বদলে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা। তৃণমূল তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে এই প্রথম এই মাপের রদবদল দেখা গেল মন্ত্রিসভায়।
প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সাধন পাণ্ডের দফতর অন্য মন্ত্রীদের দেওয়া হলেও, তাঁদের জায়গায় এ বার এল নতুন মুখ।
মমতার মন্ত্রিসভায় এখন পূর্ণমন্ত্রী ২৪ জন। ১৯ জন প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে ১০ জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত।
নতুন সাত মন্ত্রীকে বুধবার শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল লা গণেশন। সেই সঙ্গে স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসাবে শপথ নেন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে আগেই সরিয়েছিলেন মমতা। এ বার সেচ দফতরের পূর্ণমন্ত্রী থাকা সৌমেন মহাপাত্রকেও সরালেন। তাঁকে আগেই সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে মন্ত্রিসভা থেকে রত্না দে নাগ বাদ যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছিল। নতুন মন্ত্রিসভার তালিকায় দেখা গেল, তাঁর নাম নেই। এ ছাড়াও বাদ গিয়েছেন হুমায়ুন কবীর, পরেশ অধিকারী।
পার্থের হাতে শিল্প ছাড়াও আরও দু’টি দফতর ছিল। তথ্যপ্রযুক্তি ইলেকট্রনিক্স এবং পরিষদীয় দফতর। ওই তিনটি দফতর পেলেন শশী পাঁজা, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং মন্ত্রিসভায় নবাগত বাবুল সুপ্রিয়। শশী পেলেন শিল্প ও বাণিজ্য। পরিষদীয় দফতর পেলেন অভিজ্ঞ মন্ত্রী শোভনদেব। তথ্য প্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক্স দফতর পেলেন বাবুল।
ফিরহাদ হাকিমের দায়িত্ব কমল। বাদ গেল আবাসন ও পরিবহণ দফতর। রইল শুধু পুর ও নগরোন্নয়ন। আবাসন পেলেন অরূপ বিশ্বাস। পরিবহণ দফতরের দায়িত্ব পেলেন নতুন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
দায়িত্ব বাড়ল অরূপ বিশ্বাসের। এত দিন তাঁর হাতে বিদ্যুৎ ছাড়াও ছিল ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতর। সে দু’টি তো রইলই, সঙ্গে ফিরহাদের হাতে থাকা আবাসন পেলেন অরূপ।
বাবুল সুপ্রিয় কী দায়িত্ব পান তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের কৌতূহল ছিল। দু’টি দফতর পেলেন তিনি। পার্থের হাতে থাকা তথ্য প্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক্স ও পর্যটন দফতর গেল বাবুলের হাতে।
আদালতের নির্দেশে মেয়ের চাকরি যাওয়ার পরে চাপেই ছিলেন পরেশ অধিকারী। মন্ত্রিসভা থেকে বাদও গেলেন। তাঁর জায়গায় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হলেন সত্যজিৎ বর্মণ।
প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পঞ্চায়েত দফতর এত দিন দেখছিলেন পুলক রায়। এ বার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী হলেন নতুন মুখ প্রদীপ মজুমদার।
সৌমেন মহাপাত্রকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোয় এ বার সেচ ও জলপথ পরিবহণ মন্ত্রী হলেন মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ পার্থ ভৌমিক।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী হলেন দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। আগে এই দফতর ছিল গোলাম রব্বানির হাতে।
মলয় ঘটকের দায়িত্ব কমল। তিনি আইনমন্ত্রী থাকলেও চলে গিয়েছে পূর্ত দফতর। সেটি পেয়েছেন পুলক রায়। মলয়ের হাতে শ্রম দফতর এসেছে বেচারাম মান্নার কাছ থেকে।
উজ্জ্বল বিশ্বাস কারা দফতর থেকে গেলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরে। কারা দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী হলেন অখিল গিরি। বেচারাম মান্না পেলেন কৃষি বিপণন দফতর। সঙ্গে রইলেন পঞ্চায়েত দফতরের প্রতিমন্ত্রী।
সাধন পাণ্ডের হাতে থাকা ক্রেতা সুরক্ষা দফতর এত দিন মানস ভুঁইয়া সামলাচ্ছিলেন। এখন ওই দফতর পেলেন বিপ্লব মিত্র। তাঁর হাতে ছিল কৃষি বিপণন দফতর।
ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী থেকে বিরবাহা হাঁসদার পদোন্নতি হল। তিনি হলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং বন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী।