পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের দৌড় মোটামুটি জানেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কে কেমন ব্যাট করেন, কার বলে কেমন গতি, তা প্রায় সকলেরই জানা। তবে যা অনেকেরই জানা নেই তা হল, এই ক্রিকেটারদের পড়াশোনার দৌড় কতটা। পাকিস্তান ক্রিকেট দলে এমন খেলোয়াড়ও রয়েছেন যিনি স্কুলের গণ্ডি পেরোননি।
প্রথমেই আসা যাক পাক ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বাবর আজ়মের কথায়। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাবর স্কুলে ভর্তি হলেও দশম শ্রেণির গণ্ডি টপকাননি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেই পাক অধিনায়ক স্কুল ছেড়েছিলেন বলে জানা যায়।
২৩ বছর বয়সি পাক বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদি এ ক্ষেত্রে বাবরের থেকে একটু এগিয়ে। পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদির জামাই ক্রিকেট খেলার সুবাদে খুব কম বয়স থেকেই পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি স্কুলের গণ্ডি টপকালেও কলেজে ভর্তি হননি বলেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
চলতি বছরেই প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার সাকলিন মুস্তাকের মেয়ে মালাইকা সাকলিনকে বিয়ে করে চর্চায় রয়েছেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শাদাব খান। তিনি পাক ক্রিকেট দলের সহ-অধিনায়কও বটে। পাক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শাদাবের স্নাতক ডিগ্রি রয়েছে।
পাক ব্যাটার ফখর জ়ামান ১৬ বছর বয়সে করাচির ‘পাকিস্তান নেভি স্কুলে’ ভর্তি হন। পড়াশোনার পাশাপাশি সেখানে ক্রিকেটের তালিমও নিতেন তিনি। পাক নৌবাহিনীর হয়ে ক্রিকেট ম্যাচও খেলেছেন। ২০২০ সালে ফখরকে সে দেশের নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদে বসানো হয়।
পাক দলের ব্যাটার তথা প্রাক্তন অধিনায়ক ইনজ়মাম-উল-হকের ভাগ্নে ইমাম-উল-হক লাহোরের এক কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাণিজ্যে স্নাতক ডিগ্রি রয়েছে ইমামের।
সতীর্থদের কাছে ‘চাচা’ নামেই বেশি পরিচিত ৩৩ বছর বয়সি অলরাউন্ডার ইফতিকার আহমেদ। পাকাপাকি ভাবে ক্রিকেটের দুনিয়ায় পা দেওয়ার আগেই কলেজের পড়াশোনা শেষ করেছেন তিনি।
পাক উইকেট কিপার মহম্মদ রিজ়ওয়ান কিন্তু উচ্চশিক্ষিত। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁর কাছে হার্ভার্ড বিজ়নেস স্কুলের ডিগ্রি রয়েছে। তবে তিনি সেখানে পড়াশোনার আগে কোন স্কুল বা কলেজ থকে পড়াশোনা করেছেন, সে বিষয়ে বিশেষ জানা যায় না।
পড়াশোনা করতে করতেই কলেজ ছেড়েছিলেন মহম্মদ নওয়াজ়। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাক অলরাউন্ডার নওয়াজ ক্রিকেটে পুরোপুরি মনোযোগ করতে পারছিলেন না বলেই নাকি কলেজ ছেড়ে দিয়েছিলেন।
পাকিস্তানের জোরে বোলার হ্যারিস রউফ ইসলামাবাদ মডেল কলেজের স্নাতক। ছোটবেলায় হ্যারিস এক জন ফুটবলার হতে চেয়েছিলেন। তবে পরে তাঁর ইচ্ছা বদলে যায়। ক্রিকেট খেলায় মনোনিবেশ করেন তিনি। তবে ক্রিকেট খেলতে খেলতেও তিনি নাকি পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছিলেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাক ব্যাটার সলমন আলি আগা তাঁর স্কুলশিক্ষা সম্পূর্ণ করেননি। ক্রিকেটের নেশায় বুঁদ হয়েই নাকি তিনি স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন।
তরুণ পাক ব্যাটার আবদুল্লা শফিক দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তার পর ক্রিকেট খেলায় মন দিতে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ফেলেন তিনি। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে অবশ্য বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন শফিক।
পাক অলরাউন্ডার মহম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রও কলেজের মুখ দেখেননি। আবদুল্লার মতোই দ্বাদশ শ্রেণি অবধি পড়াশোনা করে লেখাপড়ায় ইতি টানেন ২২ বছর বয়সি এই খেলোয়াড়।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বকাপ খেলতে আসা পাকিস্তানি ক্রিকেট দলের বোলার উসামা মির স্নাতক।
ব্যাটার সাউদ শাকিল অবশ্য কলেজে পড়াশোনা করেছেন। স্নাতক হওয়ার পর অবশ্য তিনি আর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার কথা ভাবেননি। মন দিয়েছিলেন ক্রিকেটেই। তবে ক্রিকেটার হাসান আলির পড়াশোনা নিয়ে তেমন কোনও তথ্য পাওয়া যায় না।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হেরে বিশ্বকাপ থেকেই বিদায় নেওয়ার মুখে পাকিস্তান। ইতিমধ্যেই পাক ক্রিকেট দলের প্রাক্তনীরা বাবরদের খেলা নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছেন।
বাবরের নেতৃত্ব নিয়েও উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। শোয়েব আখতার, ওয়াসিম আক্রমদের মতো তাবড় প্রাক্তন খেলোয়াড়েরা প্রশ্ন তুলেছেন পাক ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে। বিশ্বকাপে এটাই পাকিস্তানের সব চেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স কি না, সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।