পঞ্জাবের কাছে বার বার এ ভাবেই আটকে গেল ইস্টবেঙ্গল। শনিবার যুবভারতীতে। ছবি: আইএসএল
আগের ম্যাচে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে পাঁচ গোল দেওয়ার পরের ম্যাচেই আটকে গেল ইস্টবেঙ্গল। শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে পঞ্জাব এফসি-র সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করল তারা। গোটা ম্যাচে একাধিক সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ লাল-হলুদ ফুটবলারেরা। প্রচুর মিস্ পাসও দেখা গেল। আগের ম্যাচের ছন্দ একেবারেই খুঁজে পাওয়া যায়নি এ দিন। উল্টে জুয়ান মেরার শট বারে না লাগলে হেরেও যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। তবে ড্র করলেও ছয়ে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল। ৮ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৯। নর্থইস্ট এবং চেন্নাইয়িনেরও একই পয়েন্ট থাকলেও গোলপার্থক্যে তারা ইস্টবেঙ্গলের নীচে।
আজ পর্যন্ত আইএসএলে কখনও টানা দুটো ম্যাচে জেতেনি ইস্টবেঙ্গল। শনিবারও সেটা হল না। জেতার পরের ম্যাচেই আটকে গেল ইস্টবেঙ্গল। নিজেদেরই দোষ দেওয়া উচিত তাদের। ধারাবাহিকতা না দেখাতে পারার কারণেই ডুবল লাল-হলুদ। লিগে একটিও ম্যাচ না জেতা পঞ্জাবের বিরুদ্ধে যা যা সুযোগ পেয়েছিল তারা, তা কাজে লাগাতে পারলে তিন পয়েন্ট নিয়েই ফিরতে পারত।
শুরু থেকে আক্রমণ করতে থাকে ইস্টবেঙ্গলই। পঞ্জাবকে খেলার কোনও সুযোগই দিচ্ছিল না তারা। সাত মিনিটের মাথা বাঁ দিক থেকে আক্রমণ করেন মন্দার রাও দেসাই। ক্লেটন সিলভার উদ্দেশে বল বাড়ান। কিন্তু পঞ্জাবের এক ডিফেন্ডার তা আটকে দেন। দু’মিনিট পরেই ক্লেটন এবং নাওরেম মহেশ বক্সের মধ্যে পাস খেলে গোলমুখ খোলার চেষ্টা করেন। সেটাও ব্যর্থ হয়।
মাঝমাঠে ক্রমশ জুটি গড়ে উঠতে থাকে নিশু, মহেশ এবং ক্লেটনের। কিন্তু কোনও প্রয়াসই কাজে লাগছিল না। ১৬ মিনিটের মাথায় ক্লেটনকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেওয়া হলেও রেফারি পেনাল্টি দেননি। এর পরেই প্রতি আক্রমণে ওঠে পঞ্জাব। কৃষ্ণ আনন্দের ক্রস কর্নার হয়ে যায়। পঞ্জাবের বেশির ভাগ আক্রমণের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার জুয়ান মেরা। তাঁর সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছিলেন লুকা মাজসেনও।
৩৬ মিনিটে জুয়ানের শট ক্রসবারে লাগে। মাঝমাঠ থেকে একটা বল পেয়ে বাঁ দিকে কাট ভেতরে ঢুকে আসেন। তার পরেই বাঁ পায়ে নিখুঁত শট রাখেন। বল ক্রসবারে লেগে ভেতরে আসে। প্রভসুখন গিল সহজেই ধরে নেন। গোলে থাকলে তখনই পিছিয়ে পড়তে পারত ইস্টবেঙ্গল। এর পরে ডাইভ মারার কারণে বোরহো হেরেরাকে হলুদ কার্ড দেখতে হয়। প্রথমার্ধে আর কোনও দলই গোলের সুযোগ পায়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল ইস্টবেঙ্গলের কাছে। ক্লেটনের একটি হেড বারের উপর দিয়ে উড়ে যায়। তার পরে পঞ্জাবের আক্রমণে কিছুটা দিশেহারা হয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। অভিষেক এবং নিখিল প্রভুর শট বাঁচিয়ে দেন প্রভসুখন। ৫৯ মিনিটে ভাল সুযোগ পেয়েছিল পঞ্জাব। জুয়ানের পাস পেয়েছিলেন কৃষ্ণ। কিন্তু সরাসরি ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপারের হাতে বল যায়।
আক্রমণে ঝাঁজ বাড়ানোর লক্ষ্যে সাউল ক্রেসপোকে তুলে জেভিয়ার সিভেরিয়োকে নামান ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। কিন্তু তিনি নামার পরেই আরও একটি বড় সুযোগ মিস্ করে পঞ্জাব। তালালের থেকে পাস পেয়ে ড্যানিয়েল শট নিয়েছিলেন। কিন্তু গোলে রাখতে পারেননি। পরের মিনিটে বিষ্ণুও একটি সুযোগ মিস্ করেন। বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে একাই এগিয়ে গিয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে তাঁর শট গোলের অনেক দূর দিয়ে যায়।
শেষ মুহূর্তে একের পর এক আক্রমণ করে ইস্টবেঙ্গল। ক্লেটনের পর পর দু’টি শট বাঁচিয়ে দেন পঞ্জাবের ডিফেন্ডার সতীশ। নাওরেমের প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়।