গোটা বিশ্বেই কাজের সন্ধানে এক দেশ থেকে অন্য দেশে মানুষ যাতায়াত করে। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে এই বিষয়ে সম্প্রতি একটি চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
ওই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, নানাবিধ কারণে ভারত থেকে যাঁরা অন্য দেশে যাচ্ছেন, তাঁদের অধিকাংশই পুরুষ। অথচ অন্যান্য দেশ থেকে ভারতে যাঁরা আসছেন, তাঁদের অধিকাংশই মহিলা।
ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্ট, ২০২৪-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে অন্যান্য দেশ থেকে ভারতে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের প্রায় ৬০ শতাংশই মহিলা। যদিও এত বিপুল সংখ্যক মহিলা ভারতের কোথায় এবং কী কারণে এসে বসতি স্থাপন করছেন, তা রিপোর্টে স্পষ্ট নয়।
তবে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ থেকেই এ দেশে আসেন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মহিলা। অবশ্য কেবল ভারত নয়, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকার দেশগুলিতেও অভিবাসীদের মধ্যে অধিকাংশই নারী।
কিন্তু এই চিত্র সম্পূর্ণ বদলে যাবে ভারত থেকে অন্য দেশে যাওয়া মানুষদের লিঙ্গপরিচয় খতিয়ে দেখলে। রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, ভারত ছেড়ে যাঁরা অন্য দেশে গিয়ে অস্থায়ী ভাবে আশ্রয় নিচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে ৬৭ শতাংশই পুরুষ।
রিপোর্টে এর কারণ ব্যাখ্যা না করা হলেও প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, কাজের সন্ধানেই বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন ভারতের বাসিন্দারা। সবচেয়ে বেশি যে দু’টি দেশে এ দেশের পুরুষেরা পাড়ি দিচ্ছেন, সেগুলি হল সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি।
২০২০ সালে ২০ লক্ষ ৭০ হাজার ভারতীয় আমেরিকায় অভিবাসী হিসাবে গিয়েছিলেন। অথচ সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে এই সংখ্যাটা ৩০ লক্ষ ৪৭ হাজার। আর সৌদি আরবে সংখ্যাটা ২০ লক্ষ ৫০ হাজার।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পশ্চিম এশিয়ার বেশ কিছু দেশের অর্থনীতি এবং সমাজব্যবস্থায় এই ভারতীয় অভিবাসীদের একটি বড় প্রভাব রয়েছে।
২০০০ সালের পর থেকেই অবশ্য অভিবাসীদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা বিশ্ব জুড়ে দ্রুত কমছে। উল্টো দিকে বাড়ছে পুরুষদের সংখ্যা।
২০২০ সালে গোটা বিশ্বে পুরুষ অভিবাসীদের সংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৬০ লক্ষ। আর মহিলা অভিবাসীদের সংখ্যা ১৩ কোটি ৫০ লক্ষ।
উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতি বছর বহু সংখ্যক পড়ুয়া বিদেশে পাড়ি দেন। তবে এই বিষয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছে চিন। সে দেশ থেকেই সবচেয়ে বেশি পড়ুয়া বিদেশে পড়তে যান।
তার পরেই রয়েছে ভারত। ২০২১ সালে শুধু ভারত থেকেই পাঁচ লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া বিদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে গিয়েছিলেন।
পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে ভারতীয় যুবকেরা মূলত কাজের সন্ধানে যান বলে পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে। অবশ্য ভারতে আসা মহিলারা মূলত কী কারণে আসেন, তা পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট নয়।
১৯৯৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বছরের পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখা যাচ্ছে, ২৫ বছরে ভারত থেকে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে উল্লিখিত পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ওই একই সময়ে ভারতে অভিবাসীদের সংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষ কমে গিয়েছে।