Murder

Villisca axe murders: ‘প্রেতাত্মা’র অভিশাপ! এক রাতে আট জনকে কুড়ুল দিয়ে খুন, ১১০ বছরেও সমাধান হয়নি রহস্যের

১০ জুন মুর পরিবারের ছয় সদস্য এবং দুই অতিথিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মৃত আট জনের মাথাতেই কুড়ুলের আঘাত ছিল।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২২ ০৯:১১
Share:
০১ ২৩

১৯১২ সালের ৯ জুন রাত থেকে ১০ জুন ভোরের মধ্যে কুঠারের আঘাতে শেষ করে দেওয়া হয় আমেরিকার আইওয়া রাজ্যের ভিলিস্কা শহরের মুর পরিবারের ছয় সদস্য-সহ আট জনকে। মৃতদের মধ্যে ছিল ছয় শিশু। কে খুন করল? কী ভাবে ঘটল এই ভয়ঙ্কর ঘটনা? ১১০ বছর পরেও রহস্য ‘ভিলিস্কা কুঠার হত্যাকাণ্ড’।

০২ ২৩

১০ জুন মুর পরিবারের ছয় সদস্য এবং দুই অতিথির দেহ তাঁদের বাড়ির ভিতর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মৃত আট জনের মাথাতেই কুড়ুলের আঘাত ছিল।

Advertisement
০৩ ২৩

দীর্ঘ তদন্ত চালানোর পরও এই খুনের ঘটনার কোনও কিনারা করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হলেও উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তাঁদের সকলকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। ১১০ বছর পরেও এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য অমীমাংসিত।

০৪ ২৩

কী হয়েছিল মুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে? তদন্তে কী-ই বা উঠে এসেছিল? কী ভাবেই বা খুন হতে হয়েছিল এই আট জনকে?

০৫ ২৩

মুর পরিবারে ছিলেন মোট ছয় জন সদস্য। মুর পরিবারের কর্তা হোসে বি মুর (৪৩), কর্ত্রী সারা মুর (৩৯) এবং তাঁদের চার সন্তান হারম্যান মন্টগোমারি মুর (১১), মেরি ক্যাথরিন মুর (১০), আর্থার বয়েড মুর (৭) এবং পল ভার্নন মুর (৫)।

০৬ ২৩

এলাকায় মুর পরিবারের বেশ নামডাক ছিল। ব্যবহারের জন্য সম্ভ্রান্ত মুর পরিবারকে এলাকার সকলেই খুব পছন্দ করতেন।

০৭ ২৩

ঘটনার দিন মেরি তার দুই বন্ধু ইনা মে স্টিলিঙ্গার (৮) এবং লেনা গার্ট্রুড স্টিলিঙ্গার (১২)-কে রাতে তাদের বাড়িতে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। ইনা এবং লেনা সম্পর্কে দুই বোন। সন্ধ্যায় ইনা এবং লেনাকে নিয়ে মুর পরিবার প্রেসবিটেরিয়ান গির্জায় শিশু দিবস উপলক্ষে হওয়া একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

০৮ ২৩

রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তাঁরা সকলেই গির্জা থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন এবং রাত ১০টা নাগাদ বাড়িতে পৌঁছন।

০৯ ২৩

১০ জুন সকালে তাঁদের দেখা না পেয়ে প্রতিবেশী মেরি পেকহ্যাম মুর পরিবারকে ডাকাডাকি শুরু করেন। তিনি দেখেন মুরদের বাড়ির মূল দরজা ভিতর থেকে বন্ধ রয়েছে। অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না মেলায় পেকহ্যাম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

১০ ২৩

এর পর পেকহ্যাম হোসের ভাই রস মুরকে ডেকে আনেন। রস-ও চিৎকার করে এবং দরজায় ধাক্কা দিয়েও কোনও সাড়া পাননি। এর পর রস তাঁর কাছে থাকা চাবি দিয়ে সদর দরজা খুলে দেন।

১১ ২৩

রস বা়ড়ির ভিতরে প্রবেশ করে সামনের ঘরে বাড়িতে আসা দুই অতিথি ইনা এবং লেনা-র মৃতদেহ দেখতে পান। রস সঙ্গে সঙ্গে পেকহ্যামকে ভিলিস্কার শান্তি অফিসার হেনরি হর্টনকে ডেকে নিয়ে আসতে বলেন।

