দেশের হয়ে খেলে পাওয়া অর্থ নিজেরা নেন না হ্যারি কেনরা। ছবি: টুইটার।
বিশ্বকাপে বেশ ভাল ছন্দে রয়েছে ইংল্যান্ড। সেনেগালকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে শেষ আটে পৌঁছে গিয়েছেন হ্যারি কেনরা। আগামী ১০ ডিসেম্বর তাঁদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। বিশ্বকাপ জিতলে তাঁরা পাবেন বিপুল আর্থিক পুরস্কার। কারণ দেশের হয়ে খেলার জন্য পারিশ্রমিক নেন না হ্যারি কেনরা।
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হবে কিনা, সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকটা দিন। যদিও ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা এ বার ভাল ফল নিয়ে আশাবাদী। আর তিনটি ম্যাচ জিতলেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবেন হ্যারি কেনরা। বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নপূরণ হলে মিলবে মোটা অঙ্কের আর্থিক পুরস্কার। ফুটবলারদের উৎসাহিত করতে আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করেছেন ইংল্যান্ডের ফুটবল কর্তারা।
পুরস্কার মূল্য বাড়লেও ফুটবলারদের ম্যাচ ফি তেমন বাড়ানো হয়নি। তাই চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলে ইংরেজ ফুটবলাররা আর্থিক ভাবে খুব একটা লাভবান হবেন না। প্রথাগত ভাবে ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের ফুটবলাররা দেশের হয়ে খেলে পারিশ্রমিক হিসাবে পাওয়া অর্থ নিজেরা নেন না। সকলেই পেশাদার ফুটবলার হয়েও সেই অর্থ দান করে দেন সমাজসেবামূলক কাজের জন্য। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন গোলরক্ষক বেন ফস্টার বলেছেন, ‘‘দেশের হয়ে খেলার জন্য টাকা না নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। কেউ অন্য খেলার সঙ্গে যুক্ত খেলোয়াড়দের উদাহরণ দিতে পারেন। কিন্তু ফুটবলের ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা। জাতীয় প্রত্যেক খেলোয়াড় চুক্তি সই করে। দেশের হয়ে খেলে আয় করা অর্থ দান করে দেয় কোনও দাতব্য প্রতিষ্ঠানে।’’
রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রায় দ্বিগুণ আর্থিক পুরস্কার বরাদ্দ করেছেন ইংল্যান্ডের ফুটবল কর্তারা। কেন এ বার বরাদ্দ বাড়ল? ২০২০ সালে ইউরো কাপে রানার্স হয়েছেন হ্যারি কেনরা। আট বছর ইংল্যান্ডের কোচের দায়িত্বে আছেন সাউথগেট। এ বারের ইংল্যান্ড দলকে বলা হচ্ছে গত দু’দশকের সেরা। অভিজ্ঞ এবং তরুণ ফুটবলারের ভারসাম্য রয়েছে দলে। তাই ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা মনে করছেন, এ বার বিশ্বকাপ জেতার সেরা সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি ফুটবলাররা পারিশ্রমিক হিসাবে পাওয়া অর্থ দান করে দেন। তাই হ্যারি কেনদের উৎসাহিত করতে পুরস্কার মূল্য হিসাবে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
ইংল্যান্ডের সংবাদপত্র ডেইলি মেলের দাবি, ফুটবল দলের জন্য ১৩ মিলিয়ন পাউন্ড বা ভারতীয় মুদ্রায় ১৩০ কোটির বেশি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দলের প্রত্যেক সদস্য পাবেন চার লাখ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় ৪ কোটি টাকারও বেশি। এ ছাড়াও বিজ্ঞাপনের লভ্যাংশ বাবদ ইংরেজ ফুটবলাররা ভারতের মুদ্রায় যা ৫০ লাখ টাকার বেশি। অর্থাৎ, বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হলে হ্যারি কেনরা প্রত্যেকে পাবেন প্রায় ৫ কোটি টাকার কাছাকাছি। আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন কোচ গ্যারেথ সাউথগেটও। তিনি প্রায় ছ’মাসের বেতন পাবেন পুরস্কার হিসাবে। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩০ কোটি টাকা।
তাঁদের ধারণা যে অমূলক নয়, তা কাতারে এর মধ্যেই প্রমাণ করছেন ইংরেজ ফুটবলাররা। ইংল্যান্ডের ছন্দোবদ্ধ গতিশীল ফুটবল নজর কাড়ছে ফুটবল বিশেষজ্ঞদেরও।