ভারতীয় ব্যাটারদের হিমশিম খেতে দেখে সাজঘরে হয়তো কিছুটা আনন্দ পাচ্ছিলেন ভারতের স্পিন ত্রয়ী। কারণ যে উইকেটে শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা এত সুবিধা পেলেন সেখানে অশ্বিন, জাডেজা, অক্ষরদের সামলানো কিন্তু মোটেই সহজ হবে না শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের পক্ষে।
পিচের ঘূর্ণিতে আউট হলেন পন্থ। ছবি: পিটিআই।
রাওয়ালপিন্ডিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে পাটা উইকেট করে সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে। আইসিসি ওই উইকেটকে বলেছিল, ‘বিলো অ্যাভারেজ’ বা সাধারণের থেকেও খারাপ। জবাবদিহি করেছিলেন বোর্ডের চেয়ারম্যান রামিজ রাজা। বেঙ্গালুরুতে ঠিক তার উল্টো ছবি দেখা গেল। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দিন-রাতের টেস্টের পিচ নিয়ে এখনও পর্যন্ত আইসিসি কিছু না বললেও প্রথম ঘণ্টা থেকে যে ভাবে বল ঘুরল তাতে সমস্যায় পড়লেন ব্যাটাররা।
চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কিন্তু প্রথম পাঁচ ওভারে পিচের অসমান বাউন্স দেখে স্পিন বোলারদের আক্রমণে আনেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে। আর প্রথম ওভার থেকেই দেখা গেল স্পিনের ভেল্কি। বল পিচে পড়ার পর ধুলো উড়তে শুরু করে। কোনও বল সোজা গেল। কোনও বল এতটা ঘুরল যে হতভম্ব হয়ে গেলেন ব্যাটাররা।
ঘূর্ণির দোসর হয় অসমান বাউন্স। তার খেসারত দিতে হয় বিরাট কোহলীকে। ২৩ রানের মাথায় ধনঞ্জয় ডি সিলভার যে বলটা অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে অনেকটা নিচু হয়ে কোহলীর প্যাডে গিয়ে লাগল তাতে যে কোনও ব্যাটার আউট হতে পারেন। কোহলী নিজেও আউট হওয়ার পরে বেশ কিছু ক্ষণ ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকেন। হয়তো ভাবছিলেন কী ভাবে এই বল তিনি খেলতে পারতেন।
অন্য দিকে আবার রবীন্দ্র জাজেডা যে বলে আউট হলেন সেটি গুড লেংথে পড়ে লাফাল। ফলে জাডেজার ব্যাটের কানায় লেগে সেই বল জমা পড়ে স্লিপের হাতে। মহম্মদ শামিও বড় শট খেলতে গিয়ে বলের অতিরিক্ত বাউন্সের জন্য আউট হলেন। আর শেষটা দেখা গেল শ্রেয়স আয়ার আউট হওয়ার সময়। লেগ স্টাম্পের বাইরে বল পড়ে যে পরিমাণ ঘুরল তা সাধারণত টেস্টের পঞ্চম দিন দেখা যায়।
ভারতে এর আগেও র্যাঙ্ক টার্নার নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। বিদেশি দলের বিরুদ্ধে ঘূর্ণি উইকেট তৈরি করে স্পিনারদের লেলিয়ে দেওয়ার পরিচিত ছবি থেকে গত কয়েক বছরে কিছুটা বদল হয়েছিল। গতি ও বাউন্স সহায়ক উইকেট তৈরি হচ্ছিল। তার মধ্যেই গত বছর আমদাবাদে দিন-রাতের টেস্টের উইকেট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু এই টেস্টের উইকেট যেন সব কিছুকেই ছাপিয়ে গেল। প্রথম ঘণ্টা থেকেই বলের ঘূর্ণি খুব একটা দেখা যায় না।
ভারতীয় ব্যাটারদের হিমশিম খেতে দেখে সাজঘরে হয়তো কিছুটা আনন্দ পাচ্ছিলেন ভারতের স্পিন ত্রয়ী। কারণ যে উইকেটে শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা এত সুবিধা পেলেন সেখানে অশ্বিন, জাডেজা, অক্ষরদের সামলানো কিন্তু মোটেই সহজ হবে না শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের পক্ষে।