ক্লেটন সিলভা। — ফাইল চিত্র।
অতীতে লাল-হলুদ সমর্থকেরা গর্ব করে বলতেন, পিছিয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গল সব সময় ভয়ঙ্কর। যুগ বদলেছে। পরিস্থিতিও বদলেছে। এখন ইস্টবেঙ্গল এগিয়েই থাকুক বা পিছিয়েই থাকুক, হারই যেন ভবিতব্য কার্লেস কুয়াদ্রাতের দলের কাছে। শনিবার যুবভারতীতে কেরল ব্লাস্টার্সের কাছে ১-২ গোলে পরাজিত হয়ে আইএসএলে হারের হ্যাটট্রিক ইস্টবেঙ্গলের। গোল করেও খলনায়ক ক্লেটন সিলভা। তিনি ম্যাচের একদম শেষ দিকে পেনাল্টি থেকে একটি গোল শোধ করলেও, তার ঠিক আগেই একটি পেনাল্টি নষ্ট করেন। তার পরেই ইস্টবেঙ্গল দ্বিতীয় গোল খায় এবং ম্যাচ হাতের বাইরে চলে যায়। যদিও দু’টি গোলের ক্ষেত্রেই রক্ষণের ভুলের কথা অস্বীকার করা যাবে না।
খেলার শুরুতে দুই দলই সুযোগ পেয়েছিল। প্রথমে কেরলের দানিশ ফারুকের বাঁ পায়ের শট প্রতিহত হয়। এর পর বক্সে নাওরেম মহেশের শটও আটকে দেন কেরলের ডিফেন্ডারেরা। পাঁচ মিনিটের মাথায় কেরলের কোয়ামে পেপরাহর শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর পর দুই দলই আক্রমণ করতে থাকে। কেউই কাউকে জায়গা ছাড়ছিল না। ফলে শরীরী ফুটবল দেখা যায় যুবভারতীতে। প্রচুর ফাউল হয় এই সময়ে।
৩২ মিনিটে রক্ষণের ভুলে গোয় খেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। মাঝমাঠ থেকে একটু এগিয়ে ডান দিকে বল পেয়েছিলেন আদ্রিয়ান লুনা। ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে তিনি পাস দেন বাঁ প্রান্ত ধরে দৌড়তে থাকা দাইসুকে সাকাইকে। সাকাই বল ধরে নিখুঁত শটে জালে জড়ান। ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারেরা জায়গাতেই ছিলেন না। ফলে সাকাইয়ের দৌড় আটকাতেই পারেননি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে হরমনজ্যোত খাবরা একটি ভাল সুযোগ পেলেও নষ্ট করেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সাউল ক্রেসপোকে তুলে হিজাজি মাহেরকে নামান কুয়াদ্রাত। আইএসএলে অভিষেক হল হিজাজির। গোল শোধ করার মরিয়া চেষ্টায় শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তায় হাঁটে ইস্টবেঙ্গল। দু’বার মহেশ গোল করার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি।
ম্যাচের ঠিক পাঁচ মিনিট আগে পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। বক্সের মধ্যে মহেশকে ফেলে দিয়েছিলেন কেরলের গোলকিপার সচিন সুরেশ। কিন্তু পেনাল্টি থেকে ক্লেটনের প্রথম প্রচেষ্টা আটকে দেন। ক্লেটনের বল সরাসরি জমা পড়ে সুরেশের হাতে। তবে লাইন্সম্যান পতাকা নেড়ে সেই পেনাল্টি খারিজ করে দেন। ক্লেটন শট নেওয়ার আগেই সুরেশ লাইন ছেড়ে এগিয়ে এসেছিলেন। ফিরতি শটও আটকে নায়ক হয়ে যান সুরেশ।
গোল বাঁচিয়ে উজ্জীবিত হয়ে যায় কেরল। তেড়েফুড়ে খেলতে থাকে তারা। তার মাশুল চোকাতে হয় ইস্টবেঙ্গলকে। রক্ষণে একটি নির্বিষ বল ভেসে এসেছিল যা অনায়াসে ক্লিয়ার করা যেত। কিন্তু বক্সের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের এক ডিফেন্ডারের মাথায় লেগে বল যায় অরক্ষিত অবস্থায় থাকা দিমিত্রিয়োস দিয়ামান্তাকোসের কাছে। তিনি চলতি বলে শট নিয়ে গোল করেন। জার্সি খুলে ফেলার অপরাধে হলুদ কার্ড দেখেন। আগেই একটি হলুদ কার্ড দেখায় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়।
নাটকের তখনও বাকি ছিল। সাত মিনিট অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে একটি বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে হাতে লাগান কেরলের সন্দীপ। এ বারও পেনাল্টি নিতে এগিয়ে যান সেই ক্লেটন। কিন্তু দ্বিতীয় বার আর একই ভুল করেননি। সপাটে শটে বল জালে জড়ান। তার পরেই শেষ বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি।