সুনীল ছেত্রী। ছবি: সংগৃহীত।
প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে লড়ে হার। পরের ম্যাচে উজ়বেকিস্তানের কাছে পর্যুদস্ত হওয়া। এশিয়ান কাপে ভারতের সফরটা মোটেই ভাল যাচ্ছে না। মঙ্গলবার তৃতীয় ম্যাচে তারা মুখোমুখি হচ্ছে গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দল সিরিয়া। কিন্তু সেই দেশও র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের উপরে। ফলে হার বাঁচিয়ে সম্মানজনক ভাবে প্রতিযোগিতা শেষ করাই আপাতত লক্ষ্য ভারতের। শেষ ম্যাচে জিতলেও নকআউটে ওঠার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। নির্ভর করতে হবে অনেক যদি-কিন্তুর উপরে। তাই অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী হিসাব না কষে চাইছেন সিরিয়া ম্যাচে জিততে এবং নিজে গোল করতে।
ম্যাচের আগে সুনীল বলেছেন, “আমি বা দল গোল করতে পারছি না এটা একটা বড় সমস্যা ঠিকই। তবে গোল করতে পারব না এমন ভাবি না। উজ়বেকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আমরা অনেক গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম। আগের ম্যাচে রাহুলের হেড, মহেশের বা আমার শটের কথাই ধরুন। একই সুযোগ প্রতিপক্ষরা তৈরি করে সফল হয়েছে। বড় বড় প্রতিযোগিতায় এই ছোট ব্যাপারগুলোই তফাত তৈরি করে দেয়। আশা করি পরের ম্যাচে আর একই ভুল হবে না।”
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের চেয়ে ১১ ধাপ এগিয়ে সিরিয়া। তারাও এই প্রতিযোগিতায় ভারতের মতোই একটিও ম্যাচ জিততে পারেনি এবং গোল দিতে পারেনি। সেই কারণেই তাদের বিরুদ্ধে খেলাটা আগের দুই ম্যাচের তুলনায় সোজা হবে বলে মনে করেন সুনীল। বলেছেন, “প্রায় একই মানের দলের বিরুদ্ধে খেলা তুলনায় সোজা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্বকাপে খেলা বা উজ়বেকিস্তানের মতো বিশ্বকাপের দিকে তাকিয়ে থাকা দলের মোকাবিলা করা মোটেই সহজ নয়। ওদের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলতে অভ্যস্ত নই আমরা।”
আগের দুটো ম্যাচের মতোই শারীরিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা সিরিয়া ম্যাচেও করতে হবে বলে মনে করেন সুনীল। তাঁর কথায়, “প্রথম দুই ম্যাচেই শারীরিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমাদের। যে ভুলগুলো হয়েছে সেগুলো শোধরানোই এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ছোট ভুলের জন্য গোলও খেতে হয়েছে আমাদের। অস্ট্রেলিয়া, উজ়বেকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলে শারীরিক ফুটবল নিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে আমাদের, তা সিরিয়া ম্যাচে কাজে লাগবে।”
এ দিকে, সুনীলের মতো জয়ের স্বপ্ন দেখছেন লালিয়ানজুয়ালা ছাংতেও। সোমবার আইএসএলের ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “প্রথম দুই ম্যাচে যা করতে চেয়েছিলাম পারিনি। শেষ ম্যাচে আমরা কিছু করে দেখাতে চাই। আমাদের সবার ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে। শেষ ম্যাচে কী করতে হবে আমরা জানি। প্রস্তুতি খুব ভাল হচ্ছে। প্রত্যেকেই ১২০ শতাংশ দিতে প্রস্তুত। যে কোনও ফল হতে পারে এই ম্যাচে। আমরা এই ম্যাচে সমর্থকদের খুশি করতে চাই ও নিজেরাও সন্তুষ্ট হয়ে দেশে ফিরতে চাই।”
উজ়বেকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে খেলতে পারেননি ছাংতে। তবে সিরিয়া ম্যাচে খেলার জন্য তিনি তৈরি বলে জানিয়েছেন কোচ ইগর স্তিমাচ। ছাংতে বলেছেন, “গত দুটো ম্যাচে ভাল ফুটবল খেলেছি। তবে যথেষ্ট গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারিনি। কয়েকটা খুব ভাল সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারিনি। পরের ম্যাচে সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিন পয়েন্ট পেতে হবে।”
বাংলার ছেলে প্রীতম কোটাল গত দুটো ম্যাচে খেলেননি। তিনি সাজঘরে সতীর্থদের উৎসাহ জোগানোর কাজটা খুব ভাল মতোই করে চলেছেন। তিনি আইএসএলের ওয়েবসাইটে বলেছেন, “সাজঘরে যে সবাই খুব ভাল মেজাজে রয়েছে তা নয়। তবে সবার মানসিকতাই ইতিবাচক। উজ়বেকিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা যে রকম মনোভাব নিয়ে খেলেছিলাম, সে রকমই মনোভাব নিয়ে সিরিয়া ম্যাচেও খেলতে চাই। আরও ভাল খেলার চেষ্টা করব।”