Ashes 2023

রুটের দাপট, ৪০০-র আগেই ডিক্লেয়ার! অ্যাশেজের শুরুতেই ‘বাজ়‌বল’-এ মাত ইংরেজদের

প্রথম ইনিংসে চারশো উঠতে বাকি ছিল সাত রান। তার আগেই ডিক্লেয়ার করে দিল ইংল্যান্ড। অ্যাশেজের প্রথম দিনেই ইংল্যান্ডের ‘বাজ়‌বল’ তত্ত্বের নিদর্শন পাওয়া গেল। শতরান করে উজ্জ্বল জো রুট।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩ ২৩:০১
Share:

প্যাট কামিন্সকে রিভার্স স্কুপে ছক্কা মারছেন জো রুট। ছবি: টুইটার

স্কোরবোর্ডে ৪০০ উঠতে তখনও সাত রান বাকি। সবাইকে অবাক করে হঠাৎই ডিক্লেয়ার করে দিলেন ইংরেজ অধিনায়ক বেন স্টোকস। শুধু অ্যাশেজ নয়, টেস্ট ক্রিকেটে আগে এ রকম ঘটনা কবে ঘটেছে কেউই মনে করতে পারছেন না। ইংল্যান্ডের ইনিংসের আট উইকেট পড়ে গিয়েছিল। ক্রিজে ছিলেন জো রুটের মতো সেট হয়ে যাওয়া ব্যাটার। পাল্লা দিচ্ছিলেন অলি রবিনসনও। তা সত্ত্বেও ডিক্লেয়ার! এটাই ‘বাজ়বলের’ মাহাত্ম্য, যার একটাই সারমর্ম, আগাগোড়া ভয়ডরহীন ক্রিকেট। অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৯৩-৮ স্কোরে ডিক্লেয়ার করে দিল ইংল্যান্ড। টেস্ট ক্রিকেটে ৩০তম শতরান রুটের। জবাবে প্রথম দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া ১৪-০। পিছিয়ে ৩৭৯ রানে।

Advertisement

ব্রেন্ডন ম্যাকালাম কোচ হয়ে আসার পর থেকে এই ভয়ডরহীন ক্রিকেট, অর্থাৎ ‘বাজ়‌বল’ই ইংল্যান্ডের সম্বল। দেশ-বিদেশে ধারাবাহিক সাফল্যই সেটা বলে দিচ্ছে। এই ‘বাজ়বল’-এর ভবিষ্যৎ নিয়ে অ্যাশেজ শুরুর আগে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্টিভ স্মিথ। জানিয়েছিলেন, মেঘলা আকাশের নীচে ঘাসের পিচে অজি পেসারদের সামনে ‘বাজ়বল’ টিকবে তো? সেই উত্তর সময়ই বলবে। কারণ, এর আগে যে ক্রিকেটার একই প্রশ্ন তুলেছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সেই ডিন এলগারকে ঘরের মাঠে দলের ভরাডুবি দেখতে হয়েছিল।

রুটকে নিয়ে আলাদা করে বলতেই হবে। কী ছিলেন আর কী হয়েছেন! নিজে অধিনায়ক থাকাকালীন ক্রিকেটীয় শটের বাইরে বেরোতেন না। ধীরস্থির, স্থিতধী, ঠান্ডা মাথার। একদম টেস্ট ক্রিকেটের আদর্শ ব্যাটার বলতে যা বোঝায়, রুট ছিলেন তাই। ম্যাকালাম এসে রুটের খেলার ধরনই বদলে দিয়েছেন। না হলে কী করে রুট অবলীলায় স্কট বোলান্ডকে রিভার্স স্কুপে ছক্কা মারতে পারেন! বোলান্ডই নয়, রুটের এই শটের থেকে পরিত্রাণ পেলেন না অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও। তাঁর ১৪৫ কিমি গতিবেগের বল অনায়াসে রিভার্স স্কুপ মেরে থার্ডম্যানে বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দিলেন রুট। ১৫২ বলে ১১৮ রানে অপরাজিত থাকলেন তিনি। সাতটি চার এবং চারটি ছয় মেরেছেন, যার শেষটা এসেছে শেষ ওভারে নেথান লায়নের বলে।

Advertisement

প্রথম বলেই যে ভাবে কামিন্সকে চার মেরে শুরু করলেন জাক ক্রলি, সেটাই বলে দিয়েছিল ইংরেজদের মনোভাব কেমন হতে চলেছে। ইনিংস জুড়ে উইকেট পড়তে থাকল একের পর এক। কিন্তু ইংল্যান্ড পিছিয়ে এল না। প্রতি ওভারে পাঁচের কাছাকাছি রান উঠতে লাগল। আগ্রাসী শট খেলতে কেউ পিছপা হলেন না। ডাকেট ১২ রান করে আউট হলেন জশ হ্যাজলউডের বলে। অন্য ইংরেজ ওপেনার জ্যাক ক্রলি ব্যাট করলেন আগ্রাসী মেজাজে। তাঁর ৬১ রান এল ৭৩ বলে। মারলেন সাতটি চার। তাঁকে আউট করলেন স্কট বোল্যান্ড। বড় রান পেলেন না তিন নম্বরে নামা অলি পোপও। নাথান লায়নের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি করলেন ৪৪ বলে ৩১ রান। ২টি চার এল তাঁর ব্যাট থেকে।

রুটের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়লেন আইপিএলে ব্যর্থ হ্যারি ব্রুক। তবে তাঁর আউট হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। লায়নের বল থাই প্যাডে লেগে মাটিতে একটি ড্রপ পড়ে উইকেট ভেঙে দিল। এর পর রুটের লম্বা জুটি জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে। টেস্ট ক্রিকেটে মন দেবেন বলে আইপিএলে খেলেননি বেয়ারস্টো। তাঁর সেই সিদ্ধান্ত বৃথা যায়নি। ৭৮ বলে ৭৮ রানের ইনিংসে যেমন ছিল ১২টি বাউন্ডারি, তেমনই খুচরো রান নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখার প্রবণতা। পরের দিকে এসে মইন আলি, স্টুয়ার্ট ব্রডের মতো ক্রিকেটাররাও রান করে গেলেন। ব্যতিক্রম বেন স্টোকস। আইপিএলে চেন্নাইয়ের ডাগআউট গরম করা ইংরেজ অধিনায়ক এক রানের বেশি করতে পারেননি।

অজি পেসারদের কথা ভেবে পাটা পিচ বানিয়েছে ইংল্যান্ড। উইকেটে ঘাসের চিহ্নমাত্র নেই। সেই সিদ্ধান্তও সফল। অজি পেসারদের দাঁত ফোটাতে দিলেন না ইংরেজ ক্রিকেটাররা। একশোর বেশি রান খরচ করে লায়নের চারটি উইকেট ছাড়া অজিদের বলার মতো কিছু নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement