প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩৭টি ম্যাচে ১৩টি শতরান হয়ে গিয়েছে সরফরাজের। —ফাইল চিত্র
ম্যাচের পর ম্যাচ রান করেও কখনও ভারতীয় দলের দরজা খোলেনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩০টি শতরান-সহ ১১,১৬৭ রান করেও কখনও দেশের জার্সি পরতে পারেননি তিনি। হয়তো এক যুগ আগে অমল মজুমদারও ভাবতেন, আর কী করতে হবে ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য? এখন যে ভাবনা বার বার ফিরে আসে সরফরাজ খানের মনে। ম্যাচের পর ম্যাচ শতরান করেও সুযোগ হয় না জাতীয় দলে। মঙ্গলবার দিল্লির বিরুদ্ধে রঞ্জিতে শতরানের পর মাঠে যখন হুঙ্কার দিচ্ছেন সরফরাজ, তখন মুম্বই দলের কোচ অমলকে দেখা গেল টুপি খুলে কুর্নিশ জানাতে। তিনি তো জানেন সরফরাজের আক্ষেপের কথা।
এক সময় মুম্বইয়ের হয়ে খেলা অমল, এখন সেই দলের কোচ। সরফরাজ বলেন, “অমল স্যর আমাকে বার বার বলে যে, আমার কাজ রান করে যাওয়া। তুমি এমন ক্রিকেটার যে, দলের শুরুতে উইকেট পড়ে গেলেও লড়াইটা বিপক্ষের শিবিরে পৌঁছে দিতে পারে।” প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩৭টি ম্যাচে ১৩টি শতরান হয়ে গিয়েছে সরফরাজের। তিনি বলেন, “আমাকে দলের সকলে খুব ভালবাসে। আমার উপর ভরসা করে। সেটা আমি ভাঙতে চাই না। আমি যত ক্ষণ ব্যাট করি, দল খুব শান্ত থাকে। আমার ভাল লাগে যে, মাঠে আমি ব্যাট করা উপভোগ করি আর বাকিরা সাজঘরে বসে আমার খেলা।”
দলের সকলে সরফরাজের খেলা যে উপভোগ করছিল সেটা দেখা যাচ্ছিল মঙ্গলবার। সরফরাজের মারা একের পর এক ভাল শটের পর মুম্বই দলের হাততালি এবং শতরানের পর উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানানো বলে দিচ্ছিল সেটা। কিন্তু ভারতীয় দলের নির্বাচকরা কি সরফরাজের এই ইনিংস দেখতে পান? একের পর এক সিরিজ়ের দল ঘোষণা হয় আর দেখা যায় সরফরাজ ব্রাত্য। বিরক্ত ব্যাটার বলেন, “গত রঞ্জির ফাইনালে শতরানের পরে নির্বাচকদের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। ওঁরা বলেছিলেন, বাংলাদেশ সফরে সুযোগ পাব। তৈরি থাকতে বলেছিলেন। কিন্তু পাইনি।’’ নির্বাচক প্রধান চেতন শর্মার কথাও টেনে এনেছেন সরফরাজ়। বলেছেন, ‘‘কয়েক দিন আগেই চেতন স্যরের সঙ্গে দেখা হল। উনি বললেন, আমি খুব তাড়াতাড়ি সুযোগ পাব। নির্বাচকদের কথায় বার বার আশা জাগছে। কিন্তু বার বার হতাশ হচ্ছি। এ ভাবে আগে থেকে আশা জাগানো ঠিক নয়।’’
জাতীয় দলে ডাক না পেয়ে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছিলেন সরফরাজ। তথ্য বলছে ৫৩টি প্রথম শ্রেণির ইনিংসের পর রানের গড়ে ডন ব্র্যাডম্যানের পরেই রয়েছেন মুম্বই ব্যাটার। সরফরাজ বলেন, “স্যর ডন ব্র্যাডম্যান সেরা। সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ভাল লাগে এটা ভেবে যে আমি তাঁর রেকর্ডের সব থেকে কাছে রয়েছি। যদিও সব সময় এটা থাকবে না। সময়ের সঙ্গে পাল্টাবে।” কিন্তু সরফরাজের ক্রিকেট কেরিয়ার কি পাল্টাবে? জাতীয় দলে সুযোগ কি পাবেন তিনি? না কি আরও এক জন অমল মজুমদার হয়েই থেকে যাবেন সরফরাজ খান?