পাহাড়প্রেমীদের কাছে পর্যটনস্থলের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে শিমলা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি শৈলশহর মোড়া রয়েছে নানা রকম অলৌকিক কাহিনি দিয়েও। স্থানীয়দের দাবি, এখানকার একটি হাসপাতালে নাকি ‘আত্মা’দের উপস্থিতি অনুভব করা যায়। এমনকি হাসপাতাল লাগোয়া রাস্তাতেও ঘুরে বেড়ায় নববধূর ‘প্রেতাত্মা’।
হিমাচল প্রদেশের শিমলার হাসপাতালগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ইন্দিরা গান্ধী মেডিক্যাল কলেজ। এই হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে প্রশংসা সকলের মুখেই ঘোরাফেরা করে। তবে স্থানীয়দের কাছে এই হাসপাতালটি ‘ভূতুড়ে’ হাসপাতাল নামেও পরিচিত।
হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে কর্মীদের অধিকাংশের দাবি, হাসপাতালের ভিতর মাঝেমাঝে তাঁরা এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন, যার ব্যাখ্যা করা সহজ নয়।
হাসপাতাল কর্মীদের অধিকাংশের দাবি, যে রোগীরা চিকিৎসার পরেও প্রাণে মারা যান, তাঁদের ‘আত্মা’ ঘোরাফেরা করে হাসপাতাল চত্বরে। হাসপাতালের বারান্দা, লিফ্ট এমনকি সিঁড়ি দিয়ে যাতায়াতের সময় এক অদ্ভুত অনুভূতি হয় কর্মীদের।
সন্ধ্যা গড়াতেই যখন আরও অন্ধকার নেমে আসে, তখন হাসপাতালের বারান্দা, সিঁড়ি অথবা লিফ্ট দিয়ে কর্মীরা যাতায়াত করলে তাঁদের শরীর হঠাৎ ভারী হয়ে আসে। সেখানকার তাপমাত্রাও নাকি হঠাৎ কমে যায়।
কর্মীদের দাবি, হাসপাতাল চত্বরে সন্ধ্যার পর ঘুরলে মনে হয়, কেউ আড়াল থেকে তাঁদের উপর নজর রাখছে। কখনও কখনও ছায়ামূর্তি হেঁটেচলে বেড়াতে দেখেছেন অনেকে। ভাল করে লক্ষ করার জন্য ছায়ামূর্তির কাছাকাছি গেলেই তা নিমেষে উধাও হয়ে যায় বলে দাবি করেন কর্মীরা।
শুধু হাসপাতাল চত্বরেই নয়, ‘প্রেতাত্মা’দের দেখা মেলে হাসপাতালের সামনের রাস্তাতেও। হাসপাতাল থাকার কারণের পাশাপাশি স্থানীয় এবং পর্যটকদের কারণে সেই রাস্তাটি সব সময় ব্যস্ত থাকে। কিন্তু অন্ধকার নেমে আসলে সে রাস্তা হয়ে ওঠে ‘ভূতুড়ে’।
হাসপাতালের সামনে যে রাস্তা রয়েছে, স্থানীয়দের দাবি, সেখানে পথ দুর্ঘটনার মুখে পড়ে একটি গাড়ি। দুর্ঘটনায় সময় সেই গাড়ির ভিতর ছিলেন এক তরুণী। সদ্য বিয়ে হয়েছিল তাঁর। কিন্তু গাড়ির দুর্ঘটনা তাঁর প্রাণ কেড়ে নেয়।
স্থানীয়দের দাবি, মধ্যরাতে হাসপাতালের সামনের রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে ভয় পান তাঁরা। নববধূর ‘প্রেতাত্মা’ ঘুরে বেড়ায় সেখানে। মাঝরাতে ফাঁকা রাস্তায় এক মহিলার চিৎকারও শুনতে পান পথচারীরা।
নববধূর ‘আত্মা’ই নয়, স্থানীয়দের দাবি, হাসপাতালের সামনের রাস্তায় মধ্যরাতে এক ছায়ামূর্তিকে বসে থাকতে দেখেছেন তাঁরা। রাস্তা দিয়ে কোনও গাড়ি দেখলে নাকি সেই গাড়ি থামানোর চেষ্টা করে সেই ছায়ামূর্তি।
হাসপাতালের সামনের রাস্তায় বহু বছর আগে গাছের সঙ্গে একটি বাসের ধাক্কা লাগে। দুর্ঘটনায় মারা যান ওই বাসের চালক। স্থানীয়দের দাবি, ওই চালকের ‘আত্মা’ই এখনও ঘুরে বেড়ায় রাস্তায়।
কোনও গাড়ির চালক ছায়ামূর্তিকে দেখার পর তাঁর গাড়ি থামালেই নাকি রাস্তা থেকে নিমেষের মধ্যে উধাও হয়ে যায় সেই অবয়ব। স্থানীয়দের একাংশ মনে করেন, অন্য কোনও গাড়ি যেন দুর্ঘটনার কবলে না পড়ে, সে কারণেই নাকি গাড়িগুলিকে থামানোর চেষ্টা করে ওই ‘প্রেতাত্মা’।
শিমলার অধিকাংশ স্থানীয় এবং হাসপাতালের কর্মীর ধারণা, হাসপাতাল চত্বরের পাশাপাশি হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তা ‘ভূতুড়ে’। তবে স্থানীয়দের এই ধারণাগুলি মনগড়া বলে উড়িয়ে দেন বিজ্ঞানমনস্কেরা।