বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা কোন দেশের বেশি জানিয়ে দিল ফিফা। ছবি: টুইটার।
প্রতি বিশ্বকাপেই বদলে যায় ফুটবল। বিশ্বের সেরা কোচেরা নিয়ে আসেন নতুন নতুন কৌশল, পরিকল্পনা। সেই বদল কতটা ইতিবাচক বিচার করে দেখেন ফিফার বিশেষজ্ঞরা। কাতার বিশ্বকাপও ব্যতিক্রম নয়। কোন দল বিশ্বকাপ জিততে পারে, তা-ও জানিয়ে দিল ফিফা!
ফুটবল খেলার পাশাপাশি বদলে গিয়েছে গোলের ধরনও। গত চার বছরের পরিবর্তনে উচ্ছ্বসিত ফিফার টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য আর্সেন ওয়েঙ্গার, যুরগেন ক্লিন্সম্যানরা। বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, প্রায় প্রতিটি দলই বেশ খানিকটা এগিয়ে এনেছে তাদের ডিফেন্সকে। মাঝমাঠেই প্রতিপক্ষের আক্রমণ নির্বিষ করে দিতে চাইছে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলো।
আরও একটি পর্যবেক্ষণ হল, যে দলের উইং যত শক্তিশালী তারা তত বেশি লাভবান হচ্ছে। তাতেই বদলেছে গোলের ধরনও। উইং, অর্থাৎ মাঠের দু’ধার দিয়ে আক্রমণে উঠে দলগুলি অনেক বেশি গোল করছে। গ্রুপ পর্বের নিরিখে রাশিয়া বিশ্বকাপের থেকে এই গোলের সংখ্যা ৮৩ শতাংশ বেশি। এ বারের বিশ্বকাপে অনেক বেশি আক্রমণ তৈরি হচ্ছে উইং বরাবর। আর্সেনালের প্রাক্তন ম্যানেজার ওয়েঙ্গারের মতে, দলগুলো মাঝমাঠের কাছাকাছি প্রতিপক্ষকে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করায় মাঠের দুই প্রান্তের ব্যবহার বেড়েছে। উইং ব্যবহার করে আক্রমণ তৈরি হচ্ছে অনেক বেশি। ওয়েঙ্গার বলেছেন, ‘‘মাঠের মাঝখানে এ বার ফুটবলারদের জটলা অনেক বেশি। তুলনায় ফাঁকা থাকছে মাঠের দুই ধার। যে দলের উইং বেশি শক্তিশালী, তাদের বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনাও বেশি।’’
তাঁর সঙ্গে সহমত ক্লিন্সম্যানও। জার্মানির প্রাক্তন ফুটবলার তথা কোচ বলেছেন, ‘‘মাঝমাঠ দিয়ে আক্রমণ তৈরি করা এ বার বেশ কঠিন। মাঝমাঠ এবং রক্ষণের খেলোয়াড়রা এ বার একটু কাছাকাছি দাঁড়াচ্ছে। মাঠের মাঝখান থেকে বল নিয়ে এগোনো তাই সম্ভব হচ্ছে না।’’
ফিফার বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, দলগুলির রক্ষণ ভাগের ফুটবলাররা এ বার থাকছেনও পরস্পরের একটু কাছাকাছি। আগের বিশ্বকাপে রক্ষণের ফুটবলাররা যতটা জায়গা নিয়ে খেলতেন, এ বার সেই জায়গাটা তুলনায় গড়ে ৩৩ শতাংশ কম। ফলে, আক্রমণ তৈরির জন্য প্রতিপক্ষকে উইংয়ে যেতে বাধ্য করছে অনেক দল। ক্লিন্সম্যানের পর্যবেক্ষণ, এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার মতো দলগুলো এগিয়ে রয়েছে ইউরোপের দলগুলোর তুলনায়। তিনি বলেছেন, ‘‘দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলাররা এ ভাবে খেলতে অভ্যস্ত। রাস্তায় ফুটবল খেলে বড় হয়। ছোট থেকেই ওরা একের বিরুদ্ধে এক পদ্ধতিতে লড়াই করতে শেখে। সুতরাং অবাক হওয়ার কিছু নেই। ওরা এগিয়ে থাকবে।’’
খেলার গড় সময় এ বার বেড়েছে। কারণ অনেকটা বেড়েছে সংযুক্ত সময়। যা প্রভাব ফেলছে পারফরম্যান্সে। ফিফার বিশেষজ্ঞদের দাবি, যে দলের শারীরিক সক্ষমতা যত বেশি, তারা ম্যাচের শেষ পর্যন্ত তত ভাল লড়াই করতে পারবে। এ বারের বিশ্বকাপ তাই ফুটবলারদের শারীরিক সক্ষমতারও পরীক্ষা নিচ্ছে।