এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
‘ডিউটি’ থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন সন্ধ্যায়। কিন্তু হাওড়ার শিবপুর এলাকার একটি বহুতলের বাসিন্দা পুলিশকর্মী মূল দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বার বার বার বার ‘কলিং বেল’ টিপলেও কেউ দরজা খোলেননি। শেষমেশ পুলিশ ডেকে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করলেন তিনি। ঘরে দুই নাবালক সন্তান পড়ে ছিল অচৈতন্য অবস্থায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাদের মধ্যে এক জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। শুক্রবার এই ঘটনায় শোরগোল শিবপুর থানার বেতাইতলা এলাকায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতার নাম রুবি ঝাঁ। তিনি হাওড়া সিটি পুলিশে কর্মরত পুলিশকর্মী প্রদীপ ঝাঁয়ের স্ত্রী। ২৭ বছরের ওই যুবতীর দেহ ফ্ল্যাটের একটি ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। চিরাগ ঝাঁ এবং বঙ্কু ঝাঁ নামে দুই সন্তান অচৈতন্য হয়ে পড়েছিল অন্য একটি ঘরে। তাদের মধ্যে ১১ বছরের চিরাগকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। চার বছরের বঙ্কুর চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
মৃতার স্বামী প্রদীপ পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। কিন্তু বার বার ‘কলিং বেল’ টিপলেও স্ত্রী বা ছেলে, কেউই দরজা খোলেননি। তাঁদের নাম ধরে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কারও সাড়া মেলেনি। অনেক ক্ষণ এ ভাবে কাটার পর দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি। উপায়ান্তর না দেখে প্রতিবেশীদের ডাকেন। কিন্তু সবাই মিলে অনেক চেষ্টা করেও দরজা খুলতে না পেরে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে বাড়ির মূল দরজা ভাঙে।
ঘরে ঢুকেই চমকে যান পুলিশকর্মী প্রদীপ। তিনি দেখেন, সিলিং ফ্যানে দড়ি বেঁধে তাতে ফাঁস নিয়ে ঝুলছেন স্ত্রী। পাশের ঘরের বিছানায় দুই সন্তান অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তড়িঘড়ি তিন জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রদীপের স্ত্রী এবং বড় ছেলেকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে, দুই সন্তানকে হত্যার চেষ্টা করে আত্মহত্যা করেছেন পুলিশকর্মীর স্ত্রী। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা। হাওড়া সিটি পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘মহিলা ও তাঁর বড় ছেলে মারা গিয়েছেন। ছোট ছেলের চিকিৎসা চলছে। মৃতার স্বামী প্রদীপ ঝাঁ একজন পুলিশকর্মী। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, তা এখনও জানা যায়নি। তদন্ত চলছে।’’