২০২২ সাল মনে রাখতে চান না ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ছবি: টুইটার।
২০২২ সালটা ভুলে যেতে চান ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। কিন্তু পারছেন না। এত খারাপ বছর জীবনে কখনও আসেনি তাঁর। ব্যক্তিগত এবং ফুটবল জীবনে একের পর ঝড় বয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে হতাশ পর্তুগালের ফুটবল অধিনায়ক। পরিস্থিতি কতটা কঠিন ছিল তা জানিয়েছেন রোনাল্ডোর বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজ়।
গত এপ্রিলে সদ্যোজাত পুত্রসন্তানের মৃত্যু তাঁদের জীবন এলোমেলো করে দিয়েছিল। যমজ সন্তান হবে জানার পর থেকে উচ্ছ্বসিত ছিলেন রোনাল্ডো এবং জর্জিনা। কিন্তু জন্মের কয়েক দিন পর মৃত্যু হয় পুত্রসন্তানের। জর্জিনা বলেছেন, ‘‘এত কঠিন বছর কখনও আসেনি আমাদের জীবনে। সন্তানের মৃত্যুর মতো দুঃখজনক কিছু ঘটতে পারে আমরা দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। মা-বাবা হিসাবে চরম কষ্ট পেয়েছি আমরা। সদ্যোজাত মেয়েই আমাদের তখন শক্তি জুগিয়েছে। আশা দেখিয়েছে। আমাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। জীবনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দিয়েছে।’’
একটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে জর্জিনা জানিয়েছেন, ২০২২ তাঁদের জীবনে খুশির থেকেও বেশি কষ্ট এনেছে। তিনি বলেছেন, ‘‘এমন কিছু ঘটনা আমাদের সঙ্গে ঘটেছে, যেগুলো চাইলেও আমরা কখনও ভুলতে পারব না।’’ জর্জিনা জানিয়েছেন, ‘‘সন্তানরাই এখন আমার কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। যাই করি ওদের কথা ভেবে করি। বলতে পারেন এখন আমি সব অর্থেই সম্পূর্ণ মা। কখনও কখনও ওরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। তা-ও আমি ওদের সব কিছুর সঙ্গে থাকতে চাই।’’
শুধু ব্যক্তিগত জীবন নয়, ফুটবল জীবন নিয়েও সমস্যায় রয়েছেন রোনাল্ডো। দ্বিতীয় বার ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে ফেরা সুখকর হয়নি রোনাল্ডোর। কোচ এরিক টেন হ্যাগের সঙ্গে প্রথম থেকেই মতবিরোধ শুরু হয় রোনাল্ডোর। অধিকাংশ ম্যাচেই তাঁকে প্রথম একাদশে রাখতেন না কোচ। বিশ্বকাপের আগে এক সাক্ষাৎকারে রোনাল্ডো বলেছিলেন, ক্লাবের কোচকে তিনি পছন্দ করেন না। তার পরই তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে দিয়েছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটি। বিশ্বকাপের সময়ও পর্তুগাল কোচের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান রোনাল্ডো। সুইৎজ়ারল্যান্ড এবং মরক্কোর বিরুদ্ধে অধিনায়ককে শুরু থেকে নামাননি কোচ। এখনও কোনও ক্লাব পাননি রোনাল্ডো এই প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন জর্জিনা।
সরাসরি উত্তর দেননি জর্জিনা। রোনাল্ডোর বান্ধবী বলেছেন, ‘‘বাস্তব পরিস্থিতি সব সময় অনুকূলে থাকে না। জানি সবার জীবন এক রকম হয় না। আবার কখনও কখনও মিল পাওয়া যায়। জানি একাকিত্ব বা দুঃখের অনুভূতি কেমন। কোনটা জয় আর কোনটা পরাজয় সেটা বুঝি। কিছু হারানোর যন্ত্রণা বুঝি। জানি আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হতে পারে আমার দাবি কিছু বেশি। আমি একটু বেশি কঠোর। তবে জীবন আমাকে শিখিয়েছে, কী ভাবে নিজেকে ক্ষমা করতে হয়।’’