ম্যাচ জিতে উল্লাস আরসিবির ক্রিকেটারদের। ছবি: পিটিআই।
শেষ বল পর্যন্ত গড়াল খেলা। পেন্ডুলামের মতো দুলল সর্ব ক্ষণ। এক বার মনে হল আরসিবি জিতবে। তো পর ক্ষণেই এগিয়ে গেল ইউপি ওয়ারিয়র্স। শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করল আরসিবি। ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচ জিতে মহিলাদের আইপিএল শুরু হল স্মৃতি মন্ধানাদের। দলের দুই নায়ক রিচা ঘোষ ও সোভানা আশা। ব্যাট হাতে অর্ধশতরান করলেন বাংলার রিচা। বল হাতে ৫ উইকেট নিলেন আশা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভাল হয়নি আরসিবির। দুই ওপেনার সোফি ডিভাইন ও স্মৃতি মন্ধানা রান পাননি। মহিলাদের আইপিএলে এখনও বিধ্বংসী ব্যাটিং করতে দেখা গেল না স্মৃতিকে। মাত্র ৮ রান করে আউট হয়ে যান এলিস পেরিও। ৫৪ রানে দলের ৩ উইকেট পড়ে যায়। মনে হচ্ছিল, গত বারের মতো এ বারও প্রথম ম্যাচে মুখ থুবড়ে পড়বে আরসিবি।
ঘরের মাঠে দলকে টেনে তুললেন দুই ভারতীয়। সাব্বিনানি মেঘানার সঙ্গে জুটি বাঁধলেন রিচা। মেঘানা কিছুটা ধীরে খেললেও প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন রিচা। একের পর এক বাউন্ডারি আসছিল তাঁর ব্যাট থেকে। প্রথমে অর্ধশতরান করেন মেঘানা। তার পরেই ৫৩ রানের মাথায় আউট হন তিনি।
মেঘানা আউট হওয়ার পরে আরসিবির ইনিংস টানেন রিচা। কেন কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে তাঁকে এতটা গুরুত্ব দেওয়া হয় তা আরও এক বার দেখালেন তিনি। মাত্র ৩২ বলে অর্ধশতরান করলেন। ৩৭ বলে ৬২ রান করে দীপ্তি শর্মার বলে বোল্ড হন রিচা। মারেন ১২টি চার। তাঁর ব্যাটে ভর করে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে আরসিবি।
১৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা খায় ইউপি। দ্বিতীয় ওভারেই দলের অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি আউট হন। অপর ওপেনার বৃন্দা দীনেশ মন্থর খেলছিলেন। বাধ্য হয়ে বড় শট খেলার দায়িত্ব নিতে হয় তাহিলা ম্যাকগ্রাকে। ধীরে ধীরে রান তুলছিলেন তাঁরা। নবম ওভারে খেলার ছবিটা বদলে যায়। একই ওভারে দুই ব্যাটারকে আউট করেন স্পিনার সোভানা আশা। বিশেষ করে ম্যাকগ্রা আউট হওয়ায় চাপে পড়ে ইউপি।
চার নম্বরে নেমে অবশ্য শুরু থেকেই বড় শট খেলা শুরু করেন গ্রেস হ্যারিস। আগের বার মহিলাদের আইপিএলে তাঁর স্ট্রাইক রেট সব থেকে বেশি ছিল। সেই কাজ এই ম্যাচেও শুরু করেন তিনি। তাঁকে সঙ্গ দেন শ্বেতা সেহরাওয়াত। দু’জনে মিলে দ্রুত রান তুলতে থাকেন। একটা সময় মনে হচ্ছিল, সহজেই ম্যাচ বার করে দেবেন তাঁরা। তখনই ইউপিকে আবার ধাক্কা দেন আশা। ৩১ রানের মাথায় শ্বেতাকে আউট করেন তিনি। দু’বল পরে ৩৮ রানের মাথায় হ্যারিসকে বোল্ড করেন তিনি। শেষ বলে ফেরান কিরন নবগিরেকে। ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন আশা। স্পিনারের দাপটে আবার ম্যাচে ফেরে আরসিবি।
৬ উইকেট পড়ার পরে খেলতে নামেন দীপ্তি। কিন্তু তিনি রান করার আগেই ইউপির হয়ে বড় শট খেলতে শুরু করেন পুনম খেমনার। প্রথম দিন শেষ বলে ছক্কা মেরে মুম্বইকে জিতিয়েছিলেন সঞ্জীবন সজনা। ইউপির হয়ে সেই কাজ করলেন খেমনার। আরও এক অনামী ক্রিকেটার বুঝিয়ে দিলেন ভারতের মহিলা ক্রিকেটেও প্রতিভার অভাব নেই। ১৮তম ওভারে শ্রেয়াঙ্কা পাতিলের ওভারে আসে ১৪ রান। সেখানে খেলা আরও এক বার ইউপির দিকে ঘুরে যায়।
১২ বলে ইউপির জিততে দরকার ছিল ১৬ রান। খেমনার বড় শট খেলার চেষ্টা করতে থাকেন। ৭ বলে ১৪ রান করে আউট হন তিনি। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১১ রান। সেই ওভারে মাত্র ৮ রান দিলেন সোফি মলিনিউ। অনেক চেষ্টা করেও দলকে জেতাতে পারলেন না দীপ্তি। ২ রানে ম্যাচ হারল ইউপি।