তরুণদের সামনে আনতে হবে। তাই ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেই বিজেপির প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন ১০৪ জন সাংসদ। তালিকায় ছিল প্রথম সারির অনেক নেতার নামও। এই বার ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগেও সেই পথেই হাঁটতে চলেছে বিজেপি।
সূত্রের খবর এ বারও বাদ পড়তে পারে অন্তত ১০০ জন সাংসদের নাম। কী ভাবছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব?
গত লোকসভা নির্বাচনে লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, সুমিত্রা মহাজনেরা বিজেপির প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের বিজেপি এ বারও অন্তত ১০০ জন সাংসদকে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা ভাবছে।
কেউ বাদ পড়বেন বয়সের জন্য। কেউ সাংসদ হিসেবে প্রত্যাশামাফিক কাজ করতে না পারার অভিযোগে।
শুক্র ও শনিবার বিজেপির জাতীয় পদাধিকারীদের বৈঠকের পরে বিজেপি সূত্রের খবর, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব লোকসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থীদের গড় বয়স ৫৫ বছরে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছেন।
ব্যতিক্রম অবশ্যই কেউ কেউ থাকবেন। না হলে ৭৫ বছরের বেশি বয়স্ক আর কাউকেই প্রার্থী করা হবে না।
হেমা মালিনী শারীরিক ভাবে অনেকের তুলনায় ‘ফিট’ হলেও ৭৫ বছর ছুঁয়ে ফেলেছেন। মথুরা থেকে আর তাঁকে প্রার্থী করা না-ও হতে পারে। একই ভাবে আগামী বছর যাঁরা ৭৫ বছরে পা দেবেন, তাঁরাও বাদ পড়বেন।
যেমন প্রয়াগরাজের সাংসদ রীতা বহুগুণা জোশী। বিজেপি সূত্রের খবর, অন্য বিভিন্ন কারণে গান্ধী পরিবারের দুই সদস্য মেনকা ও তাঁর পুত্র বরুণ বাদ পড়তে পারেন।
বাদ পড়ার তালিকায় থাকতে পারেন দিল্লির গৌতম গম্ভীর সহ আরও দুই সাংসদ, প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ও গায়ক-রাজনীতিক হংস রাজ হংসও বাদ পড়তে পারেন।
সবেমাত্র তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদের দৌড় থেকে শিবরাজ সিংহ চৌহান, বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া ও রমন সিংহের মতো তিন প্রবীণ নেতানেত্রী ছিটকে গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর গদি চলে গিয়েছে অপেক্ষাকৃত নবীন নেতাদের কাছে।
এখনও ৭৫ বছর না হলেও এ বার লোকসভা নির্বাচনে রাজনাথ সিংহ, নিতিন গড়কড়ীর মতো প্রবীণদের মধ্যে কারা কারা বাদ পড়বেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে শুক্রবার বিজেপির জাতীয় পদাধিকারীদের বৈঠকে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদী যোগ দিয়েছিলেন। তিনি তরুণ ভোটারদের উপরে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
শনিবার অমিত শাহ জোর দিয়েছেন প্রার্থী তালিকা দ্রুত চূড়ান্ত করে ফেলার উপরে। এনডিএ-তে শরিক দলের সংখ্যা কমেছে। ফলে বিজেপিকে এ বার আরও অনেক বেশি আসনে লড়তে হবে।
বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের সময়েও বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ১০৪ জন সাংসদ বাদ পড়েছিলেন। এ বারও শ’খানেক সাংসদের নাম বয়স ও কাজের নিরিখে বাদ পড়ার লাল খাতায় থাকছে।
যে সব সাংসদেরা বহু বছর ধরে জিতে আসছেন, সেখানেও মুখ বদল করা হবে। ভোটকুশলীদের নিয়ে তৈরি পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে সমীক্ষার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নরেন্দ্র মোদীর নমো অ্যাপ-এর মাধ্যমেও সাংসদদের সম্পর্কে সমীক্ষা করানো হচ্ছে।
সম্প্রতি ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ২১ জন সাংসদকে প্রার্থী করেছিল। তাঁদের মধ্যে অনেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও ছিলেন।
এই ২১ জনের মধ্যে ১২ জন জিতে বিধায়ক হয়েছেন। নয় জন হেরে গিয়েছেন। এঁদের কাউকেই আর লোকসভা ভোটে প্রার্থী করা হবে না। ওই সব আসনে নতুন প্রার্থী খোঁজা হবে। উত্তরপ্রদেশের অন্তত ১৫ জন সাংসদ এ বার আর টিকিট না-ও পেতে পারেন।