শিশুর ধৈর্য ও মনোযোগ বাড়ান, কী করবেন। ছবি: সংগৃহীত।
শিশুদের মন এমনিতেও খুব চঞ্চল। এক জায়গায় বেশি ক্ষণ স্থির হয়ে বসেই না। পড়তে বসালে টিভির দিকে মন পড়ে থাকে। বার বার উঠে চলে যায়। দেখবেন, কোনও একটি বিষয়ের প্রতি বেশি ক্ষণ আগ্রহ দেখাবে না। তা সে পড়াশোনা হোক, ধেলাধূলা, গানবাজনা বা ছবি আঁকা। ধরেবেঁধে বসিয়ে রাখাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। যদি বা বসল, কিছু ক্ষণ পর পরই বিভিন্ন অজুহাতে উঠে যাবে। বেশি বকাঝকা করলে চিৎকার, কান্নাকাটি শুরু হবে। তখন জেদ করে আর পড়তে বসতেই চাইবে না। প্রায় সব বাড়ির রোজের রুটিন এমনই। বাবা-মায়েদের অভিযোগ, খুদের নতুন কিছু শেখার আগ্রহ নেই। মনোযোগও কমে যাচ্ছে দিন দিন। তা হলে উপায়?
শিশুর মনোযোগ ও আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর কিছু উপায় আছে
১) সারাদিনের রুটিন করে দিন। কখন ঘুম থেকে উঠবে, কত ক্ষণ পড়বে, কত সময় ধরে খেলবে। ঠিক কত ক্ষণ টিভি দেখবে তারও সময় থাকা জরুরি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে পড়াবেন না। বিরতি দিন। রুটিন করলেও কড়া নিয়মের বেড়াজালে বাঁধবেন না। ওদের নিজেদের মতোও কিছুটা সময় দিন। তাতেই মনোযোগ বাড়বে।
২) লক্ষ্য স্থির করে দিন। খুদে কোন কাজে বেশি উৎসাহী তা খেয়াল করুন। পড়াশোনায় যদি দুর্বল হয়, তা হলে বোঝাতে হবে যে কাজ সে ভালবাসে তা করতে হলে পড়াশোনা করা কতটা জরুরি। আপনি নিজে পড়াশোনার হাল ধরুন। পড়াশোনার বাইরে সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিন। যে কাজে বেশি পারদর্শী সেই দিক নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ দিন।
৩) শিশুর বয়স কত, তার উপরে নির্ভর করবে তার মনোযোগ। ৪-৫ বছরের বাচ্চা ও ৮-১০ বছরের বাচ্চার মনোযোগ এক হবে না। মনোযোগ বাড়াতে হবে অভ্যাসের মাধ্যমে। রোজ অন্তত এক ঘণ্টা ছোটাছুটি করে খেলার জন্য বরাদ্দ করতে হবে। এতে ঘাম ঝরবে। শরীরে এনডরফিন বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হবে, এতে মনোযোগ বাড়বে।
৪) শিশুর হোমওয়ার্ক হয়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের ‘ব্রেন গেম’ খেলতে দিন। বিল্ডিং ব্লকস, পাজ়লস ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের খেলা আছে শিশুদের জন্য। স্মার্টফোনের বদলে এই ধরনের খেলা বা বই ওর হাতে তুলে দিলে মনোযোগ অনেকটাই বাড়বে। একঘেয়েমিও কাটবে।
৫)শিশুর পড়াশোনার পরিবেশ যেন শান্তিপূর্ণ হয় সে খেয়াল অভিভাবকদেরই রাখতে হবে। শিশুর পড়ার জন্য আলাদা জায়গা বা ঘর নির্দিষ্ট করে দিন। সেখানে যেন টিভি না চলে বা বৈদ্যুতিন গ্যাজেট না থাকে তা দেখতে হবে। শিশু যখন পড়বে আপনিও পাশে থাকুন। বসে বই বা খবরের কাগজ পড়ুন, তবে মোবাইল বা ট্যাব হাতে নয়, তা হলে আপনাকে দেখে শিশুও মোবাইল চাইবে।
৬) সময় ধরে কাজ করা শেখান। পড়াশোনা হোক বা ছবি আঁকা, কাজ শেষ করে তবেই উঠতে বলুন শিশুকে। এই অভ্যাস ছোট থেকে রপ্ত করালে, শিশু সময়ের গুরুত্ব বুঝবে, ভবিষ্যতে লক্ষ্যপূরণের পথও অনেক মসৃণ হবে।