সঙ্গমের সময় যুগলের সঙ্গী হয়েছিলেন তৃতীয় ব্যক্তি। তিন জন মিলে উদ্দাম যৌনতায় মেতে উঠেছিলেন। কিন্তু তার পরিণতি ভাল হল না। সঙ্গম থামল রক্তারক্তি, খুনোখুনিতে।
তুরস্কে কাদির ডেমির হত্যাকাণ্ড নিয়ে চর্চা যেন থামতেই চাইছে না। হত্যাকারী যুগলের জন্য সম্প্রতি সাজা ঘোষণা করেছে আদালত। অভিযোগ, সঙ্গমরত কাদিরের পুরুষাঙ্গ কেটে নেন বন্ধু এলভান কুসুকালটুন।
২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের ঘটনা। তুরস্কের আন্টালিয়া প্রদেশের একটি পার্ক থেকে উদ্ধার হয় কাদিরের মৃতদেহ। বলা ভাল, মৃতদেহটি লোপাট করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন যুগল। বাগানের মালি তাঁদের দেখে ফেলেন।
আদালতে এই মামলার শুনানি চলাকালীন জানা যায়, এলভান এবং তাঁর তিন বছরের জার্মান প্রেমিকা নাদজা অ্যাঞ্জেলা গ্রসার তুরস্কের বাড়িতে থাকছিলেন। কাদিরের সঙ্গে তাঁদের দু’জনেরই বন্ধুত্ব ছিল।
২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি, কাদিরকে যুগল নিজেদের বাড়িতে আমন্ত্রণ করেন। তিন জন মিলে যথেচ্ছ মদ্যপান করেন। তার পর তিন জন একসঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হন। অভিযোগ, এই সঙ্গমের সময় কাদিরের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন মত্ত এলভান।
তদন্তে উঠে এসেছে, এলভান সঙ্গমরত অবস্থায় তাঁর প্রেমিকার প্রতি আগ্রাসী হয়ে উঠেছিলেন। যা মেনে নিতে পারেননি কাদির। তিনি প্রতিবাদ করায় রাগের মাথায় বন্ধুর দিকে ছুরি হাতে তেড়ে যান এলভান।
দুই বন্ধুর মধ্যে কিছু ক্ষণ ছুরির লড়াই চলেছিল। এক সময় কাদিরের বুকে ছুরি গেঁথে দেন এলভান। নাদজার চোখের সামনেই খুন হয়ে যান কাদির। এর পরেও ক্রোধ প্রশমিত হয়নি এলভানের। অভিযোগ, তিনি বন্ধুর পুরুষাঙ্গ কেটে নেন ওই ছুরি দিয়েই।
এখানেই শেষ নয়, অভিযোগ, কাদিরকে অন্তত ৫৪ বার ধারালো ছুরির কোপ মারা হয়েছে। খুনে নাদজারও হাত ছিল বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তদন্তকারীরা। তার পর যুগল একসঙ্গে মিলে কাদিরের দেহ লোপাটের চেষ্টা করেন।
বাড়ি থেকে কিছুটা দূরের এক পার্কে মাটি খুঁড়ে কাদিরের দেহ পুঁতে দেওয়ার তোড়জোড় করেন এলভান এবং নাদজা। কিন্তু সেখানে বাগানের মালি তাঁদের কীর্তি দেখে ফেলেন। ধরা পড়ে যান খুনি যুগল।
তদন্তকারীরা যুগলের মোবাইল ফোন ঘেঁটে কিছু ভিডিয়ো পান। যা থেকে বোঝা যায়, ২৮ জানুয়ারি প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক বার তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হয়েছিলেন ওই যুগল। তিন জনের সঙ্গমই তাঁরা উপভোগ করতেন।
যুগলের কাছ থেকে ২০২১ সালের একটি ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে, যেখানে তাঁরা তৃতীয় কারও সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছেন। তবে তা রেকর্ড করে রাখা হয়েছিল কেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নাদজা অবশ্য এই খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন বার বার। কিন্তু আদালতে আইনজীবীর দাবি, ঘটনাস্থলের দু’টি ছুরি, তাতে হাতের ছাপ, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ফরেন্সিক রিপোর্ট যাচাই করে জানা গিয়েছে, দু’জন মিলেই এই খুন করেছেন।
কাদিরের আইনজীবী এ-ও দাবি করেছেন, পরিকল্পনামাফিকই তাঁর মক্কেলকে খুন করা হয়েছে। খুনের পর তা উদ্যাপনের জন্য এলভান এবং তাঁর প্রেমিকা ওয়াইনও খেয়েছেন।
দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার শেষে তুরস্কের আদালত রায় ঘোষণা করেছে। খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মূল অভিযুক্ত এলভানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
রেহাই পাননি নাদজাও। তাঁর বিরুদ্ধে এই খুনে মদত দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাঁকে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।