প্রতীকী ছবি।
বাড়ি থেকে কাজ করছেন। বছর খানেক প্রায় অফিসে যাওয়াই হয়নি। কাজেও অসুবিধা আর আগের মতো হচ্ছে না। দিব্যি অভ্যাস হয়ে গিয়েছে এই নতুন ব্যবস্থায় চলাফেরা। কিন্তু মাঝেমাঝে পিঠ-কোমরে ব্যথা হচ্ছে কি? ভাবছেন চেয়ার বদলে ফেললেই ঠিক হয়ে যাবে। নতুন চেয়ারও খুঁজতে শুরু করেছেন অনলাইন বিপণিতে। সত্যিই এত সহজ কি বিষয়টি?
এই সমস্যা আসলে আরও গুরুতর বলেই মনে করেন চিকিৎসকরা। কারণ বাড়ি থেকে টানা কাজ শিরদাঁড়ায় অপূরণীয় ক্ষতি করছে বলেই বক্তব্য চিকিৎসকদের একাংশ। পিঠ ব্যথা দিয়ে শুরু হওয়া এই সমস্যা কত গুরুতর, তা সকলে প্রথমের দিকে টের পাচ্ছেন না। কিন্তু শিরদাঁড়ায় অস্ত্রোপচার করতে হওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে এ দেশে।
বাড়ি থেকে কাজ করার এই রীতি সার্বিক ভাবে কর্ম সংস্কৃতিতে বদল এনেছে। আগে সকলে কাজের জন্য বেরোতেন। কিছুটা যাতায়াত করতে হত। কাজ শেষ করে আবার নির্দিষ্ট সময়ে ফিরতেন। এখন সে সবের বালাই নেই। কাজ শুরু এবং শেষের কোনও সময় বাঁধা নেই। সর্বক্ষণ চলছে কাজ। আর তাতেই হচ্ছে শারীরিক ক্ষতি। স্নান, খাওয়া, ঘুমের কোনও নিয়ম থাকছে না। অতিরিক্ত এই চাপ দিনের পর দিন বহন করতে হচ্ছে শিরদাঁড়ারই।
প্রতীকী ছবি।
চলাফেরার অভাবেই মূলত সমস্যা হচ্ছে বলে বক্তব্য অর্থোপেডিক চিকিৎসক স্বাতী ভট্টের। টানা বসে বসে কাজ করার ফলে শিরদাঁড়ায় প্রবল চাপ পড়ে। তার জেরে শিরদাঁড়ার ডিস্কের ক্ষতি হচ্ছে। এই ডিস্কই চলাফেরার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করাচ্ছেন চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘‘অধিকাংশ মানুষ বুঝতেই পারছেন না আসলে শরীরের কত বড় ক্ষতি তাঁরা করে ফেলছেন এই বাড়ি বসে কাজার করার ফলে।’’
এমন কাজের চাপ চলতে থাকলে অনেকে ঠিক মতো জল খাওয়ার কথাও ভুলে যান। তাতে আরও ক্ষতি হয় বলে মত চিকিৎসকদের। হাড়ের জোর এর জেরে কমে যাচ্ছে। সবেরই প্রভাব পড়ছে শরীরের উপরে। চিকিৎসকদের বক্তব্য, ২০-৪০ বছর বয়সিদের মধ্যে পিঠ-কোমরে ব্যথার সমস্যা অনেক বেড়েছে। এই রোগীদের একটি বড় অংশ বাড়ি থেকে কাজ করছেন।
কিন্তু এই প্রবণতা দেখে হতাশ হওয়ার সুযোগ নেই। বরং এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। রোজের জীবনে পরিবর্তন আনতে হবে। কী কী করা জরুরি?
১) ব্যায়াম করতে হবে নিয়মিত। যাতে শরীর সচল থাকে
২) বাড়ি থেকে কাজ মানেই ধকল কম হচ্ছে না। ফলে পুষ্টিকর খাওয়াদাওয়া জরুরি
৩) দিনে অন্তত তিন থেকে চার লিটার জল খেতে হবে
৪) কাজের সময়ে বেঁধে ফেলতে পারলে ভাল
৫) কাজের ফাঁকে মাঝেমাঝে উঠে হাঁটাহাঁটি করুন
এ সবের মাধ্যমে কিছুটা হলেও নিজের নতুন অভ্যাসের মাঝেই শরীরের যত্ন হতে পারে।