১২ ২৩

কিছু ক্ষণের মধ্যেই হেনরি ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। এর পর বাড়ির তল্লাশি করে একে একে মুর পরিবারের সব সদস্যের মৃতদেহ উদ্ধার করেন হর্টন।

১৩ ২৩

পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, একটি কুঠার দিয়ে হোসেদের সকলকে খুন করা হয়েছিল। ইনা এবং লেনা-র মৃতদেহের পাশে থেকে পুলিশ কুঠারটি উদ্ধার করে। কুঠারটি হোসেদেরই বাড়িতে ছিল।

১৪ ২৩

ময়নাতদন্তের পর উঠে আসে, নিহত সকলকেই রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টার মধ্যে খুন করা হয়। ঘরের ছাদের নীচের কুঠুরিতে দু’টো পোড়া সিগারেটের অংশও খুঁজে পায় পুলিশ। পুলিশের ধারণা, মুর পরিবারের সকলে যখন গির্জায় গিয়েছিলেন, ঠিক তখনই আততায়ী এই কুঠুরিতে আশ্রয় নেয়। মুর পরিবার রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত সে এই কুঠুরিতেই লুকিয়ে ছিল বলেও পুলিশ মনে করে।

১৫ ২৩

পুলিশের অনুমান, আততায়ী প্রথমে হোসে এবং সারার ঘরে প্রবেশ করে। সেই মুহূর্তে হোসে এবং সারা ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুমের মধ্যে আততায়ী তাঁদের উপর কুঠারের হামলা চালায়। মৃতদের মধ্যে হোসের উপরেই সবচেয়ে বেশি কুঠারের আঘাত করা হয়। হোসের মুখ এমন ভাবে কাটা হয়েছিল যে, তাঁর চোখ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।

১৬ ২৩

পুলিশ জানিয়েছিল, আততায়ী একমাত্র হোসেকেই কুড়ুলের ধারালো দিক দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। বাকি সকলকে খুন করা হয় কুঠারের ভোঁতা দিক দিয়ে।

১৭ ২৩

হোসে এবং সারার পর আততায়ী হারম্যান, ক্যাথরিন, আর্থার এবং পলকে মাথায় আঘাত করে খুন করে। পরে খুন করা হয় ইনা এবং লেনাকে।

১৮ ২৩

তদন্তকারীরা মনে করেছিলেন যে খুন হওয়ার সময় লেনা ছাড়া বাকি সকলেই ঘুমাচ্ছিলেন। লেনা মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আততায়ীর হাত থেকে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করে। তার মৃতদেহ বিছানায় আড়াআড়ি ভাবে পড়ে ছিল এবং তার হাতে একটি ক্ষত ছিল।

১৯ ২৩

লেনার ঊর্ধ্বাঙ্গ আনাবৃত ছিল এবং তার পোষাক কোমর পর্যন্ত নামানো ছিল। তদন্তকারীরা অনুমান করেছিল, হত্যাকারী তাকে যৌন নিগ্রহ করার চেষ্টাও করেছিল।

২০ ২৩

তদন্তে নেমে পুলিশ রেভারেন্ড জর্জ কেলি, ফ্রাঙ্ক এফ জোনস, উইলিয়াম ম্যানসফিল্ড, লাভিং মিচেল, পল মুলার এবং হেনরি লি মুর-সহ অনেককে অভিযুক্তের তালিকায় রেখেছিল। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য কেলিকে দু’বার বিচারকদের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

২১ ২৩

প্রথম বার এই মামলা আদালতে উঠলে জুরি সদস্যেরা কোনও সিদ্ধান্তে আসেননি। দ্বিতীয় বার এই মামলা আদালতে উঠলে প্রমাণের অভাবে সব অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়।

২২ ২৩

তবে এই হত্যার ঘটনায় অলৌকিকতার তত্ত্বও খাড়া করা হয়। উঠে আসে অশরীরী যোগও। অনেকেই মনে করেন কোনও অশরীরীর নজর ছিল ওই পরিবারের উপর। সেই ‘প্রেতাত্মা’র প্রতিহিংসারই শিকার হতে হয়েছিল মুর পরিবার। বেঘোরে প্রাণ গিয়েছিল অতিথি দুই বোনেরও।

২৩ ২৩

ঘটনার ১১০ বছর পরও এই হত্যাকাণ্ডের কোনও কিনারা হয়নি। তবে আমেরিকার অনেক শো এবং সিনেমার পটভূমি তৈরি হয়েছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement