বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনো সন্তানকে সামলাবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
ছোট থেকে সন্তানকে বড় করার প্রতিটি ধাপে, এক এক রকম পরিবেশ ও পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় অভিভাবকদের। তবে বয়ঃসন্ধির সময়টাতে সন্তানকে বোঝা, তার পাশে থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ১৩-১৭ বছর বয়সে ছেলে ও মেয়েদের শরীরে বদল আসে। মনোজগতেও পরিবর্তন হয়। এই বদল নিয়ে হাজারো কৌতূহল তৈরি হয় তাদের মধ্যে। এই সময় উপযুক্ত যৌনশিক্ষা যেমন প্রয়োজন, তেমনই দরকার অভিভাবকদের সংবেদনশীল ব্যবহার।
খোলামেলা কথা বলা
এই বয়সি ছেলে-মেয়েদের মনের তল পেতে তাদের সঙ্গে সহজ ভাবে মেশা দরকার। মা বা বাবাকে যে কোনও কথা বলতে সন্তান যাতে কুণ্ঠা বোধ না করে, সে দায়িত্ব বড়দেরই নিতে হবে। ছেলেমেয়ের কথায় ভাল-খারাপ মতামত ব্যক্ত করার চেয়ে বেশি জরুরি তার কথা শোনা। সে কিছু বললেই যদি নিজের মত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন অভিভাবক, এক সময়ে কিন্তু সন্তান অনেক কথা লুকোনোর চেষ্টা করবে।
স্বাধীনতাকে মর্যাদা দিতে হবে
সন্তান বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারও নিজস্ব পরিসর তৈরি হয়। সেই জায়গায় সে স্বাধীন ভাবে থাকতে চায়। সন্তানের ভালমন্দের উপর নজর রাখা এক রকম, কিন্তু তার ব্যক্তিগত পরিসরে ঢুকে যাওয়া যায় না, সেটাও বাবা ও মাকে বুঝতে হবে। সে ঘরে নিজের মতো কিছু করছে মানেই সব সময়ে শ্যেনদৃষ্টি দিতে হবে, তা কখনওই নয়। বরং সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকলে ছেলে-মেয়ে সমস্যার কথা বাবা-মাকে খুলে বলতে পারবে।
দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা
এই বয়সের ছেলে-মেয়েকে কাজের কিছু দায়িত্ব দিতে পারেন। সেই দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে পারেন। বাবা-মা হিসাবে সন্তানের কাছে কী আশা করেন, সেটা স্পষ্ট করে দিতে পারেন। সে-ও কী চাইছে, জেনে নিন। তবে অভিভাবকের আশাপূরণের অস্ত্র সন্তান কখনও হতে পারে না। সে কিন্তু পৃথক সত্তা।
রোল মডেল
ছোট থেকে বড় হওয়ার প্রতিটি ধাপে বড়দের দেখেই সন্তান শেখে। বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছে সে রোল মডেল খোঁজে। বাবা-মায়ের আচরণ কিন্তু এ ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই বয়সে যে হেতু তার বোধক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যায়, খারাপ-ভালর তফাত করতে পারে ছেলে-মেয়েরা।
শারীরিক শিক্ষা
বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনো ছেলে-মেয়েদের শরীরের দ্রুত বদল নিয়ে অনেক কৌতূহল থাকে। সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ও স্পষ্ট ধারণা দেওয়া বাবা-মায়ের কর্তব্য। এই সময়ে পৌঁছে মেয়েরা ঋতুমতী হয়। ছেলেদেরও এমন অনেক ধাপ আসে, যা সম্পর্কে আগাম ধারণা না থাকলে তারা ভয় পেয়ে যেতে পারে। মেয়েদেরও ঋতুস্রাব সম্পর্কে আগাম বুঝিয়ে দেওয়া উচিত। না হলে আচমকা এমন ঘটনায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়তে পারে।
সমস্যায় পাশে থাকা
বয়ঃসন্ধির কৌতূহলে কখনও কিছু ভুল করে ফেলতে পারে সন্তান। তবে সে সময়ে মাথা গরম না করে তার পাশে থাকার চেষ্টা করুন। ভুলটা শুধরে দিন। ভালবাসা, সমর্থন এই সময়ে সন্তানদের জন্য খুব জরুরি।