বিশ্বকাপে মেসির শুরু থেকে শেষ রইলেন স্কালোনি। ছবি: রয়টার্স
লিয়োনেল মেসির প্রথম বিশ্বকাপে সতীর্থ ছিলেন লিয়োনেল স্কালোনি। ২০০৬ সালের পর এ বারও মেসির পাশে তিনি। এ বার কোচ হিসাবে। বিশ্বকাপে মেসির শেষ ম্যাচেও থাকলেন স্কালোনি। জিতলেন কাপ। বিশ্বকাপে মেসির শুরু থেকে শেষ রইলেন স্কালোনি।
ফুটবল জীবনে রাইট ব্যাক বা রাইট মিডফিল্ডার হিসাবে খেলতেন স্কালোনি। জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন স্পেনের দেপোর্তিভো লা করুনা ক্লাবের হয়ে খেলে। নিজে খেলার সময় দেপোর্তিভো লা করুনা ছাড়াও লাজিও এবং আটলান্টার হয়েও খেলেছেন স্কালোনি। তিনটি ক্লাবের হয়ে লা লিগায় ১২ মরসুমে মোট ২৫৮টি ম্যাচ তিনি খেলেছেন। গোল করেছেন ১৫টি। খেলোয়াড় হিসাবে ২০০৬-এর বিশ্বকাপ দলেরও অংশ ছিলেন তিনি। ফুটবলার হিসাবে স্কালোনিকে সফল বলা চলে কি না, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে কোচ হিসাবে যে তিনি সফল, তা মেনে নিয়েছেন ফুটবল বিশারদরা।
২০১৬-এর ১১ অক্টোবর সেভিয়া এফসি-তে কোচ হোর্হে সাম্পাওলির দলের সহকারী হয়ে যোগ দেন স্কালোনি। ২০১৭-র জুনে সাম্পাওলি আর্জেন্টিনার কোচ নিযুক্ত হলে স্কালোনিকে আবার তাঁর সহকারী হিসাবে নিয়োগ করা হয়। কোনও ক্লাবে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা না থাকা স্কালোনিকে দায়িত্ব দেওয়ার সময় অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। স্কালোনির ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। কিন্তু সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন স্কালোনি। গত বছর কোপা আমেরিকা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। রবিবার জিতলেন বিশ্বকাপ।
রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ব্যর্থতার পর স্কালোনি এবং পাবলো আইমারকে বছরের শেষ পর্যন্ত সাময়িক কোচের জায়গা দেওয়া হয়। স্কালোনির প্রশিক্ষণে ২০২১-এ ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকা জেতে আর্জেন্টিনা। ২৮ বছর পরে সেই বছরই প্রথম আর্জেন্টিনা এই ট্রফি জিতেছিল। সমালোচনায় তিনি কান দেন না বলে জানিয়েছিলেন স্কালোনি। বলেছিলেন, ‘‘যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন সমালোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আর্জেন্টিনার কোচ হিসাবে তখন দল ছাড়া আমার মাথায় কিছু ছিল না। আমি আমার কাজ করেছি। নিজেক সেরাটা দিয়েছি। কোনও সমালোচনায় আমার কিছু যায় আসে না।’’ স্কালোনির উপর ভরসা রাখে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপে তাঁর প্রশিক্ষণেই নামে তারা।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হারের পর থেকে ছন্দে ফেরে আর্জেন্টিনা। ফাইনালেও সেই ছন্দ ধরে রাখলেন মেসিরা। স্কালোনির আশা ছিল, বিশ্বকাপ জিতেই মাঠ ছাড়বেন মেসিরা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আশা করছি ওরা ওদের প্রাপ্য আনন্দ পাবে। ফুটবলাররা নিজেদের সবটা দিয়েছে। আশা করছি, বিশ্বকাপ জিতেই মাঠ ছাড়ব। সবাইকে গর্বিত করতে চাই।’’ সেটাই হল। মেসি জিতলেন। জেতালেন স্কালোনি।