ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের ঠিকানা আকাশগঙ্গা ছায়াপথে হয়নি এই বিস্ফোরণ। হয়েছে আরও অনেক দূরের একটি ছায়াপথে। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
প্রলয়ঙ্কর বিস্ফোরণ চাক্ষুষ করল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন।
সূর্য এক লক্ষ বছরে যে পরিমাণ শক্তি উদ্গীরণ করতে পারে, এক সেকেন্ডের ১০ ভাগের এক ভাগ সময়ে সেই শক্তিই বেরিয়ে এল বিস্ফোরণে।
ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের ঠিকানা আকাশগঙ্গা ছায়াপথে হয়নি এই বিস্ফোরণ। হয়েছে আরও অনেক দূরের একটি ছায়াপথে। সেই প্রলয়ঙ্কর বিস্ফোরণে কেন অত অল্প সময়ে ওই বিপুল পরিমাণ শক্তির নির্গমন হল, তার কারণও কিছুটা জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার’-এ।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই প্রলয়ঙ্কর বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে একটি মৃত তারা থেকে। যার ওজন হতে পারে সূর্যের ভরের ২০ বা ২৫ গুণ। মৃত্যুদশায় জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে এই ভরের তারারা চুপসে যেতে শুরু করে তার অন্দরে থাকা ভারী মৌলের অভিকর্ষজ বলের টানে। তখন হয় জন্ম নেয় ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর, নয়তো খুব ঘন নিউট্রন নক্ষত্র।
যে মৃত তারাটি থেকে এই প্রলয়ঙ্কর বিস্ফোরণের ঘটনা চাক্ষুষ করেছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা ‘অ্যাটমস্ফিয়ার-স্পেস ইন্টারঅ্যাকশন মনিটর (অ্যাসিম)’ যন্ত্র, সেটি আদতে বিশেষ ধরনের একটি নিউট্রন নক্ষত্র। যাদের বলা হয় ‘ম্যাগনেটর’। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন— ‘জিআরবি২০০১৪১৫’।
ব্রহ্মাণ্ডে সবচেয়ে শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র থাকে ম্যাগনেটরেই। তাই এই প্রলয়ঙ্কর বিস্ফোরণের পিছনে সেই চৌম্বক ক্ষেত্রের কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না, থাকলেও কতটা, তা বুঝতে চেয়েছিলেন গবেষকরা।
তাঁরা দেখেছেন, এই ম্যাগনেটরের মধ্যে কোনও কারণে চৌম্বক রেখাগুলি ভেঙেচুরে গিয়েছে। বা সেখানেও খুব তীব্র কোনও কম্পন হয়েছ। পৃথিবীতে যাকে আমরা 'ভূকম্পন' বলে জানি। তারাদের ক্ষেত্রে এই কম্পনকে বলা হয় ‘স্টারকোয়েক’। এই সবের কারণেই ওই প্রলয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয়েছে বলে ধারণা গবেষকদের।