লোকেশ রাহুল। —ফাইল চিত্র।
ঠিক কী চলছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অন্দরে? কেন এত লুকোছাপা লোকেশ রাহুলকে নিয়ে? তিনি কি সুস্থ? যদি তাই হন, তা হলে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ চারটি টেস্টে খেলতে পারলেন না কেন? আর যদি চোটই পেয়ে থাকেন, তা হলে কেন প্রতিটি টেস্টের আগে তাঁর খেলার সম্ভাবনা দেখা গেল? কেন তাঁকে দলে রাখলেন নির্বাচকেরা? ঠিক কী হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটে? উঠছে প্রশ্ন।
হায়দরাবাদে প্রথম টেস্টের পরে পেশিতে টান লাগে রাহুলের। বিশাখাপত্তনমে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে বাদ পড়েন তিনি। রাহুলকে পাঠানো হয় বেঙ্গালুরুতে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। সেই সময় বোর্ড একটি বিবৃতিতে বলেছিল, রাহুলের ম্যাচ ফিটনেস ৯০ শতাংশ। পেশিতে সামান্য টান ধরেছে তাঁর। সেই কারণেই পাঠানো হয়েছে অ্যাকাডেমিতে। ১০০ শতাংশ সুস্থ হয়ে তিনি দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। সেই বিবৃতির ১৮ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। ১০ শতাংশ সুস্থ হতে পারেননি রাহুল।
রাজকোটে তৃতীয় টেস্টের আগে নিজের একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে দেন রাহুল। সেখানে দেখা যায়, ব্যাট করছেন তিনি। দেখে মনে হয়নি কোনও সমস্যা হচ্ছে। রাহুলের ভিডিয়ো দেখে ভারতীয় সমর্থকদের আশা জাগে যে তৃতীয় টেস্টে তাঁকে পাওয়া যাবে। রাহুল প্রাথমিক দলেও ছিলেন। কিন্তু রাজকোট টেস্ট শুরু হওয়ার আগে হঠাৎই বোর্ড জানায়, রাহুল খেলতে পারবেন না। এখনও চোট সারেনি তাঁর। রাহুল যে সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো দিয়েছিলেন, সেটাও ভাল ভাবে নেয়নি বোর্ড। তাদের বক্তব্য ছিল, ভিডিয়ো দিয়ে দর্শকদের বিভ্রান্ত করেছেন রাহুল।
রাজকোটে তৃতীয় টেস্টের পরে সাংবাদিক বৈঠকে আবার রাহুলের খেলা নিয়ে ইতিবাচক কথা বলেছিলেন রোহিত শর্মা। ভারত অধিনায়ক জানিয়েছিলেন, রাঁচীতে চতুর্থ টেস্টের আগে সুস্থ হয়ে উঠবেন রাহুল। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ঘরের মাঠে পাওয়া যাবে তাঁকে। রোহিতের এই কথার দু’দিন পরে আবার বোর্ড জানিয়ে দেয় যে রাঁচী টেস্ট থেকেও বাদ দেওয়া হচ্ছে রাহুলকে।
পঞ্চম টেস্টেও একই ছবি দেখা গিয়েছে। ৭ মার্চ থেকে ধর্মশালায় শুরু শেষ টেস্ট। তার আগে বৃহস্পতিবার বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে, সেই টেস্টেও খেলতে পারবেন না রাহুল। শুধু তাই নয়, রাহুলের চোট নিয়ে লন্ডনের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। দরকারে তাঁদের সাহায্য নেওয়া হবে। ১৭-১৮ দিন আগের সামান্য পেশির টান হঠাৎ করে কী ভাবে এতটা বেড়ে গেল যে বিদেশি চিকিৎসকদের সাহায্যের দরকার পড়ছে? এত দিন তো এ কথা শোনা যায়নি।
ভারতীয় দলও যে রাহুলের চোট নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে তা দলের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠৌরের কথা থেকে পরিষ্কার। রাঁচী টেস্টের আগে রাঠৌর বলেছিলেন, “আমার কাছে কোনও ক্রিকেটার হয় সুস্থ, নয় অসুস্থ। তার মাঝামাঝি কিছু হয় না। কত শতাংশ সুস্থ সেটা দেখে কিছু হয় না। রাহুলের চোটের ব্যাপারে মেডিক্যাল দল সবটা জানে। আমাদের সে ব্যাপারে কিছু জানা নেই। আমরা শুধু দলে যারা আছে তাদের দিকেই লক্ষ্য রাখছি।”
আদতে রাহুলের চোট কতটা গুরুতর সে বিষয়ে নির্দিষ্ট খবর তা হলে কার কাছে রয়েছে? নির্বাচকদের কাছে থাকলে অজিত আগরকরের কমিটি কেন তাঁকে বার বার প্রাথমিক দলে রাখেন? তা হলে কি বোর্ড, জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি, ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের মধ্যে যতটা যোগাযোগ দরকার তা হচ্ছে না। সেই কারণেই এই ধোঁয়াশা দেখা যাচ্ছে? উত্তর এখনও পাওয়া যাচ্ছে না।