প্রথম সারির প্রাক্তনদের পেতে প্রধান নির্বাচকের বেতন বাড়ানোর পরামর্শ হরভজনের। ছবি: টুইটার।
আন্তর্জাতিক পর্যায় দীর্ঘ দিন খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন কাউকে প্রধান নির্বাচক হিসাবে চাইলে, ভাল বেতন দিতে হবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে। ভারতীয় দলের কোচের সম পরিমাণ বেতন দেওয়া উচিত প্রধান নির্বাচককে। বোর্ডকে এমনই বার্তা দিলেন হরভজন সিংহ।
ভারতের জাতীয় ক্রিকেট মণ্ডলীর সদস্যদের নিয়ে প্রায়শই নানা অভিযোগ ওঠে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নির্বাচকদের খেলার অভিজ্ঞতা বা ক্রিকেটার হিসাবে তাঁদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন ক্রিকেটারের একাংশ। প্রথম সারির প্রাক্তন ক্রিকেটারদের অধিকাংশই নির্বাচকের দায়িত্ব পালনে রাজি হন না। যার অন্যতম কারণ, পরিশ্রমের তুলনায় যথাযথ বেতন দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। এই সমস্যার সমাধানে জাতীয় দলের কোচের সমান বেতন প্রধান নির্বাচককে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন হরভজন।
প্রাক্তন অফ স্পিনার বলেছেন, ‘‘সর্বোচ্চ মানের প্রাক্তন কোনও ক্রিকেটারকে প্রধান নির্বাচক হিসাবে পেতে হলে বিসিসিআইকে ভাল বেতন দিতে হবে। প্রধান নির্বাচকের পদ যথেষ্ট আকর্ষণীয় নয় বলেই প্রাক্তন ক্রিকেটাররা ধারাভাষ্যকারের কাজ করতে বেশি পছন্দ করেন।’’ হরভজনের বক্তব্য, ‘‘সর্বোচ্চ পর্যায় বেশ কিছু দিন খেলেছেন এমন কাউকে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব দেওয়া হলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আকর্ষণীয় বেতন দিলে প্রাক্তন ক্রিকেটাররা অবশ্যই আগ্রহী হবেন। উদাহরণ হিসাবে বীরেন্দ্র সহবাগের কথা বলতে পারি। ওকে প্রধান নির্বাচক হিসাবে পেতে হলে, ওর মানের মানানসই বেতন দেওয়া দরকার। জানি না এখন প্রধান নির্বাচকের আয় ঠিক কত। কিন্তু সহবাগ ধারাভাষ্য দিয়ে বা ব্যবসা থেকে অনেক বেশি আয় করে। তাই সহবাগের মানের কোনও ক্রিকেটারকে প্রধান নির্বাচকের পদে দেখতে চাইলে বোর্ডকে উপযুক্ত অর্থ খরচ করতে হবে। না হলে এমন ক্রিকেটারদের বেছে নিতে হবে, যাঁরা হয়তো এক বছর দেশের হয়ে খেলেছেন বা ক্রিকেটার হিসাবে তেমন বড় নাম নন। রাহুল দ্রাবিড় কোচ হতে পারলে কেন এক জন সমমানের প্রাক্তন ক্রিকেটার প্রধান নির্বাচক হবেন না। যাঁর ক্রিকেটার হিসাবে একটা উচ্চতা রয়েছে। যাঁর কথার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে, তেমন কাউকেই প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব দেওয়া উচিত।’’
এখন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক বছরে ১ কোটি টাকা বেতন পান। অন্য নির্বাচকরা পান বছরে ৯০ লাখ টাকা বেতন। সে দিক থেকে জাতীয় দলের কোচের আয় অনেক বেশি। দ্রাবিড় বেতন হিসাবে পান বছরে ৭ কোটি টাকা। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই কথা বলেছেন হরভজন। তাঁর মতে, জাতীয় দলের কোচের মতোই গুরুত্বপূর্ণ প্রধান নির্বাচকের ভূমিকা। অথচ ভারতীয় ক্রিকেটে এই পদটি প্রায় সব সময় অবহেলিত হয়েছে।
বিতর্কে জড়িয়ে সম্প্রতি প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন চেতন শর্মা। তাঁর পরিবর্ত হিসাবে এখনও কারও নাম ঘোষণা করেনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। শূন্য রয়েছে প্রধান নির্বাচকের পদ। হরভজন বলেছেন, ‘‘দল নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কোচ দল হাতে পেলে পরিকল্পনা তৈরি করেন। কিন্তু তিনি কী দল হাতে পাচ্ছেন, সেটাও দেখা উচিত। সেরা খেলোয়াড়দের বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কোচ এবং অধিনায়কের পরিকল্পনা এবং পছন্দ মতো দল তৈরি করতে না পারলে প্রধান নির্বাচকের কোনও মূল্য নেই।’’