বিশ্বকাপ ফাইনালের দিন গ্য়ালারিতে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। ছবি: টুইটার।
বিশ্বকাপ দেখতে আসা সমর্থকরা কী করতে পারবেন আর কী করতে পারবেন না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল কাতার প্রশাসন। রক্ষণশীল কাতারের বিভিন্ন কঠোর আইন সম্পর্কে সচেতন করে দেওয়া হয়েছিল। আইন না মানা অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে দোহার পুলিশ। অথচ জামা খুলেও ছাড় পেয়ে গেলেন আর্জেন্টিনার দুই তরুণী।
৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে লুসাইল স্টেডিয়ামে টি-শার্ট খুলে ফেলেছিলেন আর্জেন্টিনার দুই তরুণী। কাতারের আইন অনুযায়ী মহিলারা খোলামেলা এবং শরীর চাপা পোশাক পরতে পারেন না। আইনি ঝুঁকির কথা জেনেও শরীরের উপরের অংশ অনাবৃত করেছিলেন তাঁরা। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল তাঁদের উচ্ছ্বাসের ছবি। পরেও নিজেদের একাধিক খোলামেলা ছবি সমাজমাধ্যমে দিয়েছিলেন তাঁরা। অনেকেই মনে করেছিলেন, আর্জেন্টিনার দুই তরুণী সমস্যায় পড়বেন। কাতারের কড়া আইনের জাল ছিঁড়ে তাঁদের দেশে ফেরা সহজ হবে না। অথচ তাঁরা নির্বিঘ্নেই আর্জেন্টিনা ফিরে গিয়েছেন। দেশে ফেরার সময় বিমানের মধ্যে নিজেদের ছবিও দিয়েছেন তাঁরা। সঙ্গে লিখেছেন, কাতার সফর তাঁরা দারুণ উপভোগ করেছেন।
হয় বিষয়টি কোনও ভাবে কাতার প্রশাসনের নজর এড়িয়ে গিয়েছে অথবা বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাওয়ায় কাতার প্রশাসন আর বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামায়নি। বিশ্বকাপে বিয়ার পেয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন তাঁদের এক জন নোয়ি। টি-শার্ট খুলে সমালোচনার মুখে পড়লেও, অনেকেই তাঁদের পাশে দাড়িয়েছিলেন। সাহসের সঙ্গে স্বপ্নের মুহূর্ত উদ্যাপন করার জন্য প্রশংসা করেছিলেন।
দেশে ফেরার আগে আর্জেন্টিনার জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে একটি ছবি সমাজমাধ্যমে দিয়েছেন নোয়ি। তিনি লিখেছেন, ‘‘এই পতাকাটি আপনাদের সবাইকে উৎসর্গ করছি। আমার পরিবার, বন্ধু, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সব মানুষকে উৎসর্গ করছি। শুভকামনার জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। জানি তাঁরা হৃদয় দিয়ে আমাকে সমর্থন করেছেন। এটাই আমার জীবনের সেরা সফর।’’ আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ফাইনালের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়োও পোস্ট করেছেন তিনি।
আরও একটি পোস্টে নোয়ি লিখেছেন, ‘‘আমি গর্বিত যে বিয়ারের শহর বলে পরিচিত একটি শহরে জন্মগ্রহণ করেছি।’’ বিশ্বজয়ের বিতর্কিত উদ্যাপন নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর যেমন খুশি তেমন ভাবেই উৎসব করা যায়।’’
বিশ্বকাপ শুরুর আগে ফুটবলপ্রেমীদের বার্তা দিয়ে কাতার প্রশাসন বলেছিল, ‘‘আশা করব যাঁরা অন্য দেশ থেকে আসবেন তাঁরা সকলে কাতারের আইন এবং সংস্কৃতিকে সম্মান করবেন।’’