Cricketers with Physical Problem

যুবরাজ, আক্রম থেকে লারা! ভয়ঙ্কর শারীরিক সমস্যাকে জয় করে ২২ গজে রাজত্ব করেছেন যাঁরা

কেউ হারিয়েছেন ক্যানসারকে, কেউ পোলিয়োকে তো কেউ হেপাটাইটিসকে! যুবরাজ তো বটেই, তালিকায় রয়েছেন আরও দুই ভারতীয় ক্রিকেটার। এঁদের মধ্যে এক জন জাতীয় দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। আর কারা রয়েছেন এই তালিকায়?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৩৩
Share:
০১ ১৯
Top international cricketers who battled physical conditions and continued their careers

এঁরা সবাই ক্রিকেট মাঠের মহারথী। ব্যাট, বল হাতে ২২ গজ জয় করেছেন বার বার। কারও নামের পাশে রয়েছে বিশ্বজয়ীর তকমা, তো কেউ বিশ্বরেকর্ডের মালিক! দুর্দান্ত ক্রিকেটার হওয়ার পাশাপাশি এঁরা ব্যক্তিগত জীবনেও যুদ্ধজয়ী। কেউ হারিয়েছেন ক্যানসারকে, কেউ পোলিয়োকে তো কেউ হেপাটাইটিসকে! যুবরাজ তো বটেই, তালিকায় রয়েছেন আরও দুই ভারতীয় ক্রিকেটার। এঁদের মধ্যে এক জন জাতীয় দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। আর কারা রয়েছেন এই তালিকায়?

০২ ১৯
Top international cricketers who battled physical conditions and continued their careers

এই তালিকায় প্রথমেই আসবে ইংরেজ ক্রিকেটার মাইকেল আথারটনের নাম। অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিস নামের বিরল রোগে আক্রান্ত হন তিনি। খেলোয়াড়দের মধ্যে এর প্রবণতা একেবারে যে নেই, তা বলা যাবে না। এতে আক্রান্ত হলে মেরুদণ্ড এবং পিঠের পেশিতে শুরু হয় অসহ্য যন্ত্রণা। আথারটন ছাড়া বিরল রোগটির শিকার হয়েছেন রুশ দাবাড়ু ভ্লাদিমির ক্র্যামনিক এবং গিটারবাদক মিক মার্শ।

Advertisement
০৩ ১৯
Top international cricketers who battled physical conditions and continued their careers

ক্রিকেটজীবনে জাতীয় দলের হয়ে মোট ১১৫টি টেস্ট খেলেছেন আথারটন। এতে ৭,৭২৮ রান করেছেন তিনি। টেস্টে তাঁর ব্যাটিং গড় প্রায় ৩৮। এ ছাড়া ইংল্যান্ডের হয়ে মোট ৫৪টি এক দিনের আন্তর্জাতিক খেলেছেন প্রাক্তন এই ব্রিটিশ ওপেনার। সেখানে তাঁর গড় ৩৬। করেছেন ১,৭৯১ রান।

০৪ ১৯

স্বাধীন ভারতের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেট অধিনায়ক ছিলেন মনসুর আলি খান পটৌদী। জাতীয় দলের নেতৃত্ব পাওয়ার কয়েক মাস আগে গাড়ি দুর্ঘটনায় একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি।

০৫ ১৯

দৃষ্টিশক্তি হারিয়েও এতটুকু দমে যাননি পটৌদী। আত্মজীবনীতে তিনি লেখেন, ‘‘এক চোখে আমি কার্যত দৃষ্টিহীন। এটা সারিয়ে তোলার জন্য অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি।’’ জাতীয় দলের হয়ে খেলা ৪৬টির মধ্যে ৪০টি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন পটৌদী। এর মধ্যে ন’টি ম্যাচ জেতেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে একটি দ্বিশতরান, ছ’টি শতরান এবং ১৬টি অর্ধ শতরান রয়েছে তাঁর।

০৬ ১৯

এই তালিকায় নাম রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের প্রবাদপ্রতিম ব্যাটার ব্রায়ান চার্লস লারার। ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ চলাকালীন পুল শট খেলার সময়ে মাঠেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, হেপাটাইটিস বি-তে আক্রান্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের এই বাঁহাতি ওপেনার।

০৭ ১৯

হেপাটাইটিস বি একটি রক্তবাহিত রোগ। এতে আক্রান্ত হওয়ায় লারা আর মাঠে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তায় ছিল ক্রিকেটবিশ্ব। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই ২২ গজে ফেরেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, ২০০৪ সালে টেস্টে অপরাজিত ৪০০ রান করেন লারা। সেই রেকর্ড এখনও অক্ষুণ্ণ রয়েছে।

০৮ ১৯

১৯৪৫ সালের ১৭ মে মহীশূরে জন্ম হওয়া ভাগবত চন্দ্রশেখর ছিলেন পোলিয়ো আক্রান্ত। মাত্র তিন বছর বয়সে ওই ভাইরাস বাসা বাঁধে তাঁর শরীরে। ফলে একটা হাত প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরও খেলা চালিয়ে যান তিনি। তাঁর অসাধারণ ঘূর্ণি বোলিং আজও বিশ্বক্রিকেট মনে রেখেছে।

