বিশ্বকাপ জিতলেন মেসিরা। ছবি: রয়টার্স
দুর্দান্ত ম্যাচের অবসান হল টাইব্রেকারে। ৪-২ ব্যবধানে টাইব্রেকারে জিতে বিশ্বকাপ নিয়ে গেল ফ্রান্স। বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেও ট্র্যাজিক হিরো থাকতে হল এমবাপেকে।
আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে। কে জিতবে বিশ্বকাপ?
এর থেকে ভাল বিশ্বকাপ ফাইনাল আর হতে পারে? অতিরিক্ত সময়ে পিছিয়ে গিয়েও সমতা ফেরাল ফ্রান্স। পেনাল্টি থেকে গোল করলেন এমবাপে। বিপক্ষ গোলকিপার এমিলিয়ানোর কিছু করার ছিল না।
এমবাপের শট আটকাতে গিয়ে বক্সের মধ্যেই বল হাতে লাগালেন মন্তিয়েল। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির নির্দেশ দিলেন।
যে ভাবে নির্ধারিত সময়ের শেষ দিকে গোলদু’টি করেছিল ফ্রান্স, তাতে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ালেও শুরুতেই গোল করে ম্যাচ শেষ করে দেওয়া উচিত ছিল তাদের। সেটা না করে অহেতুক অপেক্ষা করার মাসুল হয়তো দিতে হতে পারে তাদের।
দুরন্ত আক্রমণে গোল দিলেন মেসি। লাউতারো মার্তিনেসের শট দারুণ ভাবে বাঁচিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না। ফিরতি বল মেসির হাঁটুতে লেগে গোলে ঢুকে গেল। বিশ্বকাপের ফাইনালে জোড়া গোল হয়ে গেল মেসির। ফ্রান্স অফসাইডের আবেদন করেছিল। কিন্তু ভার-এর চিত্রে দেখা গেল, ফ্রান্সের ডিফেন্ডার কিছুটা ভেতরে ঢুকে ছিলেন।
হঠাৎই জেগে উঠল আর্জেন্টিনা। প্রথমে লাউতারোর শট বাঁচালেন ফরাসি ডিফেন্ডার। পর ক্ষণেই ম্যাক অ্যালিস্টারের শট হেড করে উড়িয়ে দিলেন ভারানে।
গোলের লক্ষ্যে আলভারেসকে তুলে লাউতারোকে নামালেন স্কালোনি। তবে এখনও সে ভাবে গোলের মুখ খুলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। এমবাপের একটি মুভ বাদে ফ্রান্সেরও বলার মতো আক্রমণ হয়নি।
শেষ মুহূর্তে দু’টি গোল পেয়ে যাওয়ায় অনেক বেশি উৎসাহ নিয়ে খেলতে নেমেছে ফ্রান্স। উল্টো দিকে, আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস কিছুটা কম লাগছে। শেষ বেলায় দু’টি গোল খেয়ে যাওয়া অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না।
নির্ধারিত সময়ে আর কোনও গোল হল না। ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। শেষ ১০ মিনিটে একের পর এক আক্রমণ দেখা গেল ফ্রান্সের। আরও একটি গোল করতে পারত তারা।
বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে ফ্রান্সের গোলমুখে ঢুকছিলেন মেসি। বক্সের বাইরে থেকেই বাঁ পায়ে দুরন্ত শট নিয়েছিলেন তিনি। এক হাতে অনবদ্য ভঙ্গিতে সেটি বাঁচিয়ে দিলেন হুগো লরিস। দিনের সেরা সেভ। ম্যাচের প্রথম দিকে যে ঝাঁজ দেখা যাচ্ছিল আর্জেন্টিনার আক্রমণে, সেই ঝাঁজ দেখা গেল ফ্রান্সের খেলায়।
আবার আক্রমণ করেছিল ফ্রান্স। এ বার বাঁ দিক থেকে আক্রমণে ঢুকেছিলেন কিংসলে কোমান। পাস দিয়েছিলেন এমবাপে। সেখান থেকে বল পেয়ে হাঁবিয়ের শট বাঁচিয়ে দিলেন এমিলিয়ানো। শেষ বেলায় এসে অসাধারণ খেলা দেখাচ্ছে ফ্রান্স।
গোটা ম্য়াচে তাঁকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। শেষ বেলায় এসে কি সব হিসাব পাল্টে দেবেন এমবাপে? দ্বিতীয় গোলটি দেখে সেটা মনে হতে বাধ্য। হাঁবিয়ের পাস পেয়ে যে ভাবে শরীর নিয়ন্ত্রণে রেখে বল মাটিতে পড়তে না দিয়ে শট করলেন, তা দেখে বোঝাই গিয়েছে, তিনিই পরবর্তী প্রজন্মের নায়ক হওয়ার অধিকারী। সে তিনি শেষ পর্যন্ত কাপ জিতুন বা না-ই জিতুন।
ফাইনালের শেষ প্রান্তে এসে মাতিয়ে দিলেন এমবাপে। দু’মিনিটে দু’টি গোল করলেন তিনি। প্রথমে ফ্রান্সের আক্রমণের সময় বক্সের মধ্যে হাঁটু দিয়ে কোলো মুয়ানিকে মারেন ওটামেন্ডি। পেনাল্টি থেকে গোল করেন এমবাপের। পরের মুহূর্তেই আবার আক্রমণ করে ফ্রান্স। ডান দিক থেকে এমবাপেকে লম্বা বল বাড়িয়েছিলেন কোমান। হাঁবিয়ের সঙ্গে দ্রুত পাস খেলে মাটিতে পড়ে যেতে যেতে অনবদ্য শটে গোল করলেন।