করাচির স্টেডিয়ামের অবস্থা। এখনও অনেক কাজ বাকি। ছবি: সমাজমাধ্যম।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজন করতে গিয়ে মুখ পুড়িয়েছে আমেরিকা। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের মাঠ থেকে শুরু করে প্রস্তুতির মাঠ, বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। সমালোচনা হয়েছে আইসিসিরও। আরও এক বার সমস্যায় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজনের দায়িত্ব দিয়েও সমস্যায় তারা। এখনও সে দেশের তিনটি স্টেডিয়াম তৈরি নয়। কাজ যে পরিস্থিতিতে আছে তাতে সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, শেষ পর্যন্ত কি পাকিস্তান থেকে সরেই যাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।
পাকিস্তানের লাহোর, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে হওয়ার কথা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ। তিনটি মাঠেই সংস্কারের কাজ চলছে। কিন্তু দেখে বোঝা যাচ্ছে, সংস্কার নয়, তিনটি স্টেডিয়ামেই আমূল বদল হচ্ছে। স্টেডিয়ামের বাইরের অংশ থেকে শুরু করে গ্যালারি, সাজঘর, শৌচাগার সব জায়গায় কাজ চলছে। এমনকি, মাঠের আউটফিল্ডও তৈরি নয়। দর্শকাসনে রং বাকি। প্লাস্টারের কাজও বাকি। স্টেডিয়ামের বাইরে ইটের স্তূপ পড়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়াম পরিদর্শনে গিয়েছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভি। তিনি আশার কথা শুনিয়েছেন। নকভি বলেন, “গদ্দাফি স্টেডিয়ামে প্লাস্টারের কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুত কাজ চলছে। সময়ের মধ্যে সব শেষ হয়ে যাবে।” তিনি আশার কথা শোনালেও ছবি অন্য কথা বলছে। এমনিতেই ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সেই সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে সময় দিয়েছে আইসিসি। কিন্তু তার মধ্যেও সব কাজ শেষ হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
কয়েক দিন আগে পাকিস্তানের স্টেডিয়াম পরিদর্শন করে গিয়েছে আইসিসির একটি প্রতিনিধি দল। সেই দলের এক আধিকারিক বলেন, “স্টেডিয়ামের হাল দেখে আমরা হতাশ। এখনও অনেক কাজ বাকি। স্টেডিয়ামগুলো সংস্কার হচ্ছে না। ভেঙে নতুন করে তৈরি হচ্ছে। দর্শকাসন, ফ্লাডলাইট থেকে শুরু করে মাঠের আউটফিল্ডও তৈরি নয়।” কোনও রকমে তাড়াহুড়ো করে সেই কাজ শেষ করা যাবে না। কারণ, আইসিসি প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হলে আইসিসির শর্ত মেনে সব বন্দোবস্ত করতে হয়। পাকিস্তানের আবহাওয়াও কাজে সমস্যা করছে। ফলে যতটা দ্রুত কাজ হওয়ার কথা তা হচ্ছে না।
যদি সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হয় তা হলে সমস্যায় পড়বে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। আইসিসির ওই আধিকারিক বলেন, “আইসিসির নির্দেশ মেনে সময়ের মধ্যে সব ব্যবস্থা না হলে ওদের সমস্যা হবে। কারণ, পুরো তৈরি না হলে সেই মাঠে খেলা হবে না। সে ক্ষেত্রে যদি প্রতিযোগিতা শেষ মুহূর্তে সরাতে হয় তা হলে ভবিষ্যতে কোনও প্রতিযোগিতা আয়োজনে সমস্যায় পড়বে পাকিস্তান। আগামী সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও ভাল বোঝা যাবে।”
সময়সীমা শেষ হতে বেশি বাকি নেই। আর মাত্র ১৭ দিন সময় রয়েছে পাকিস্তানের হাতে। স্টেডিয়ামের ছবি দেখে মনে হচ্ছে, তার মধ্যে সব তৈরি করা বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ। এখন দেখার, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সময়ের মধ্যে সব করতে পারে কি না।