০৯ ১৯

জাতীয় দলের হয়ে ৫৮টি টেস্ট খেলা চন্দ্রশেখরের শিকার ছিল ২৪২ উইকেট। ১৬ বার এক ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নেন তিনি। তাঁর লেগস্পিনের জাদুতে বিদেশের মাটিতে টেস্ট জেতে ভারত। গত শতাব্দীর ৬০ এবং ৭০-এর দশকে বিশ্বের তাবড় ব্যাটারদের ত্রাস ছিলেন চন্দ্রশেখর।

১০ ১৯

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক আবার আক্রান্ত হন ডেসিমেটেড ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক নামের বিরল রোগে। এর জন্য সারা জীবন পিঠের যন্ত্রণায় ভুগেছেন তিনি। ২০০৫ সালে তাঁর ত্বকের ক্যানসার ধরা পড়ে। তার পরও খেলা চালিয়ে যান ক্লার্ক।

১১ ১৯

২০০৭ এবং ২০১৫ সালে আইসিসির এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী অসি দলের সদস্য ছিলেন ক্লার্ক। জাতীয় দলের হয়ে ১১৫টি টেস্টে ৮,৬৪৩ রান করেন তিনি। হলুদ জার্সিতে ২৪৫টি এক দিনের ম্যাচে ৭,৯৮১ রান করেছেন এই ক্যাঙারু ক্রিকেটার।

১২ ১৯

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার রায়ান হ্যারিস আবার ফ্লোটিং বোনে আক্রান্ত। এটি একটি হাড়ের অসুখ। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যাসেজ় সিরিজে তাঁর হাঁটু ফুলে গিয়েছিল। চিকিৎসক তাঁকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। কিন্তু সেটা না করে মাঠে নেমেছিলেন তিনি।

১৩ ১৯

২০১৫ সালের অ্যাসেজ়ে দুর্দান্ত খেলেন হ্যারিস। একটি ম্যাচে ২৪.৩ ওভারে মাত্র ৩২ রান দিয়ে ৪টি উইকেট তুলে নেন তিনি। এর মধ্যে ১৫ ওভারে কোনও রান নিতে পারেননি ইংরেজ ব্যাটারেরা। ফ্লোটিং বোনের কারণে অবশ্য ওই বছরই ক্রিকেটকে বিদায় জানান এই ক্যাঙারু ক্রিকেটার।

১৪ ১৯

‘সুইংয়ের সুলতান’ পাক পেসার ওয়াসিম আক্রাম আবার আক্রান্ত হন ডায়াবেটিসে। ৩১ বছর বয়সে ওই রোগ ধরা পড়ে তাঁর। এর জেরে আক্রামের ওজন কমে গিয়েছিল। রক্তে শর্করার মাত্রার সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তার পরেও খেলা চালিয়ে যান এই পাক পেসার। টেস্টে ৪১৪ এবং এক দিনের আন্তর্জাতিকে ৫০৩টি উইকেট রয়েছে তাঁর নামের পাশে।

১৫ ১৯

‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ নামে খ্যাত পাক পেসার শোয়েব আখতারের আবার ছিল হাইপারএক্সটেন্ডেড এলবো। ছোটবেলা থেকেই ৪০ ডিগ্রির বেশি বাঁকা ছিল তাঁর হাতের কনুই। পাশাপাশি পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত সোজা হয়ে হাঁটতে পারতেন না তিনি।

১৬ ১৯

জাতীয় দলে অভিষেকের পর বার বার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন শোয়েব। তার পরেও দুরন্ত গতিতে বল করে ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয় জিতে নেন তিনি। টেস্ট এবং এক দিনের আন্তর্জাতিকে তাঁর উইকেটের সংখ্যা যথাক্রমে ১৭৮ ও ২৪৭।

১৭ ১৯

মাত্র ১৪ বছর বয়সে ট্রাক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন নিউজ়িল্যান্ডের প্রাক্তন ওপেনার মার্টিন গাপ্তিল। মারাত্মক জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেন তাঁর। তাতে বাঁ পায়ের তিনটি আঙুল হারান গাপ্তিল। তার পর থেকে ওই দুর্ঘটনার দুঃস্বপ্নকে মনে রাখতে নিজেকে ‘টু টোজ়’ বলে ডাকতেন এই কিউয়ি ওপেনার।

১৮ ১৯

২০১১ সালে আইসিসি এক দিনের আন্তর্জাতিক বিশ্বকাপের ‘সেরা খেলোয়াড়’ ছিলেন যুবরাজ সিংহ। ওই টুর্নামেন্ট চলাকালীন কাশির সমস্যা হচ্ছিল তাঁর। সেটাকে পাত্তা না দিয়ে খেলে যান যুবি। বিশ্বকাপ জয়ের পর ডাক্তারি পরীক্ষায় ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর।

১৯ ১৯

ক্যানসার থেকে বেরিয়ে আসতে আমেরিকায় চিকিৎসা করতে যান যুবরাজ। ২০১২ সালে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন হয় তাঁর। এর পর আরও একটি বছর ভারতের হয়ে খেলেন তিনি। বেশ কিছু ম্যাচে বড় রান করেন এক ওভারে ছয় ছক্কা মারা এই বিধ্বংসী বাঁহাতি ব্যাটার।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement