সম্প্রতি প্রশান্ত মহাসাগরের তলায় হলুদ রঙা ইট দিয়ে বাঁধানো একটি রাস্তার সন্ধান পেয়েছেন সমুদ্র গবেষণার সঙ্গে যুক্ত এক দল বিজ্ঞানী।
একটি ইউটিউব ভিডিও অনুযায়ী, ‘এক্সপ্লোরেশন ভেসেল নটিলাস’ দলের সদস্যরা প্রশান্ত মহাসাগরে আমেরিকার পাপাহানাউমোকুয়াকে মেরিন ন্যাশনাল মনুমেন্টের লিলিউওকালানি রিজ নামক সামুদ্রিক অঞ্চলে গবেষণা চালানোর সময় সমুদ্রের নীচে এই রাস্তার খোঁজ পান।
এই রাস্তার কাঠামো ভেঙেচুড়ে গেলেও খাঁজ কাটা কাটা নকশা দেখে বিজ্ঞানীদের ধারণা কোনও এক সময় সেটি একটি ব্যবহারযোগ্য রাস্তা ছিল।
ইউটিউবের এই ভিডিয়োতে এক জন গবেষককে বলতে শোনা গিয়েছে, ইটের এই রাস্তা দিয়ে হাঁটা দিলে পৌঁছে যাওয়া যাবে আটলান্টিসে। অন্য এক গবেষকের দাবি, এই রাস্তার উপস্থিতি যথেষ্ট অদ্ভুতুড়ে।
গ্রিসের পৌরাণিক উপকথা অনুযায়ী আটলান্টিস সমুদ্রের তলায় হারিয়ে যাওয়া একটি দ্বীপ।
সবার প্রথম এই সভ্যতার উল্লেখ পাওয়া যায় প্লেটোর ‘ডায়লগ টাইমাউস অ্যান্ড ক্রিটিয়াস’ বইয়ে।
প্লেটোর লেখা অনুযায়ী প্রায় ৯০০০ বছর আগে আটলান্টিস সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল। হারকিউলিসের পিলারের পাদদেশের এই দ্বীপ নৌবাহিনী দিয়ে ইউরোপের অধিকাংশ স্থান জয় করে বলেও এই বইয়ে উল্লেখ রয়েছে।
কিন্তু আথেন্স জয় করতে গিয়ে নাকি হোঁচট খায় আটলান্টিস। পরে এক প্রলয়ের মুখোমুখি হয়ে চিরতরে সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যায় এই সভ্যতা।
তবে এই সভ্যতার অস্তিত্ব সম্পর্কে প্লেটোর সমসাময়িক অনেকেই সন্দীহান ছিলেন। অনেকে আবার আটলান্টিসকে কল্পনাপ্রসূত বলেও উড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকে আবার আটলান্টিসের সত্যতা নিয়ে বিদ্রুপ করতেও ছাড়েননি।
তবে অনেকেই আটলান্টিসের উপস্থিতিকে সত্যি বলে মেনে নিয়ে সমুদ্রের তলায় লুকিয়ে থাকা ধনরত্নের খোঁজে অভিযান চালিয়েছেন। কিন্তু এই সমুদ্রের তলায় লুকিয়ে থাকা এই দ্বীপের খোঁজ পেতে সকলেই ব্যর্থ হয়েছেন।
গবেষকদের এই দল সমুদ্রের নীচে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে তৈরি পাহাড়ের একটি বিভাজিকার বিষয়ে অনুসন্ধান করতে ওই জায়গায় গিয়েছিলেন। আর তাই তাঁরা ভিডিয়ো রেকর্ড করার সমস্ত সরঞ্জাম নিয়েই সমু্দ্রের নীচে নেমেছিলেন।
নীচে নেমে অনুসন্ধান চালানোর সময় হঠাৎই ইটের এই রাস্তায় হোঁচটে খান এক গবেষক।
তাঁরা প্রথমে মনে করেন, রাস্তা-সদৃশ এই কাঠামো আসলে প্রাচীনকালে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে তৈরি।
সমুদ্রের নীচে নুটকা পাহাড়ের শিখরে সন্ধান পাওয়া এই রাস্তা ভাঙা হায়ালোক্লাস্টাইট পাথর থেকে তৈরি হয়েছে বলেও গবেষকদের একাংশের মত। হায়ালোক্লাস্টাইট পাথর অগ্ন্যুৎপাতের ফলে তৈরি হয়।
তবে গবেষকরা অনেকে এ-ও দাবি করেছেন যে, অগ্ন্যুৎপাতের কারণে বার বার গরম এবং ঠান্ডা হওয়ার কারণে পাথরের গায়ে ফাটল তৈরি করেছে। আর তার ফলেই এই অভিনব নকশা তৈরি হয়েছে।