার্মানি দলকে নিয়ে সেই উন্মাদনা হচ্ছে না, যা হয়েছিল ২০০৬ বিশ্বকাপে। সমর্থকেরা মাঠে আসছেন, জাতীয় পতাকা নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সবই ঠিক আছে। তবে পাগলামিটা কোথাও যেন এখনও আসেনি। জার্মানির খেলার মধ্যে সেই মাদকতার অভাবকেই দুষছেন অন্ধ সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি, কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেই জার্মানিকে নিয়ে আবেগের তীব্রতা ফিরবে।
জার্মানির সেন্টার ব্যাক জোনাথন তাহ এই ম্যাচে কার্ড সমস্যায় খেলবেন না। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছিলেন আন্তোনিয়ো রুডিগারও। তবে শুক্রবার তিনি অনুশীলনে ফিরেছেন। তাহের জায়গায় খেলতে পারেন নিকো শ্লটারবেক। রুডিগার না খেলতে পারলে দলে আসতে পারেন ওয়াল্ডেমার আন্টন।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ছ’দিন আগে খেলার কারণে জার্মানি ভালই বিশ্রাম পেয়েছে। জার্মান কোচ দলকে এক দিনের ছুটিও দিয়েছিলেন। ডেনমার্ক তুলনায় দু’দিন কম বিশ্রাম নিয়ে নামছে। ২০০৭ সাল থেকে ডেনমার্ক হারাতে পারেনি জার্মানিকে। শেষ চার ম্যাচ ড্র হয়েছে। তবে শনিবারের ম্যাচে ড্রয়ের কোনও অবকাশ নেই। কোনও একটি দল নিশ্চিত ভাবেই বিজয়ীর হাসি হাসবে।
জার্মানির পক্ষে আশার কথা হল, তারা খেলবে ডর্টমুন্ডে। সেখানে আশি হাজার দর্শকের বেশির ভাগই থাকবেন তাদের সমর্থনে। ডর্টমুন্ড ক্লাবে খেলা শ্লটারবেক বলেছেন, “এই স্টেডিয়াম জার্মানির মধ্যে সবচেয়ে বড়। তাই আমাদের কাছে এই মাঠে খেলা বিশেষ অনুভূতির। ধীরে ধীরে গোটা জার্মানিতে আমরা একটা প্রভাব ফেলেছি। শনিবার ভাল খেলতে পারলে সব জার্মান খুশি হবেন। আমাদের প্রতি সমর্থন আরও বাড়বে।”
ডেনমার্কের কোচ কাসপার হুলমান্ড বলেছেন, “নিজে ফুটবল খেলার সময় জার্মানিতে এসে সময়টা উপভোগ করেছি। ডেনমার্কের হয়ে জার্মানিতে এসে খেলেছি। জার্মানিতে এসে জার্মানিকে হারানোর মতো মজা আর কিছুতে নেই। ওরা শক্তিশালী দল। কিন্তু আমরাও পিছিয়ে নেই।”
শুক্রবার ডেনমার্কের তারকা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন অনুশীলন করতে পারেননি পেটের সমস্যায়। তবে ম্যাচের দিন তৈরি থাকবেন বলে কোচের আশা।
এ দিকে, গত বারের ইউরোজয়ী ইটালি এখনও পর্যন্ত মন ভরাতে পারেনি। আলবেনিয়াকে হারালেও স্পেনের দাপুটে ফুটবলের কাছে হার মেনেছে তারা। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও মতে শেষ মুহূর্তে গোল করে প্রি-কোয়ার্টারে উঠলেও এই দলকে নিয়ে খুব বেশি আশা রাখছেন না কেউই।
তবে ইটালির পক্ষে সুবিধা হল পরিসংখ্যান। গত ৩১ বছরে সুইৎজ়ারল্যান্ড হারাতে পারেনি ইটালিকে। ৬১ বারের সাক্ষাতে সুইসরা জিতেছে মাত্র আট বার। বার্লিনের যে স্টেডিয়ামে শনিবার খেলা, সেখানেই ২০০৬ বিশ্বকাপ জিতেছিল ইটালি। সেই স্মৃতিও তাদের মনে রয়েছে।
অপর দিকে, সুইৎজ়ারল্যান্ডের অনেক ফুটবলার ইটালির ঘরোয়া লিগে খেলেন। তাই প্রতিপক্ষের খেলার ধরন ভালই জানেন। শেষ ষোলোর ম্যাচে সেটাকেই কাজে লাগাতে চান কোচ মুরাত ইয়াকিন।