প্রতীকী ছবি।
হিন্দিতে বেশ জনপ্রিয় একটি প্রবা়দ রয়েছে — ঝুঁকি না নিলে বড় কিছু পাওয়া যায় না। বিনিয়োগের জগতে শেয়ার মার্কেট, স্টক এক্সচেঞ্জ, আইপিও ক্রয় ঠিক তেমনই। ভাগ্য সহায় থাকলে কেল্লা ফতে! না হলে সব হাওয়া। অবশ্য সবটাই গণিত এবং অর্থশাস্ত্র। গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে আইপিও-তে বিনিয়োগ করে বেশ মোটা লাভের অঙ্ক ঘরে তুলেছেন অনেকেই। যেমন জোমাটো। আবার শেষ বেলায় এসে অনেকে মারও খেয়েছেন। যেমন পেটিএম।
নতুন বছরের শুরুতেও বিনিয়োগের জগতে সাড়া ফেলতে আসছে একাধিক বড় সংস্থার আইপিও। তবে আপাতত সবার নজর একটি সংস্থার দিকে। সেটি হল দেশের সর্ববৃহৎ বিমা সংস্থা লাইফ ইনসিওরেন্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া। সংক্ষেপে এলআইসি। অনেকেই মনে করছেন এত বড় অঙ্কের আইপিও এর আগে বাজারে খুব কমই এসেছে। আপাতত খবর অনুযায়ী, এলআইসি আইপিও-র প্রস্তাবিত বাজার মূল্য হতে পারে প্রায় ১০ লক্ষ কোটি। যা বহু বিনিয়োগকারীর ভাগ্যের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
ইতিমধ্যেই এলআইসি-র আইপিও-র ড্রাফ্ট বা খসড়া প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিয়েছেন সংস্থার আধিকারিকরা। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে সেবির কাছে অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া হবে সেই ড্রাফ্ট। অনুমোদন পেলেই বাজারে পা রাখবে সংস্থার আইপিও।
কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, এই আইপিওর আওতায় জারি করা শেয়ারের প্রায় ১০ শতাংশ সংস্থার পলিসি হোল্ডারদের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা থাকবে। তাঁরা কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়ও পাবেন। প্রসঙ্গত, তাঁরা অন্য বিনিয়োগকারীদের তুলনায় অনেকটা সস্তাতে শেয়ার কিনতে পারবেন। এলআইসি-র বিমা গ্রাহকরা যাতে শেয়ার ক্রয়ে আগ্রহ দেখান, সেই কারণেই এমন উদ্যোগ।
গত বছর অর্থাৎ, ২০২১-এর ডিসেম্বরে সংস্থার ওয়েবসাইটে আইপিও সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে এলআইসি। যেখানে বলা হয়েছে, আলাদা করে পলিসি হোল্ডারদের জন্য আইপিও রাখা হবে। কোম্পানির পলিসি হোল্ডাররা চাইলে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলে সরাসরি এই শেয়ার কিনতে পারেন।
তবে সেই ক্ষেত্রে দু’টি শর্ত রয়েছে। প্রথমত, ওই ব্যক্তির আধার নম্বরের সঙ্গে এলআইসি-র লিঙ্ক থাকতে হবে। দ্বিতীয়টি হল, সরকারি নথিতে অবশ্যই প্যান কার্ডের বিষয়ে আপডেট থাকতে হবে।
কিন্তু এর শেয়ারের মূল্য কত হবে? মনে করা হচ্ছে, সরকার এই শেয়ারের মূল্য সাধারণ মধ্যবিত্তদের নাগালের মধ্যেই রাখতে চলেছে। শেয়ারের বাজারমূল্য হতে পারে প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকা।
শেয়ারের দাম কম কারণ, এলআইসি-র যে তহবিলগুলি রয়েছে সেগুলি কিন্তু ততটাও লাভজনক নয়। তার মধ্যে রয়েছে গ্যারান্টি রিটার্ন প্ল্যান, গ্রুপ ইনসিওরেন্স প্ল্যান, কর্মচারীদের রিটায়ারমেন্ট ফান্ড ইত্যাদি। গ্লোবাল ইনভেস্টারদের কোম্পানির মতে এই প্রোডাক্টের উপর জোর দিতে ঘুঁটি সাজাতে চাইছে সংস্থা।
তবে যাই হোক না কেন এলআইসি-র আইপিও যে এখনও দেশের সবথেকে বড় ঘোষণা হতে চলেছে, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরাও। আসলে এই আইপিও-র মাধ্যমে পরবর্তী অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০২২-২০২৩ সালের বিনিয়োগের লক্ষ্যপূরণ করতে চাইছে সরকার।