-ফাইল ছবি।
মানব দেহকোষে ঢোকার পর করোনাভাইরাসের দ্রুত বংশবৃদ্ধি পুরোপুরি রুখে দিতে পারে এমন একটি প্রোটিন তৈরি করা হল। এই প্রথম। যা অদূর ভবিষ্যতে কোভিড চিকিৎসার প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে নতুন ওষুধ আবিষ্কারের মাধ্যমে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
গবেষকরা দেখেছেন, মানব দেহকোষের ভিতরে ঢোকার পর ওমিক্রন, ডেল্টা-সহ করোনাভাইরাসের সবক’টি রূপের দেহের অভ্যন্তরে থাকা বিশেষ একটি উৎসেচকই ভাইরাসের দ্রুত বংশবৃদ্ধির সহায়ক হয়ে ওঠে। ভাইরাসের দেহের অভ্যন্তরে থাকা আরএনএ-সহ জিনের বিভিন্ন কণাকে মানব দেহকোষের ভিতরে বেরিয়ে আসতে ও ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে করোনাভাইরাসের ওই উৎসেচক। গবেষকরা দেখেছেন, আবিষ্কৃত নতুন প্রোটিনটি ভাইরাসের সেই উৎসেচকটিকে নির্ভুল ভাবে চিনতে পারে। তাকে বেঁধে ফেলে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে।
সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদলের এই নজরকাড়া গবেষণাপত্রটি চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল অব দ্য আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি’-তে।
এর আগে একই ভাবে এডস-এর ওষুধ আবিষ্কার হয়েছিল এমনই একটি প্রোটিন তৈরি করে।
গবেষকরা কাজ করেছেন সুইডেনের একটি সুপার কম্পিউটারের মাধ্যমে। যে উৎসেচকের জন্য করোনাভাইরাস মানব দেহকোষের ভিতরে ঢুকে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে পারে ২০২০ সালে সেটির হদিশ পেয়েছিলেন উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তার পর গত দেড় বছর ধরে সুপার কম্পিউটারের মাধ্যমে তাঁরা খতিয়ে দেখতে শুরু করেন কোন ধরনের প্রোটিন ভাইরাসের ওই উৎসেচকটিকে নির্ভুল ভাবে চিনতে পারে আর উৎসেচকটিকে দ্রুত বেঁধে ফেলে তাকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে। সুপার কম্পিউটারের মাধ্যমে এমন বহু প্রোটিনের হদিশ পান গবেষকরা। তার পর তাদের মধ্যে কোনটি মানবশরীরের পক্ষে ক্ষতিকর কোনটি ক্ষতিকর নয় তা খতিয়ে দেখা হয়।
গবেষকরা দেখেন, কোভিড চিকিৎসার জন্য সদ্য অনুমোদিত একটি ওষুধ— ‘প্যাক্সলোভিড’-এ থাকা অত্যন্ত সক্রিয় রাসায়নিক যৌগটির মতোই কার্যকরী এই প্রোটিন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বেশি কার্যকরী।
মূল গবেষক উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর জেন্স কার্লসন বলেছেন, ‘‘আমরা দেখেছি, ওমিক্রন, ডেল্টা-সহ করোনাভাইরাসের সবক’টি রূপের দেহের ভিতরে থাকা এই উৎসেচকটিকে চিনতে ও তাকে বেঁধে ফেলে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারছে প্রোটিনটি সমান দক্ষতায়।’’