ভগ্নদশায় স্টেডিয়ামের স্কোরবোর্ড। তার নীচেই কোনও রকমে খেলা দেখছেন দর্শকরা। ছবি: এক্স।
অজিঙ্ক রাহানের মতো জাতীয় দলে খেলা ক্রিকেটার যে মাঠে খেলতে নেমেছেন সেই মাঠের বেহাল দশা। চার দিকে আগাছা। ভেঙে পড়েছে গ্যালারি। রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ চলাকালীন বিহারের মইন উল হক স্টেডিয়ামের বেহাল দশা নিয়ে লজ্জায় পড়েছে বিহার সরকার। পরিস্থিতি সামলাতে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। স্পোর্টস কমিটি তৈরি করা হয়েছে।
বিহার সরকারের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এস সিদ্ধার্থ বলেন, ‘‘স্পোর্টস কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তাদের কাজ হবে রাজ্যের সব মাঠ ও স্টেডিয়ামের রক্ষণাবেক্ষণ করা। সেই সঙ্গে ক্রিকেটারদের দিকেও নজর রাখবে কমিটি। এই কমিটি সরাসরি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে।’’
সিদ্ধার্থ আরও বলেন, ‘‘রাজ্যের উঠতি প্রতিভাদের দিকে নজর রয়েছে সরকারের। আগের থেকে অনেক বেশি ক্রিকেটার এখন জাতীয় স্তরে নজর কাড়ছে। সেই সংখ্যা আরও বাড়ানোর জন্যই এই নতুন কমিটি তৈরি করা হয়েছে।’’
স্টেডিয়ামের গ্যালারির বেশ কিছু অংশ রয়েছে ভগ্নদশায়। কিছু অংশ ভরে রয়েছে আগাছায়। সংস্কারের কোনও চিহ্ন নেই গোটা স্টেডিয়ামেই। বিহারের ক্রিকেট কর্তারা, গ্যালারির বেহাল জায়গাগুলিতে ‘বিপজ্জনক অংশ’ লিখে ছোট ছোট বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়ে দায় সেরেছেন। গ্যালারি, সিঁড়ির নানা জায়গায় জঞ্জাল জমে রয়েছে। দর্শকদের বসার জন্য নেই কোনও চেয়ার। নেই দর্শকদের জন্য পানীয় জলের সুব্যবস্থাও। সব মিলিয়ে মইন উল হক স্টেডিয়ামের বেহাল দশা ভারতের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট পরিকাঠামো নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
বিহার ক্রিকেট সংস্থা জানিয়েছে, রঞ্জি ট্রফির ঘরের ম্যাচগুলি আয়োজন করা হবে মইন উল হক স্টেডিয়ামে। সূচি অনুযায়ী পটনায় বিহারের সঙ্গে খেলতে হবে ছত্তীসগঢ়, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশকে। ফলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে চিন্তায় থাকছেন সঞ্জু স্যামসন, শিবমদের মতো ক্রিকেটারেরা। বিশ্বকাপের আগে পটনার মইন উল হক স্টেডিয়ামে খেলতে হচ্ছে বা হবে তাঁদের। বড় চোট লেগে গেলে বিশ্বকাপ খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তা ছাড়া রঞ্জি ট্রফির লড়াইয়েও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দলগুলি। স্বভাবতই উদ্বেগে রয়েছেন বোর্ড কর্তারাও।
ক্রিকেটারদের মতোই অসন্তুষ্ট দর্শকেরাও। তাঁরা স্টেডিয়ামের বেহাল দশার জন্য দুষছেন বিহার ক্রিকেট সংস্থা এবং সরকারের সদিচ্ছার অভাবকে। গত বছর রঞ্জি ট্রফির এলিট গ্রুপে উঠেছে বিহার। দেশের প্রথম সারির দলগুলির সঙ্গে খেলতে হবে, তা যথেষ্ট আগে থেকে জানা ছিল বিহারের ক্রিকেট কর্তাদের। ভারতীয় ক্রিকেটের একাধিক বড় নামের খেলতে আসার সম্ভাবনাও ছিল। তবু তাঁরা স্টেডিয়াম সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেননি বলে অভিযোগ। এই বিতর্কে মাঝেই এ বার নতুন সিদ্ধান্ত নিল সে রাজ্যের সরকার।