ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে সুনীল ছেত্রী ফাইল চিত্র
সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে (এআইএফএফ) নির্বাসিত করেছে ফিফা। ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার এই সিদ্ধান্তে যারপরনাই হতবাক সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসক কমিটি (সিওএ)। তাদের দাবি, ফিফা এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো সব কিছু ঠিক পথে এগোচ্ছিল। তার মধ্যে হঠাৎ কেন এআইএফএফকে নির্বাসিত করল ফিফা! বুঝতে পারছে না সিওএ।
এক বিবৃতিতে সিওএর দাবি, গত কয়েক দিন ধরে ফিফা, এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন্স (এএফসি), এআইএফএফ, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছে তারা। গত ৩ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট এআইএফএফের নির্বাচন সংক্রান্ত যে নির্দেশ দিয়েছিল সেটা যাতে মানা হয় তা নিশ্চিত করা হচ্ছিল। কমিটি পরামর্শ দিয়েছিল, ৩৬টি রাজ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে।
সিওএ আরও জানিয়েছে, সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার নতুন কমিটি কেমন হবে সেই বিষয়েও পরামর্শ দিয়েছিল তারা। বলা হয়েছিল, এআইএফএফের কার্যকরী কমিটিতে মোট ২৩ জন সদস্য থাকবে। তার মধ্যে ছ’জন (চার জন পুরুষ ও দু’জন মহিলা) ফুটবলার থাকবেন। বাকি ১৭ সদস্যের মধ্যে সভাপতি, সচিব, কোষাধ্যক্ষ, সহ-সভাপতি ও যুগ্মসচিব থাকবেন। এটিও ফিফার নির্দেশ মতোই হয়েছিল বলে জানিয়েছে সিওএ। নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি নিরপেক্ষ ও যোগ্য কমিটিও তৈরি করে ফেলেছিল তারা।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সকালে ফিফার সিদ্ধান্তে হতবাক সিওএ। তারা জানিয়েছে, সমস্যা সমাধানের সব রকম চেষ্টা চলছিল। ফিফাও সব জানত। তা হলে কেন এ রকম সিদ্ধান্ত নিল তারা! সিওএর দাবি, ফিফা জানিয়েছে, ১৪ অগস্ট থেকে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে নির্বাসিত করা হয়েছে। অথচ ১৫ অগস্টও ফিফার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তাদের।
কমিটির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অনিল দাভে বলেছেন, ‘‘যখন ভারতীয় ফুটবলকে সঠিক রাস্তায় ফেরানোর চেষ্টা চলছে, তখন এই ধরনের সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক। প্রায় দু’বছর ধরে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও বেআইনি ভাবে একটা সংস্থা চলেছে। তখন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। কিন্তু যখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিওএ সমস্যা সমাধানের সব রকমের চেষ্টা করছে তখনই ফিফা ভারতীয় ফুটবলকে নির্বাসিত করে দিল। এটাই অবাক করছে।’’
একই কথা বলেছেন প্রশাসক কমিটির আর এক সদস্য এসওয়াই কুরেশি। তিনি বলেছেন, ‘‘নির্বাচনের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিলাম আমরা। তখনই অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিল ফিফা। আশা করছি তাড়াতাড়ি এই সমস্যা মিটে যাবে।’’ কমিটির তৃতীয় সদস্য প্রাক্তন ফুটবলার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ও ফিফার সিদ্ধান্তে হতবাক। তিনি বলেছেন, ‘‘জাতীয় ক্রীড়া বিধি মেনে যখন ফুটবলারদের প্রাপ্য গুরুত্ব দেওয়ার কাজ সিওএ করছিল তখনই নির্বাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে জাতীয় ক্রীড়া বিধি অনুযায়ী এআইএফএফের সংবিধান তৈরি করার কাজ করছিল কমিটি। ফিফার এই সিদ্ধান্ত খুব দুঃখজনক।’’