চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। পাকিস্তানেই কি শেষ পর্যন্ত হবে এই প্রতিযোগিতা? —ফাইল চিত্র।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কি শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানেই হবে? না কি ভারতের আপত্তিতে সেখান থেকে প্রতিযোগিতা সরে যাবে? এই ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি আইসিসি। তার মাঝেই আরও এক পদক্ষেপ করল পাক ক্রিকেট বোর্ড। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার উপর চাপ বাড়াচ্ছে তারা।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সিইও সুমের আহমেদ সৈয়দকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ডিরেক্টর ঘোষণা করেছে বোর্ড। তারা বুঝিয়ে দিচ্ছে, এ বার আর দেশের বাইরে প্রতিযোগিতা যেতে দেবে না। সুমেরকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করতে গিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভি বলেন, “এত বড় প্রতিযোগিতার দায়িত্ব সামলানোর জন্য সুমের আদর্শ। আমরা গোটা বিশ্বকে দেখাতে চাই যে, সফল ভাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে পারি। ক্রিকেটার ও দর্শকদের সব রকম সুযোগ-সুবিধার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিযোগিতা পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে একটা বড় পালক হয়ে থাকবে।”
ভারতীয় বোর্ড চাইছে, এশিয়া কাপের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও অন্য দেশে ম্যাচ খেলতে। অর্থাৎ ‘হাইব্রিড মডেল’-এ খেলতে। তবে পাকিস্তান বোর্ড চায় সব ম্যাচ সে দেশেই হোক। পিসিবি প্রধান নকভি বলেন, “যদি পাকিস্তানে দল পাঠানো নিয়ে ভারতের কোনও সমস্যা থাকে তা হলে আমাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলুক। আমরা সেই সমস্যা মিটিয়ে দেব। পাকিস্তানে আসতে ভারতের কোনও সমস্যা থাকার কথা নয়।”
নকভি জানিয়েছেন, ভারতের না আসার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা চেয়ে আইসিসি-কে চিঠি পাঠিয়েছে পিসিবি। সেই চিঠির এখনও উত্তর পাননি তাঁরা। তিনি বলেন, “আমরা সরাসরি আইসিসি-র সঙ্গে কথা বলছি। ওদের থেকে উত্তর চেয়েছি। এখনও সেটা পাইনি।”
জয় শাহ আইসিসি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিলে তাঁর সঙ্গে কি কথা বলবেন? নকভির উত্তর, “এ ভাবে হয় না। প্রতিটা বোর্ড স্বাধীন। তাদের নিজস্ব মত রয়েছে। আইসিসি-র উচিত নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাঁচিয়ে রাখা। কারণ ওরা সব দেশের প্রতিনিধি।” রাজনীতি এবং ক্রিকেট একসঙ্গে না দেখার অনুরোধ আবারও করেছেন নকভি। বলেছেন, “খেলাধুলো এবং রাজনীতি দুটো আলাদা। আমি চাই না কোনও দেশ সেটাকে মিশিয়ে ফেলুক। আশা রাখছি ভারত আসবে পাকিস্তানে।”
এই বিতর্কের মাঝেই ভারতীয় বোর্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। তাদের অভিযোগ, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড অন্য দেশের বোর্ডকে মোটা টাকার প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের জানানো হয়েছে, আইসিসির কাছ থেকে যে আয় ভারতের হয় সেখান থেকে তাদের ভাগ দেওয়া হবে। বাড়তি আর্থিক প্রলোভনও দেখানো হয়েছে। তা ছাড়া সেই সব দেশের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়ের সময় ম্যাচের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাবও দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। বদলে সেই সব দেশকে জানানো হয়েছে, তারা যাতে পাকিস্তান থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবে ভারতের পাশে দাঁড়ায়। যদিও এই বিষয়ে আইসিসির কাছে সরকারি ভাবে কোনও অভিযোগ করেনি তারা।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে হওয়ার কথা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এখনও পর্যন্ত আয়োজক দেশ হিসাবে রয়েছে পাকিস্তানই। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যে প্রোমো প্রকাশ করেছে সেখানে আয়োজক দেশ হিসাবে পাকিস্তানকেই রেখেছে। সে দেশে ট্রফি ট্যুরও শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রতিযোগিতার সূচি ঘোষণা হয়নি। তাই একটা ধোঁয়াশা রয়েছে।