কার জীবন কখন কোন খাতে বইবে তা কেউই আগাম ঠাহর করতে পারেন না। ব্রিটেনের এক যুবকের কথাই ধরা যাক। ফুটবলার হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রিমিয়ার লিগ খেলার। কিন্তু আমরা যা স্বপ্ন দেখি সব কি আর পূরণ হয়! সেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে ঠিকই। তবে এক নতুন দিগন্তে নিজেকে মেলে ধরেছেন ওই যুবক। আর সেখানেই বাজিমাত করেছেন তিনি।
ছিলেন ফুটবলার, কিন্তু হয়ে গেলেন নীল ছবির তারকা। ড্যানি মাউন্টেনের জীবন এমন উথালপাতাল ঘটনারই সাক্ষী। বর্তমানে ব্রিটেনের অন্যতম নামী পর্ন তারকা ড্যানি। পর্ন তারকা হিসাবে পান সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক। কিন্তু, কী ভাবে ফুটবলার থেকে পর্ন তারকা হলেন ড্যানি?
ছোট থেকেই ফুটবলের প্রতি শখ ছিল ড্যানির। ফুটবলই ছিল তাঁর সব কিছু। পরে ফুটবল খেলাও শুরু করেন। আগামী দিনের প্রতিশ্রুতিবান ফুটবলার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন ড্যানি।
চেলসি, ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড, টটেনহাম হটস্পারের মতো ফুটবল দলের তরফে খেলার জন্য প্রস্তাবও পেয়েছিলেন ড্যানি। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।
ড্যানির যখন ১৬ বছর বয়স, সেই সময় হাঁটুতে মারাত্মক চোট পান তিনি। এই চোটের কারণেই ফুটবল জীবনে তাঁকে ইতি টানতে হয়। আর এর পরই তাঁর জীবন বইতে শুরু করে এক অন্য খাতে।
সেই সময় এক তরুণীর প্রেমে পড়েছিলেন ড্যানি। যিনি ছিলেন এক জন ‘পেজ থ্রি গার্ল’। সেই প্রেমিকার মাধ্যমেই নীল ছবির দুনিয়ার লোকজনের সঙ্গে প্রথম পরিচিতি ঘটে ড্যানির।
এর পর থেকেই পর্ন ছবির দুনিয়ায় ড্যানির যাতায়াত বাড়ে। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ‘দ্য সান’কে এই কথা জানিয়েছিলেন খোদ ড্যানি। বলেছিলেন, ‘‘এক পেজ থ্রি তরুণীর সঙ্গে আমার প্রেম ছিল। ওর এজেন্ট ওকে দিয়ে পর্ন ছবি করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ও রাজি ছিল না। আমিও সঙ্গে গিয়েছিলাম।’’
লন্ডনে অডিশনের জন্য বান্ধবীর সঙ্গে তখন সেখানে গিয়েছিলেন ড্যানি। পর্ন ছবির জন্য কেমন অডিশন হয়, এ সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না ড্যানির। তবে তিনি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তবু ক্যামেরার সামনে কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন তিনি।
এর পরই পর্ন ছবিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন ড্যানি। আর তার পরই এসেছে সাফল্য। ব্রিটেনের জনপ্রিয় পর্ন তারকা তিনি।
ফুটবলার ড্যানির পাশে ছিলেন তাঁর বাবা, মা। কিন্তু পর্ন তারকা ড্যানি কি তাঁর পরিবারকে পাশে পেয়েছিলেন? এই নিয়েও ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে মুখ খুলেছেন তিনি।
তাঁর কথায়, ‘‘মাকে যখন এই সিদ্ধান্তের কথা জানাই, তখন স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল মা। ভেবেছিল এটা খুবই অশ্লীল কাজ।’’ পরে অবশ্য এই নিয়ে মায়ের সঙ্গে অনেক কথা হয় ড্যানির। কয়েক মাস পরই ড্যানির পাশে দাঁড়ান তাঁর মা।
ড্যানি বলেছেন, ‘‘মা খুবই বিব্রত ছিলেন। কারণ তখন আমার মাত্র ১৯ বছর বয়স। তবে আমি তখন দারুণ সময় কাটাচ্ছিলাম।’’
পর্ন ছবিতে অভিনয় নিয়ে প্রথমে ড্যানির মা আপত্তি জানালেও তাঁর বাবা কিন্তু ব্যতিক্রমী ছিলেন। ড্যানির কথায়, ‘‘বাবা আমার পাশে ছিল। বলেছিল, কাজ চালিয়ে যাও।’’
তরুণ বয়স থেকেই নীল ছবির দুনিয়ায় পা রেখেছেন ড্যানি। তার পর তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। যত দিন গড়িয়েছে, তাঁর জনপ্রিয়তাও বেড়েছে। পর্ন তারকাকেই জীবনসঙ্গী হিসাবে বেছেছেন ড্যানি।
দু’বার বিয়ে করেছেন ড্যানি। ২০০৭ সালে ইভা অ্যাঞ্জেলিনা নামে এক নীল ছবির তারকার সঙ্গে প্রথম বিয়ে হয়েছিল ড্যানির। তাঁদের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। তবে সেই বিয়ে টেকেনি। বিয়ের ২ বছরের মধ্যেই বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
এর পর ২০১৪ সালে পর্ন অভিনেত্রী মিয়া মালকোভাকে বিয়ে করেছিলেন ড্যানি। সেই বিয়ে টিকেছিল ৪ বছর। ২০১৮ সালে আইনি বিচ্ছেদ সেরেছিলেন ড্যানি এবং মিয়া।
মিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নাকি আরও এক নীল ছবির তারকার প্রেমে পড়েছেন ড্যানি। পর্ন তারকা এ জে অ্যাপলগেটের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন তিনি।
ড্যানির সঙ্গে সমাজমাধ্যমে ছবিও পোস্ট করেছিলেন অ্যাপলগেট। লিখেছিলেন, ‘‘ড্যানি অত্যন্ত সুপুরুষ।’’ তাঁদের প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে প্রায়ই চর্চা চলে নীল ছবির দুনিয়ায়।
ড্যানির রক্তে রয়েছে ফুটবল। তাই পর্ন ছবিতে দাপিয়ে কাজ করার পাশাপাশি ফুটবল খেলা ছাড়তে পারেননি তিনি। ব্রিটিশ অভিনেতা ভেনি জন্সের ‘হলিউড অলস্টার্স’ ক্লাবের হয়ে ফুটবল খেলেন তিনি।
অভিনেতা জেসন স্ট্যাথামের সঙ্গে ফুটবল খেলেন ড্যানি। প্রতিপক্ষ দলে থাকেন ফ্রাঙ্ক লেবেউফের মতো ফরাসি অভিনেতা। ড্যানিও বর্তমানে খ্যাতনামী। তাই তাঁর খ্যাতনামী বন্ধুদের তালিকাও বেশ লম্বা।